বসুন্ধরায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজনকে মারধর
Published: 4th, March 2025 GMT
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজন মারধরের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুই বিদেশিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারা শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আহত অন্যজনের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, দুপুর দেড়টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে কল করে একজন বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা এক্সচেঞ্জের নামে বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বিদেশিরা। এ নিয়ে ব্যাপক ঝামেলা চলছে। প্রতারকদের আটকে রাখা হয়েছে, পুলিশের সহায়তা দরকার। এরপর ভাটারা থানা পুলিশের একটি দল বসুন্ধরার আবু সাঈদ সড়কে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শত শত লোক ঘিরে ধরে বিদেশিসহ তিনজনকে মারধর করছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তাদের বহনকারী গাড়ি। পুলিশ যাওয়ার পর লোকজন দ্রুত পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, আবু সাঈদ গেট এলাকায় লোকজন প্রথমে ওই বিদেশিদের মারধর করে। তখন তারা গাড়ি নিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা চালায়। ওই সময় সামনে থাকা রিকশাসহ অন্য কয়েকটি যানবাহন গাড়ির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিছু দূর যাওয়ার পরই লোকজন তাদের আটকে আবার মারধর করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত দু’জনকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে মুদ্রা বিনিময় নিয়ে প্রতারণার অভিযোগের কথা বলা হলেও পুলিশ কোনো অভিযোগকারীকে পায়নি। তাই প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে, তা তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
ভাটারা থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম সমকালকে বলেন, দুই বিদেশির সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি গাড়িচালকও পিটুনির শিকার হয়েছেন। তবে তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছেন। কী কারণে মারধরের ঘটনা ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের নাম-ঠিকানাও জানা সম্ভব হয়নি। আহতরা সুস্থ হয়ে উঠলে বিস্তারিত জানা যাবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশকে গুলি ছোড়া সাজ্জাদ কেন ধরা পড়ছে না, যা জানা গেল
পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যাওয়া, তিনজনকে গুলি করে খুন, ওসিকে পেটানোর হুমকি—এত অপরাধ করার পরও এখনো ধরা পড়েননি চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন। পুলিশ এক মাস আগে তাঁকে ধরতে পুরস্কারও ঘোষণা করে। কিন্তু এরপরও হদিস পাচ্ছে না। পুলিশ ধরতে না পারলেও টিকটক ও ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান দিচ্ছেন নিজের সরব উপস্থিতি।
এই সন্ত্রাসীকে কেন ধরতে পারছে না সেই প্রশ্ন উঠে আসে আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনেও। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, সাজ্জাদ অত্যন্ত কৌশলী। তাঁকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ জানায়, সাজ্জাদ হোসেন বিদেশে পলাতক ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১৭টি মামলা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরে আনিস, কায়সার ও আফতাব উদ্দিন নামের তিন বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার মামলার আসামি তিনি।
জানা গেছে, গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। পরের মাসের শুরুতে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। বায়েজিদ বোস্তামী থানাসংলগ্ন হাটহাজারীর শিকারপুরের মো. জামালের ছেলে তিনি। সর্বশেষ গত বছরের ৪ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি। এতে পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন।
পলাতক সাজ্জাদ ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক সন্ত্রাসী মিজানুর রহমানের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওয়াজেদিয়া এলাকায় জড়ো হলে গত রোববার পুলিশ সেখানে গিয়ে হাজির হয়। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ মিল্লাত (২৪), মোহাম্মদ আবুল হাসনাত ফাহিম (২০), মো. রুবেল (২৬)। তাঁদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ৯ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, ছুরি, কাঁচি, মুঠোফোনসহ কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মিজান ও সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সন্ত্রাসী সাজ্জাদ সেখানে অবস্থান করছেন খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত অভিযান শুরু করে। কিন্তু আগেই পালিয়ে যান তাঁরা।
এই ঘটনার পর আজ দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পুলিশ। সেখানে পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিরা বায়েজিদ এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জায়গা দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে লিপ্ত আছে। মিজানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ছোট সাজ্জাদের বিরোধ আছে। তাঁরা এলাকায় ছোট–বড় দালান থেকে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি করে থাকেন। আমাদের কাছে তথ্য ছিল ছোট সাজ্জাদ সেখানে আসতে পারেন। আমরা তাঁকে গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চালাচ্ছি। ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ১৭টি এবং মিজানের বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ ১০টি মামলা রয়েছে।’
পুরস্কার ঘোষণার পরও সাজ্জাদকে কেন গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না প্রশ্নের উত্তরে উপপুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘সাজ্জাদ অত্যন্ত কৌশলী। আমরা জানতে পেরেছি দেশে রয়েছে। তাঁকে ধরতে চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
চট্টগ্রাম নগরের পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম। আজ দুপুরে