সার্বিয়ায় পার্লামেন্টের ভেতরে বিরোধী এমপিদের কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ
Published: 4th, March 2025 GMT
বসন্তকালীন অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে সার্বিয়ার বিরোধী দলের আইন প্রণেতারা দুর্নীতি বিরোধী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে পার্লামেন্টের ভেতরে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছেন। মঙ্গলবার দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার আইনসভার অধিবেশনে সার্বিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টি (এসএনএস) এর নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট এজেন্ডা অনুমোদনের পর বিরোধী দলের কয়েক জন আইনপ্রণেতা তাদের আসন থেকে বেরিয়ে স্পিকার আনা ব্রনাবিচের দিকে ছুটে যান এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সাথে ধস্তাধস্তি করেন। অন্যরা স্মোক গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে ভবনের ভিতরে কালো এবং গোলাপী ধোঁয়া দেখা গেছে।
একটি লাইভ ভিডিও ফিডে দেখা যায়, স্পিকার আনা ব্রনাবিচ বিরোধী দলের প্রতিবাদের তীব্র নিন্দা করে বলছেন, “তোমাদের রঙিন বিপ্লব ব্যর্থ হয়েছে, আর এই দেশ বেঁচে থাকবে। এই দেশ কাজ করবে এবং এই দেশ জিততে থাকবে।”
ব্রনাবিচ জানান, সংঘাতের ঘটনায় দুই আইনপ্রণেতা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন স্ট্রোক করেছিলেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গত বছর একটি ট্রেন স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহতের পর ছাত্রদের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে কয়েক মাস ধরে সার্বিয়া কাঁপছে। এই আন্দোলন সার্বিয়া সরকার এবং প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনের জেরে জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার অভিযান স্থগিত
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক সাইবার অভিযান স্থগিতের রাখার নির্দেশের বিষয়ে পেন্টাগনের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা।
ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে ওয়াশিংটন। আর এ সময়টায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের তাদের সাইবার অভিযান স্থগিত রেখেছে- এই তথ্য সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে আনে দ্য রেকর্ড।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত দুুটি সূত্র বলছে, সংবেদনশীল কূটনৈতিক উদ্যোগের সময় এই ধরনের সাইবার অভিযান বন্ধ থাকা অস্বাভাবিক নয়।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরিকল্পনা জমা দেবে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য
ট্রাম্পের সঙ্গে ঝড় তুলে লন্ডনে জেলেনস্কি, যুদ্ধের পরিণতি কী
রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন সাইবার অভিযান স্থগিতের বিবরণ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। তবে এ বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মস্কোর প্রতি সমঝোতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি আরো স্পষ্ট করেছে, যা ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের বিরক্তি বাড়িয়েছে।
সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ রবিবার একটি পোস্টে শুমার বলেন, “পুতিনের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ভুল। সেরা প্রতিরক্ষা সর্বদা একটি শক্তিশালী আক্রমণ এবং এটি সাইবার নিরাপত্তার জন্যও সত্য।”
সোমবার মার্কিন হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি অ্যাডাম স্মিথ বলেছেন, পেন্টাগনকে কংগ্রেসের কাছে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত, যার মধ্যে আদেশের পরিধি এবং মার্কিন মিত্রদের ওপর প্রত্যাশিত প্রভাবের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
স্মিথ আরো জিজ্ঞাসা করেন, “আদেশের আগে কোনো ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়েছিল কিনা অথবা আদেশের ফলে সাইবার অভিযান এখনও বন্ধ রয়েছে কিনা।”
এদিকে, পেন্টাগন এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, “কার্যক্ষম নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে, আমরা সাইবার গোয়েন্দা, পরিকল্পনা বা অভিযান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করি না বা আলোচনা করি না।”
ট্রাম্প গত সপ্তাহে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সময় প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। তিনি তিন বছর ধরে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণার সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত অবসানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্প দ্রুত ইউক্রেনের বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। ট্রাম্প তার অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ইউক্রেন ইস্যুতে মার্কিন নীতি পরিবর্তন করেছেন।
সোমবার, জেলেনস্কির সাম্প্রতিক মন্তব্যর কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্প। রবিবার এপিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেছিলেন, “আপাতত নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।”
জেলেনস্কির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত বিবৃতি দিয়েছেন, তার মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে জঘন্য এবং যুক্তরাষ্ট্র আর এসব সহ্য করবে না।”
ট্রাম্প আরো লেখেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, যতদিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত এই লোকটি ইউক্রেনে শান্তি চাইবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ