শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখতে চান গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক
Published: 4th, March 2025 GMT
বাংলার মাটিতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসি কার্যকর দেখতে চেয়েছেন জুলাই আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়েও মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে আসা তরুণ রিকশাচালক ও রায়েরবাগের বাসিন্দা সাকিব।
তিনি বলেছেন, “বাংলার ছাত্রজনতার একটাই দাবি, বাংলার মাটিতে যেন শেখ হাসিনার বিচার হয়। আমরা যেন তার ফাঁসি কার্যকর দেখতে পাই।”
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ২০ দিন ধরে চলমান ছাত্রজনতার গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের তরুণদের কাছে সারাবিশ্ব পরিবর্তনের শিক্ষা নিয়েছে: হারমান বেঞ্জামিন
শেষ হলো ঢাবি শিক্ষকদের ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা
তিনি বলেন, “ছাত্র ভাইয়েরা কেউ শেখ হাসিনার কথা শুনবেন না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করে কেউ ঘরে ফিরবেন না। যদি আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারে, তাহলে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের লিস্ট দেখে আমাদের সব আহতদের শাস্তি দেবে।”
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধসহ ৫ দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের চলমান গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।
মঙ্গলবার ছিল কর্মসূচির ২০তম দিন। এদিন গণঅবস্থানের সংগঠকরা অভিযোগ করেন, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে লাগাতার অবস্থান চললেও অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এ কর্মসূচিকে অবহেলা করছে। এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিলোপের দাবিকে জনপরিসরে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে।
সংগঠক ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড.
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান বলেন, “প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধী। তাই তারা আমাদের উপেক্ষা করছে।”
গণঅবস্থানে অংশ নিয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব বলেন, “ফ্যাসিবাদ দলগুলোকে নিষিদ্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে পালিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট খুনী সন্ত্রাসীরা সগৌরবে প্রকাশ্যে ফিরে এসে হত্যাসহ গুরুতর অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। ফলে সারা দেশ ক্রমাগত অরাজক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু সরকার সমস্যার প্রকৃত সমাধান না করে লোক দেখানো পুলিশি অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে বৃথা চেষ্টা করছে।”
এর আগে, গত রবিবারও (২ মার্চ) গণঅবস্থানে সকাল ৯টা থেকে অংশ নিয়েছিলেন গণঅভ্যুত্থানে আহত রিকশাচালক মো. মোবারক ও মুখলেছ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅবস থ ন আম দ র সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানের ১৮ দিন
ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও মিত্রদের নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে চলমান গণঅবস্থান কর্মসূচি রবিবার ১৮তম দিন অতিবাহিত করেছে।
এদিনও ফ্যাসিবাদী দল নিষিদ্ধ ও বিচারের পাঁচ দফা দাবির পক্ষে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অব্যাহত ছিল।
রবিবার (২ মার্চ) গণঅবস্থানে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অংশ নেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের বিভিন্ন পর্যার্যের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছিলেন।
আরো পড়ুন:
নাগরিক পার্টির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রদল নেতা
ঢাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের পতাকা উত্তোলন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক আহ্বায়ক আনিছুর রহমান, সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, সদস্য ওয়াসিম আহম্মেদ, মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ ও তামিম আনোয়ার।
এছাড়া বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে, রমজান উপলক্ষে গণঅবস্থানের মঞ্চে গণইফতারের আয়োজন করা হয়। এতে গণঅবস্থানকারী ছাত্র-জনতার পাশাপাশি সাধারণ পথচারী রোজাদাররাও অংশগ্রহণ করেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে রাজু ভাস্কর্যের চলমান কর্মসূচি শুরু হয়। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনশনে যোগ দেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
১৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরার শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান শুরু হয়।
২৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
তাদের দাবিগুলো হলো- গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের তাদের মিত্রদের নিষিদ্ধ করতে হবে; সকল ফ্যাসিবাদী দল ও সংগঠনের কার্যালয় ও সম্পদ রাষ্ট্রীয়ভাবে অধিগ্রহণ করে তা ফ্যাসিবাদী আমলে নির্যাতিত অসহায় মজলুমদের পুনর্বাসনে ব্যবহার করতে হবে; ২০০৯-২০২৪ পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রীপরিষদ সদস্যসহ সবাইকে ফ্যাসিস্ট ঘোষণা করে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
তাদের অন্য দুইটি দাবি হলো- ফ্যাসিবাদ ধারণ করে গড়ে ওঠা নব্য ফ্যাসিবাদী বা একই চরিত্রের যেকোনো দল ও সংগঠনকেও নিষিদ্ধ করতে হবে; ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিধান সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী