চুয়াডাঙ্গায় যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে ৩ কোটি টাকার সোনার বার উদ্ধার
Published: 4th, March 2025 GMT
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চুয়াডাঙ্গা অভিমুখী পূর্বাশা পরিবহনের যাত্রীবাহী ১টি বাসে তল্লাশি চালিয়ে ১৮টি সোনার বার, নগদ ১০ হাজার ১৯০ টাকা, ২টি মুঠোফোনসহ ২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ এলাকায় বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন এ অভিযান পরিচালনা করে।
আটক দুজন হলেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পীরপুরকুল্লা গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪২) এবং কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের লিটন খান (২৬)।
বিজিবির ভাষ্যমতে, জব্দ করা সোনার বারগুলোর ওজন ২ কেজি ৪১১ গ্রাম এবং জব্দ করা সবগুলো মালামালের মূল্য ২ কোটি ৯৩ লাখ ৭৮ হাজার ২১৩ টাকা। আজ বিকেলে ৬-বিজিবির পরিচালক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিজিবি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পূর্বাশা পরিবহনের মাধ্যমে সোনা চোরাচালান হবে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মো. হায়দার আলীর নেতৃত্বে বিজিবির অভিযানকারী দল চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের সরোজগঞ্জ বাজার এলাকায় অবস্থান নেয়। দলটি ওই গাড়িকে শনাক্তের পর থামিয়ে তল্লাশি চালায়। এ সময় সন্দেহভাজন দুই যাত্রী রফিকুল ইসলাম ও লিটন খানের দেহ তল্লাশি করে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ১৮টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া তাঁদের কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার ১৯০ টাকা ও ২টি মুঠোফোন জব্দ করা হয়।
অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান জানান, মামলাসহ আসামিদের সদর থানায় সোপর্দ করা এবং সোনার বারগুলো চুয়াডাঙ্গা কোষাগারে জমা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে সব সামরিক সহায়তা স্থগিত ট্রাম্পের
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার তিন দিন পর দেশটিতে সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ইউক্রেনের পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইউরোপের নেতারা। সেই সঙ্গে তারা ইউরোপে নিরাপত্তা জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ খবরের পর বাগ্বিতণ্ডার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ট্রাম্পের ‘শক্তিশালী নেতৃত্বে’ কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জেলেনস্কি।
গতকাল মঙ্গলবার সিএনএন জানায়, হোয়াইট হাউসের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ সহায়তা বন্ধ ইউক্রেনের প্রতিরোধের সামর্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জেলেনস্কি শান্তি আলোচনায় সম্মত হবেন না, ততক্ষণ এ স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। এদিকে দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন ইউরোপের নেতারা। তারা কঠোরভাবে ইউক্রেনের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। সেই সঙ্গে ইউরোপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরেও গুরুত্ব আরোপ করেন। গতকাল পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশোতে পোলিস পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড তুস্ক বলেন, ‘সিটবেল্ট বেঁধে প্রস্তুত হোন; আমরা বিশৃঙ্খল এলাকায় প্রবেশ করতে যাচ্ছি।’ তিনি ইউরোপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ না করেই সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, ইউরোপ তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে প্রস্তুত। এ জন্য তারা ৮৪ হাজার ১০০ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করবেন বলে জানান তিনি। ডেনমার্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ট্রোয়েল লান্ড গৌলসেন বলেন, কিছু বিষয়ে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। এর মধ্যে আছে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেপণাস্ত্র। এ অবস্থায় ইউরোপকে ইউক্রেনের সহায়তায় আরও বেশি কিছু করতে হবে।
এদিকে ইউরোপ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখালেও সামরিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। তারা বলছে, এটা ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে আনতে ভূমিকা রাখবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘যদি এটা সত্যি হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে তা কিয়েভকে শান্তি প্রক্রিয়ার দিকে নিয়ে যাবে। শান্তির জন্য সম্ভবত এটা অত্যন্ত বড় একটি পদক্ষেপ।’ এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতের খবরের পর এক্সে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, আমি শান্তির প্রতি ইউক্রেনের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা কেউই সীমাহীন যুদ্ধ চাই না। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমি এবং আমার দল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শক্তিশালী নেতৃত্বে কাজ করতে প্রস্তুত।
ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আমাদের বৈঠকটি যেভাবে হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি। এটি দুঃখজনক যে, এটি এভাবে ঘটেছে। বিষয়গুলো ঠিক করার সময় এসেছে। আমরা চাই ভবিষ্যতে সহযোগিতা ও যোগাযোগ গঠনমূলক হোক। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো সময় খনিজ চুক্তি করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জেলেনস্কি। নজিরবিহীন এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া হয়।
রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পরিকল্পনা
ইউক্রেন ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলেও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞামুক্ত করতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনরায় চালু এবং ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি চাওয়ায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট আরেকজন জানিয়েছেন। এরই মধ্যে হোয়াইট হাউস মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়কে নিষেধাজ্ঞার পরিধি নিয়ে একটি তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে।