সূচনা ফাউন্ডেশনের ১৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
Published: 4th, March 2025 GMT
শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ১৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “দুদকের পক্ষে এসব হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন।”
আবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সায়মা ওয়াজেদ তার মায়ের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব ব্যাংক হিসাব জরুরি ভিত্তিতে অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ঢাকা/মামুন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিআইও-এলজিইডি টানাপোড়েনে নির্মাণ হচ্ছে না সেতু
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দুই দপ্তরের টানাপোড়েনে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। টেন্ডার আহ্বান করা হলেও এলজিইডির প্রকৌশলীর বাধায় সেতু নির্মাণ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার।
জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের ওপর ৯টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও)। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে দরগ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাকপাড়া সড়কের খালের ওপর একটি নতুন সেতু হবে। সেখানে ৪০ বছরের পুরোনো একটি সরু সেতু রয়েছে। সেই পরিত্যক্ত সেতু নিলাম করে অপসারণের জন্য মৌখিকভাবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্মকর্তাকে বলা হলেও তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। সেতুটি অপসারণ না করায় নতুন সেতু নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রকল্পের টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এলজিইডি কর্মকর্তা ইমরুল হোসেনের দাবি, সড়কটি তাদের। যার কোড নম্বর ৪০৬৪। এ সড়কের মধ্যে বা খালের ওপর সেতু নির্মাণ করবে এলজিইডি বিভাগ।
সেতুর পাশের একটি বাড়ির বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে বাকপাড়া খালের ওপর একটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়। সেটির এখন ভগ্নদশা। সেতুর চারদিকে রেলিংসহ পাটাতন ভেঙে গেছে। সেতুতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশ থেকে দুটি ভ্যান গাড়ি উঠে এলে পার হতে পারে না। সেতুটি সরু হওয়ায় এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি শুনেছেন এখানে নতুন সেতু হবে কিন্তু সেটার কাজ নাকি বন্ধ করে দিয়েছেন এলজিইডি কর্মকর্তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, ডিএস, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় সড়কের মালিক পিআইও। ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সড়কে রক্ষণাবেক্ষণ করেন তারা। এ ছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক রেজুলেশনে তারা যে কোনো সড়কের ওপর সেতু নির্মাণ
করতে পারেন। এতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু এলজিইডি কর্মকর্তা কেন সেতু নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন, তা তিনি জানেন না। মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি সুরাহার জন্য ইউএনওর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বলে জানান তিনি।
খলিলুর আরও বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ২০২৬ এর ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়। এ সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা না হলে বরাদ্দ ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা ফেরত যাবে। ফলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে এলাকাবাসী। বাকপাড়া খালের ওপর একটি সরু সেতু রয়েছে। তা নিলামের মাধ্যমে অপসারণ করতে বলা হলেও এলজিইডি বিভাগ কর্ণপাত করছে না। উল্টো ওই সড়ক তারা নিজেদের বলে দাবি করছে। ফলে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগেই রৌহা গ্রামের বাকপাড়া সড়কটিতে এলজিইডির কোড নম্বর পড়েছে। ফলে এই সড়কে যা উন্নয়ন করা হবে, তা এলজিইডি বিভাগ করবে। বাকপাড়া খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করবে এলজিইডি বিভাগ। সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কীভাবে দরপত্র আহ্বান করে। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের যে রেজুলেশন দেখিয়েছেন, তার মেয়াদ পাঁচ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। তিনি সেই রেজুলেশন দেখিয়ে কীভাবে সেতু নির্মাণের দাবি করেন।
সাটুরিয়ার দরগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আলীনূর বকস রতন বলেন, রৌহা গ্রামের বাকপাড়া খালের ওপর সরু সেতুটি মানুষের কোনো উপকারে আসে না। এই সেতু দিয়ে দুটি রিকশাভ্যান পাশাপাশি চলতে পারে না। এলজিইডির বাধার কারণে নতুন সেতুর নির্মাণকাজও করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফৌজদার এন্টারপ্রাইজ। সেতুটি নির্মাণ না হলে কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তির অবসান হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হোসেন বলেন, তিনি পিআইও ও এলজিইডি অফিসকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি চালাচালি করে সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন।