বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় বালুভর্তি ট্রাক। বালুর স্তর কিছুটা সরাতেই বেরিয়ে আসে ভারতীয় চিনির বস্তা ও ব্লেড। আজ সকালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় র‍্যাবের অভিযানে দুটি ট্রাকে ভারতীয় ১৭০ বস্তা চিনি ও ১ লাখ ২০ হাজার পিস ব্লেডের চালান ধরা পড়েছে। এই অভিযানে দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুক্তাগাছায় আজ সকাল ৯টার দিকে অভিযান চালানোর সময় নিমুরিয়া এলাকায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়। বাইরে থেকে ট্রাকের ওপরে ত্রিপল দিয়ে মোড়ানো বালু দেখা যায়। পরে বালু সরিয়ে সেখান থেকে ১১১ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করা হয়। এ সময় ট্রাকের চালক পালিয়ে গেলেও চালকের সহকারী রাকিবুল হাসানকে (২২) আটক করা হয়। অন্যদিকে মুক্তাগাছার চেচুয়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হালিমের গোডাউনের সামনে থেকে একই রকম বালুভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করা হয়। ট্রাকের ওপরের বালু সরিয়ে সেখান থেকে ৬৯ বস্তা ভারতীয় চিনি ও ১ লাখ ২০ হাজার পিস ভারতীয় জিলেট ব্লেড উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ট্রাকের চালক ময়মনসিংহ সদর উপজেলার খাগডহর বরিয়ান এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান সিরাজকে (২৮) আটক করে র‍্যাব।

র‍্যাব-১৪ ময়মনসিংহের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামসুজ্জামান বলেন, এসব পণ্য অবৈধ পথে ভারত থেকে পাচার হয়ে এসেছে। র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই পথে আসা ভারতীয় পণ্য পরিবহনের কাজের সঙ্গে জড়িত। মুক্তাগাছার একটি চক্র চোরাই পথে আসা এসব পণ্যের বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে পৃথক মামলায় মালামালসহ আটকদের মুক্তাগাছা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তিন বছরে কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ, দ্রুত চালুর দাবি এলাকাবাসীর

নির্ধারিত সময় শেষে এক বছর সময় বাড়িয়েও ময়মনসিংহে শেষ করা যাচ্ছে না হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ। ৫৫ শতাংশ কাজ হওয়ার পর গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন্ধ হয়ে যায় প্রায় দেড় শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় নির্মাণসামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত হাইটেক পার্কের কাজ শেষ করে এটি চালুর দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে দেখভালের জন্য উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান প্রকল্পটিতে রয়েছেন। আজ রোববার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাততলাবিশিষ্ট হাইটেক পার্কের মূল কাজ হবে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ভারতে চলে যাওয়ায় পুরো প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে শ্রমিকসংকটে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে কাজ চালুর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৫৫ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আমরা এক বছর সময় পেলে কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করতে পারব।’

প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ২২ জুন ময়মনসিংহ নগরের কিসমত এলাকায় হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তৎকালীন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। ভারত সরকারের অর্থায়নে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীন জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহে পার্কটি হচ্ছে। ৬ দশমিক ১ একর জমির ওপর প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এটি। এই ভবনের প্রতি তলায় ১৫ হাজার বর্গফুট জায়গা থাকবে। পার্কটি চালু হলে প্রতিবছর অন্তত এক হাজার তরুণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও তিন হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা শহীদুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পালানোর পর হাইটেক পার্কের কাজও বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত পার্কটি বাস্তবায়িত হোক। এটি চালু হলে আমাদের এলাকার চিত্র বদলে যাবে। আমাদের এলাকার ছেলেমেয়েরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে উপকৃত হবে।’

২০২২ সালের জুনে ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন হলেও কাগজপত্রে কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের জুনে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি) কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে ভয়েন্টস সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে ভারতীয় অপর একটি প্রতিষ্ঠান। কাজটি ২০২৪ সালের জুনে শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত আরও এক বছর সময় বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলঅ্যান্ডটি) কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কর্মকর্তা রাজীব ঘোষ বলেন, তিনি ভারত থেকে প্রকল্পটিতে নতুন যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে কিছু বলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, ‘হাইটেক পার্ক প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছি। এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আশা করছি, খুব দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু: আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
  • গাজীপুরে অন্তঃসত্ত্বা পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, স্বামী গ্রেপ্তার
  • মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিসের আন্দোলন, প্রশ্ন যাত্রীর
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক যানচলাচল স্বাভাবিক, কয়েকটি কারখানায় ছুটি
  • গাজীপুরে নারী শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে মহাসড়ক অবরোধ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
  • জামালপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ, গাড়িতে আগুন 
  • মাটি কামড়ে নিজের পেশায় টিকে আছেন ময়মনসিংহের মৃৎশিল্পীরা
  • তিন বছরে কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ, দ্রুত চালুর দাবি এলাকাবাসীর