রাজধানীর ধোলাইখালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় এক বিএনপির নেতার হামলার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।

আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে ’৭১–এর গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘যে হাত শিক্ষার্থী মারে, সে হাত ভেঙে দাও’, ‘আমার শিক্ষার্থী ভাইকে মারে, প্রশাসন কী করে’, ‘হামলাকারীর বিচার চাই, বাঁচার জন্য বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ধোলাইখাল এলাকার টিপু সুলতান সড়কে ঘটনার সূত্রপাত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ ধোলাইখাল এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুলক্রমে তিনি নির্মাণাধীন একটি ভবনের ঢালাইয়ের ওপর পা রাখেন। এতে স্থানীয় কয়েকজন তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী। তাঁরা যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাঁদেরও আটকে রেখে মারধর, হামলা করেন।

আহত শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, মারধর–হামলায় নেতৃত্ব দেন স্থানীয় বিএনপির নেতা শহিদুল হক সহিদ। তিনি ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (ওয়ারী থানা) বিএনপির নেতা। এ ছাড়া তিনি নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বিভিন্ন সময় শহিদুল হককে ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

আজ জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাহীন মিয়া বলেন, ‘গতকাল ধোলাইখালে শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে, আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। হামলাকারীরা যে দল, গোষ্ঠী, মতেরই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নে আমরা একতাবদ্ধ আপসহীন।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী শহিদুল ও তাঁর দোসররা যে দলেরই হোক, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। নতুবা ভিন্ন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায়ভার আপনাদের গ্রহণ করতে হবে।’

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, ‘কালকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও কেন সঙ্গে সঙ্গে তাদের (হামলাকারীদের) আটক করেনি?.

..আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান করব, আপনারা অভিভাবক হিসেবে এখানে ভূমিকা রাখবেন। প্রয়োজনে অপরাধকারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করবেন।’

আরও পড়ুনমধ্যরাতে ধোলাইখালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর–হামলা, উত্তেজনা১০ ঘণ্টা আগে

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে ধোলাইখাল এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এতে আট শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নাহিদ ইসলাম, জাহিদ হাসান, ইশতিয়াক হোসেন ও আল মামুন; ইতিহাস বিভাগের হাবিবুর রহমান; ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের আবু বকর সিদ্দিক, আকাশ ও আবু সাঈদ মো. আকিব। তাঁদের মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ র থ দ র ওপর ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডিতে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান ডিএসসিসির  

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় শুক্রবার মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থানা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও ধানমন্ডি সোসাইটি এ অভিযানে অংশ নেয়। 

সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৫০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী, স্বাস্থ্য বিভাগের ৫০ জন মশক কর্মী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, বিডি ক্লিনের ৫০ জন এবং ধানমন্ডি সোসাইটির ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকাকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে মূল রাস্তা, লেক, পার্ক, মসজিদ, ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার ও মশার ওষুধ  ছিটিয়ে নেওয়া হয়। 

অভিযানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ঢাকাকে সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক সোসাইটিগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছে। রাজউক, গণপূর্ত, বিআরটিএ, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার অংশগ্রহণে সরকার একটি সুপরিকল্পিত ও সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে। এছাড়া পয়ঃনিষ্কাশনের জন্যেও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন হচ্ছে।

দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হবে। ধানমন্ডি থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে।  

অভিযান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অতিথিরা জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ধানমন্ডি সোসাইটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ