রাসুল (সা.)–এর সময়ের ঘটনা। একজন যুবক ছিলেন স্বাস্থ্যবান। হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অসুখে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ল। তাঁকে দেখলে মনে হতো, যেকোনো সময় মারা যাবেন।

খবর পেয়ে রাসুল (সা.) তাঁকে দেখতে এলেন। রাসুলও তাঁকে দেখে অবাক। জানতে চাইলেন, তোমার তো এমন হওয়ার কথা নয়। কী করে এ অবস্থা হলো? তুমি কি আল্লাহর কাছে বিশেষ কোনো দোয়া করেছ?

যুবক বলল, আপনি ঠিকই ধরেছেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি, হে আল্লাহ! আমার আখিরাতের প্রাপ্য সব শাস্তি দুনিয়াতে যেন পাই। আখিরাতে যেন কোনো কষ্ট না পাই।’

রাসুল (সা.

) বললেন, ‘তুমি এ কেমন ধরনের দোয়া করেছ? তোমার এই দোয়া করা ঠিক হয়নি। কারণ, আখিরাতের শাস্তি দুনিয়ায় ভোগ করার সাধ্য কোনো মানুষের নেই। তুমি কেন সহজ দোয়া করছ না?’

এই বলে রাসুল (সা.) দোয়া তাঁকে শিখিয়ে দিলেন, ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাওঁ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাওঁ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০১)

এর অর্থ: ‘আর তাদের মধ্যে অনেকে বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও ও পরকালেও কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে অগ্নিযন্ত্রণা থেকে রক্ষা করো।’

আরও পড়ুনযে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল ২২ মার্চ ২০২৪

আরেকটি ঘটনা। সাহাবি আনাস ইবনে মালিক (রা.) তখন বৃদ্ধ, চলতে-ফিরতে অক্ষম। তাঁর কাছে বসরা থেকে একদল লোক এসে বলল, ‘হে আনাস (রা.), আপনি রাসুল (সা.)–কে দেখেছেন। আপনার মতো সৌভাগ্যবান মানুষের কাছ থেকে শুধু দোয়া নিতে আমরা বসরা থেকে এসেছি। আমাদের জন্য দোয়া করুন।’ তখন আনাস (রা.) তাঁদের নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ পড়ে দোয়া করলেন।

বসরার লোকেরা বলল, আরও কিছু দোয়া করুন। আনাস (রা.) আবারও এই দোয়া করলেন। আনাস (রা.) কয়েকবার এ দোয়াই করলেন।

আনাস (রা.) তাঁদের বললেন, ‘আমি শ্রেষ্ঠতম দোয়াটিই করেছি। যদি এই একটি দোয়া কবুল হয়, তবে তোমাদের অন্য যা কিছু প্রয়োজন, সবই এর বরকতে পূরণ হয়ে যাবে।’

এই দোয়া শুরু হয়েছে রাব্বানা দিয়ে। দোয়ায় তিনটি অংশ আছে—

১. দুনিয়ার কল্যাণ ২. আখিরাতের কল্যাণ এবং ৩. জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি।

মহান আল্লাহর থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয় থাকতে হবে, আবার তিনি আমাদের চাওয়াগুলো কবুল করবেন, এই আশাবাদ থাকতে হবে। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করতে হবে, জান্নাত পাওয়ার আশা করতে হবে, ঠিক তেমনি জাহান্নামের আগুনের ভয়েও সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে এই দোয়ায় আছে। তাই এ দোয়া এত সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনআল্লাহর নিদর্শন উট হত্যা করেছিল সামুদ জাতি২১ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই দ য় আম দ র আল ল হ কল য ণ

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা জেলার ১৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

খুলনা জেলার ১৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৮৮১ সালের ২৫ এপ্রিল খুলনাকে জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামের পরে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প ও বন্দরনগরী ঐতিহ্যবাহী খুলনা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা ও ভৈরব নদীর তীরে এর অবস্থান। 

নদ-নদী বিধৌত হযরত খানজাহান আলীর (রহ.) স্মৃতি বিজড়িত সুন্দরবনের কোল ঘেঁষা অপরূপ এ জেলাটি লম্বা আকৃতির ও চৌকা ধরনের। দেশের প্রাচীনতম নদী বন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা অন্যতম।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠার ১৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা, স্মরণিকা প্রকাশ, খুলনা মেজবানী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা আজ শিববাড়ির মোড়ে আয়োজিত সমাবেশ উদ্বোধনের পর নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে।

খুলনার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৪ হাজার ৬৩০ বর্গমাইল এলাকা, ৪৩ হাজার ৫০০ জনসংখ্যা অধ্যুষিত খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাকে নিয়ে ১৮৮২ সালের ২৫ এপ্রিল গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে খুলনা ছিল যশোর জেলার মহকুমা।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ