প্রতিপক্ষের হামলায় মাথা ফাটল বিএনপি নেতার
Published: 4th, March 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় ইউসুফ হোসেন (৫৭) নামে বিএনপির এক নেতার মাথা ফেটে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার উপজেলার নুরনগর মাছের আড়ৎ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে যুবদল নেতা সাদিকুর রহমান আহত হয়েছেন। দু’জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ইউসুফ নুরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জেলা তাঁতী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও উপজেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ছিলেন। স্থানীয় মিজানুর রহমান ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তিনি আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এখন বিএনপির এক পক্ষের হয়ে কাজ করছেন বলে নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন।
ইউসুফের ভাষ্য, তাদের লোকজন মঙ্গলবার নিজেদের ক্ষেতে নাবি ধান কাটার কাজ করছিলেন। এ সময় মিজানুর লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে তিনি সেখানে গেলে মিজানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন চড়াও হন।
মিজানুর আগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন অভিযোগ করে আবু ইউসুফ বলেন, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর হঠাৎ ভোল পাল্টে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একাংশের মদদে তিনি যা খুশি তা করে বেড়াচ্ছেন।
প্রতিপক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়, পাল্টা অভিযোগ করে মিজানুর রহমান বলেন, দীপু মনির সঙ্গে দু-একবার দেখা হওয়ায় ছবি থাকলেও কখনও তিনি তাঁর সহকারী ছিলেন না। জনসমর্থনে তাঁকে হারাতে না পারার কৌশল হিসেবে আওয়ামী লীগের ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাঁকোই ভরসা ১৭ গ্রামের মানুষের
বাঞ্ছারামপুরে তিতাস নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোই ভরসা দুই উপজেলার ১৭ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষের। এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগর উপজেলার মানুষ। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে এই স্থানে খেয়া নৌকা চলাচল করেছে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে তিতাস নদীর এই স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি করে এলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরদাবাদ ইউনিয়নের চরলহনিয়া ওয়াই সেতুর নিচ থেকে তিতাস নদীর একটি শাখা কলাকান্দি, পূর্বহাটি, ফরদাবাদ, পিঁপিড়িয়াকান্দা, দুবাচাইল, বাজে বিশারা, ভিটিবিশারা, গোকুলনগর গ্রাম দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ইমামনগর পর্যন্ত গিয়েছে। দড়িকান্দির ইমামনগর এলাকার আনন্দবাজার সংলগ্ন তিতাস নদীতে পলি পড়ে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে এ এলাকার অনেক জায়গা দিয়ে মানুষ হেঁটেই নদী পারাপার হতে পারে। ইমামনগর আনন্দবাজার থেকে নবীনগর উপজেলার ভিটিবিশারা গ্রামের মধ্যে একটি খেয়া নৌকা চলাচল করত। গত কয়েক বছর ধরে এলাকাবাসী নিজেদের টাকায় একটি সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করছে। এই সাঁকো ব্যবহার করে নবীনগর উপজেলার রতনপুর ও শ্রীকাইল ইউনিয়নের ভিটিবিশারা বাজেবিশারা, শাগদা, শ্রীকাইল, পেন্নাই, চন্দ্রনাইল, দুবাচাইল, রতনপুর, সাহাপুর, সাতমোড়া, মোল্লা, ভাউচাইল গ্রামের লোকজন বাঞ্ছারামপুরের কড়িকান্দি ফেরি পার হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। অন্যদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ইমামনগর, দড়িকান্দি, গোকুলনগর, খাল্লা, ফরদাবাদ গ্রামের লোকজন নবীনগর উপজেলাসহ কুমিল্লা, চট্টগ্রামে যাতায়াত করে। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই পথে যাতায়াত করে।
সাঁকো এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ইমামনগর গ্রামের আনন্দবাজার থেকে তিতাস নদীর ওপর দিয়ে বাঁশের সাঁকোটি নবীনগর উপজেলার ভিটিবিশারা গ্রামের বাংলাবাজার পর্যন্ত গেছে। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪০০ ফুটের মতো। এই সাঁকো ব্যবহার করে এ এলাকার মানুষ প্রতিদিন দুই বাজারে ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদর হয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, মুরাদনগর, নবীনগরে যাতায়াত করে। বাঁশের পিলারের ওপর কাঠ দিয়ে এ সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। দুই উপজেলার কয়েক গ্রামের সচ্ছল ব্যক্তির আড়াই লাখ টাকায় সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছে।
স্কুল শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার বলে, ‘এ সাঁকো দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় ভয়ে থাকি কখন যেন পড়ে যাই। এ জায়গায় পাকা সেতু নির্মাণে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
আনন্দ বাজারের ব্যবসায়ী মুসা মিয়া জানান, নদীতে সেতু না থাকার কারণে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এতে অনেকেই এখান থেকে বাজার করতে আগ্রহী হন না।
রতনপুর গ্রামের চুন্নু মিয়া বলেন, ‘আমরা ঢাকায় গেলে সচরাচর এ পথটা ব্যবহার করি। কিন্তু নদীতে সাঁকোর কারণে সরাসরি গাড়ি দিয়ে যেতে পারি না। এতে আমরা ভোগান্তির শিকার হই।’
ভিটিবিশারা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন জানান, তাদের গ্রামের সঙ্গে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার এই অংশে যদি সেতু নির্মাণ হয় তবে অল্প সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা যাবে।
গোকুলনগর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা জরুরি প্রয়োজনে নবীনগর উপজেলায় যেতে চাইলে বিকল্প পথ হিসেবে এটা (সাঁকো) ব্যবহার করি। কিন্তু সাঁকো থাকার কারণে হেঁটে যেতে হয়, যানবাহন ব্যবহার করতে পারি না। এতে সময় ও পরিবহন খরচ দুটোই বেড়ে যাচ্ছে।’
দড়িকান্দি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল করিমের ভাষ্য, এই জায়গা দিয়ে প্রতিদিন দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করে। বিশেষ করে নবীনগর উপজেলার মানুষ ঢাকায় যেতে এই সড়ক ব্যবহার করে। এতে তাদের দূরত্ব অনেক কমে যায়। এখানে সেতু নির্মাণ হলে নবীনগর উপজেলার মানুষের উপকার হতো। পাশাপাশি এলাকার মানুষ এ পথ ব্যবহার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম যেতে পারবে।
উপজেলার প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এখানে সেতু নির্মাণের জন্য কয়েকবার সার্ভে করা হয়েছে। বিষয়টি দুই উপজেলায় হওয়ার কারণে সময় লাগছে।