বিএনপি অফিসের পিওন পরিচয়ে ওসির সঙ্গে অসদাচরণ
Published: 4th, March 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিওন পরিচয়ে আশুলিয়া থানার ওসির সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে সুমন মিয়া নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়া থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সুমন মিয়া নিজেকে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় অফিসের পিওন বলে দাবি করেন।
জানা গেছে, আজ সুমন আশুলিয়া থানার ওসির রুমে ঢুকে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ওসির বিষয়ে তদন্ত করতে বিএনপি অফিস থেকে তাকে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সুমন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি বিএনপি’র নজরে এলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিএনপির কেউ নন এবং ভুয়া পরিচয়ে দলের নাম ব্যবহার করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই যুবক। একই সঙ্গে রুহুল কবির রিজভী আশুলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলুকে ফোন করে প্রতারক সুমনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কিছু অসাধু ব্যক্তি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করছে, যা মেনে নেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা প্রতারকের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, সে (সুমন) একজন প্রতারক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব যবস থ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
পিআইও-এলজিইডি টানাপোড়েনে নির্মাণ হচ্ছে না সেতু
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দুই দপ্তরের টানাপোড়েনে সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। টেন্ডার আহ্বান করা হলেও এলজিইডির প্রকৌশলীর বাধায় সেতু নির্মাণ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার।
জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের ওপর ৯টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও)। অনুমোদন পাওয়ার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে দরগ্রাম ইউনিয়নের রৌহা বাকপাড়া সড়কের খালের ওপর একটি নতুন সেতু হবে। সেখানে ৪০ বছরের পুরোনো একটি সরু সেতু রয়েছে। সেই পরিত্যক্ত সেতু নিলাম করে অপসারণের জন্য মৌখিকভাবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্মকর্তাকে বলা হলেও তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। সেতুটি অপসারণ না করায় নতুন সেতু নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রকল্পের টাকা ফেরত যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এলজিইডি কর্মকর্তা ইমরুল হোসেনের দাবি, সড়কটি তাদের। যার কোড নম্বর ৪০৬৪। এ সড়কের মধ্যে বা খালের ওপর সেতু নির্মাণ করবে এলজিইডি বিভাগ।
সেতুর পাশের একটি বাড়ির বাসিন্দা হায়দার আলী বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে বাকপাড়া খালের ওপর একটি সরু সেতু নির্মাণ করা হয়। সেটির এখন ভগ্নদশা। সেতুর চারদিকে রেলিংসহ পাটাতন ভেঙে গেছে। সেতুতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশ থেকে দুটি ভ্যান গাড়ি উঠে এলে পার হতে পারে না। সেতুটি সরু হওয়ায় এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি শুনেছেন এখানে নতুন সেতু হবে কিন্তু সেটার কাজ নাকি বন্ধ করে দিয়েছেন এলজিইডি কর্মকর্তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, ডিএস, সিএস, এসএ ও আরএস পর্চায় সড়কের মালিক পিআইও। ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ সড়কে রক্ষণাবেক্ষণ করেন তারা। এ ছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক রেজুলেশনে তারা যে কোনো সড়কের ওপর সেতু নির্মাণ
করতে পারেন। এতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু এলজিইডি কর্মকর্তা কেন সেতু নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন, তা তিনি জানেন না। মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি সুরাহার জন্য ইউএনওর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বলে জানান তিনি।
খলিলুর আরও বলেন, এ প্রকল্পের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ ২০২৬ এর ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়। এ সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা না হলে বরাদ্দ ২৭ লাখ ৮০ হাজার ২৫২ টাকা ফেরত যাবে। ফলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে এলাকাবাসী। বাকপাড়া খালের ওপর একটি সরু সেতু রয়েছে। তা নিলামের মাধ্যমে অপসারণ করতে বলা হলেও এলজিইডি বিভাগ কর্ণপাত করছে না। উল্টো ওই সড়ক তারা নিজেদের বলে দাবি করছে। ফলে সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা ইমরুল হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগেই রৌহা গ্রামের বাকপাড়া সড়কটিতে এলজিইডির কোড নম্বর পড়েছে। ফলে এই সড়কে যা উন্নয়ন করা হবে, তা এলজিইডি বিভাগ করবে। বাকপাড়া খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করবে এলজিইডি বিভাগ। সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কীভাবে দরপত্র আহ্বান করে। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের যে রেজুলেশন দেখিয়েছেন, তার মেয়াদ পাঁচ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। তিনি সেই রেজুলেশন দেখিয়ে কীভাবে সেতু নির্মাণের দাবি করেন।
সাটুরিয়ার দরগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আলীনূর বকস রতন বলেন, রৌহা গ্রামের বাকপাড়া খালের ওপর সরু সেতুটি মানুষের কোনো উপকারে আসে না। এই সেতু দিয়ে দুটি রিকশাভ্যান পাশাপাশি চলতে পারে না। এলজিইডির বাধার কারণে নতুন সেতুর নির্মাণকাজও করতে পারছে না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফৌজদার এন্টারপ্রাইজ। সেতুটি নির্মাণ না হলে কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তির অবসান হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হোসেন বলেন, তিনি পিআইও ও এলজিইডি অফিসকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি চালাচালি করে সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন।