দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা আমানের আপিলের ওপর রায় ৩০ এপ্রিল
Published: 4th, March 2025 GMT
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল ও লিভ টু আপিলের ওপর আগামী ৩০ এপ্রিল রায় দেবেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে আমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হুদা। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
পরে আইনজীবী নাজমুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আমান উল্লাহ আমানের আপিল ও তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের লিভ টু আপিলের ওপর রায়ের জন্য আগামী ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট আমান উল্লাহ আমানকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানকে দেওয়া ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও সাবেরা আমানকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই বছরের ৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বের আত্মসমর্পণের পর আমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১ আদালত।
এর আগে সাবেরা আমান একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপিল করেন এবং জামিন চান। ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত থেকে জামিন পান তিনি। অন্যদিকে আত্নসমর্পণের পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আমান উল্লাহ আমান। ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি নিয়মিত আপিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানকে জামিন দেন।
দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আমানের করা আপিলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ২০২৩ সালে করা লিভ টু আপিল একসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের এবং সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের খালাস দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পুনঃশুনানি শেষে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট রায় দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল র আইনজ ব আম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
নিলামের প্রথম রাউন্ডে দল না পাওয়া রাহানে কেন কলকাতার অধিনায়ক
আইপিএলের বাকি তিন সপ্তাহ। এমন সময়ে কাল ঘোষণা এল—কলকাতা নাইট রাইডার্সকে এবার নেতৃত্ব দেবেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান অজিঙ্কা রাহানে। সেই রাহানে, যে কিনা এই আইপিএলের নিলামে প্রথম রাউন্ডে দলই পাননি।
শেষ পর্যন্ত নিলামের দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে তাঁকে ভিত্তিমূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে দলে নিয়ে নেয় কলকাতা। তখন ভাবা হচ্ছিল, বিকল্প হিসেবেই রাহানেকে কিনে রাখছে কলকাতা। তবে শেষ পর্যন্ত সেই রাহানেই হলেন কলকাতার অধিনায়ক। কেন?
ব্যাটিং রেকর্ড বিবেচনায় নিলে কলকাতার একাদশে রাহানের জায়গা পাওয়াটাই মুশকিল। এই দলে ওপেনার হিসেবে আছেন সুনীল নারাইন, কুইন্টন ডি কক, রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
আছেন অংকৃশ রঘুবংশী, ২০ বছর বয়সী যে ব্যাটসম্যান নিজের প্রথম মৌসুমেই গতবার ব্যাটিং করেছিলেন ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, রিংকু সিং ও রমনদীপ সিং তো আছেনই। এবার তারা দলে নিয়েছে ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীকেও। মানে সব মিলিয়ে বিধ্বংসী এক ব্যাটিং লাইনআপ। সে ক্ষেত্রে এই দলে রাহানের জায়গা কই?
রাহানেকে নিয়ে ভিন্ন কোনো বিশেষ পরিকল্পনা থাকলে তাঁকে নিশ্চয় নিলামের শেষ দিনে দলে নিত না কলকাতা!
আরও পড়ুন৪ রানে নেই ৬ উইকেট, ঢাকা লিগে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং–বিপর্যয়২ ঘণ্টা আগেমূলত কলকাতা বিপদে পড়েই তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে। পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়ে লাভটা হয়েছে রাহানের। বলে রাখা ভালো, রাহানেও উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ নয়। আইপিএলে রাজস্থানকে দুই মৌসুম নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহানে। ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১১টি ম্যাচে। ২০২০–২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের যে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়, সেটি এসেছে এই রাহানের নেতৃত্বেই। ভারতের ক্রিকেটে এখনো মুম্বাইকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই রাহানে।
রাহানে কেন অধিনায়ক, সে প্রসঙ্গে ফেরা যাক। আসলে আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এবারের মৌসুমে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না। সে কারণেই রাহানের দিকে ছুটেছে দলটি। রাহানে ছাড়া কলকাতাকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন কুইন্টন ডি কক, রাসেল কিংবা নারাইন। এই তিনজনের মধ্যে রাসেল ও নারাইনের একাদশে জায়গা নিশ্চিত।
তবে রাসেল চোটপ্রবণ, নারাইন অধিনায়ক হিসেবে আইএলটি-টোয়েন্টিতে হয়েছেন ব্যর্থ। সব মিলিয়ে আবুধাবি নাইট রাইডার্সকে ৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে মাত্র ৯টিতে জেতাতে পেরেছেন নারাইন। তাই তাঁদের নিয়ে ভাবেনি কলকাতা। ডি ককের যেহেতু একাদশে জায়গা নিশ্চিত নয়, বিদেশি এই ক্রিকেটারকে নিয়ে কেন ঝুঁকি নেবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি?
আইয়ারও অধিনায়ক হতে পারতেন। আলোচনাটা আসলে তাঁকে নিয়েই বেশি ছিল। ২০২১ সাল থেকে আইয়ার দলের সঙ্গে আছেন। এবার কলকাতা তাঁকে ধরে রেখেছে ২৩ কোটি ৭৫ লাখ রুপি দিয়ে।
১৭২.৪৯২০২৩ সালের আইপিএলে রাহানের স্ট্রাইক রেটটাকার অঙ্ক দেখে বোঝাই যাচ্ছে, এই দলে আইয়ারের গুরুত্ব! তবে আইয়ার টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও কখনো নেতৃত্ব দেননি। আর রাহানে ৫৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দিন শেষে কলকাতা টিম ম্যানেজমেন্ট অভিজ্ঞতাকেই বেছে নিয়েছে। আইয়ারের কপালে জুটেছে সহ-অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। মানে আইয়ার আগামীর পরিকল্পনায় আছেন। তবে এ মুহূর্তে আইয়ারের হাতে দায়িত্ব না ছাড়াকেই নিরাপদ ভাবছে দলটি।
প্রশ্ন আছে, রাহানের ব্যাটিং–সামর্থ্য নিয়ে। টুকটুক ব্যাটিংয়ের জন্য টি-টোয়েন্টিতে ব্রাত্য হয়েই যে পড়েছিলেন রাহানে। তবে ২০২৩ সাল থেকে টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়ার চেষ্টায় আছেন রাহানে। কখনো পেরেছেন, কখনো পারেননি। সব মিলিয়ে আইপিএলে ১২৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা রাহানে ২০২৩ সালের আইপিএলে ব্যাটিং করেছিলেন ১৭২.৪৯ স্ট্রাইক রেটে।
রাহানে–আইয়ার জুটি দেখা যাবে আইপিএলে