আকিবের চোখে বাংলাদেশ যেখানে ছিল ভারতের ঠিক পরই
Published: 4th, March 2025 GMT
আকিব জাভেদ যে দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে দেখেছেন, সেই দৃষ্টিতে কি আপনি দেখেছেন? দেখে না থাকলে পাকিস্তান দলের কোচের কথা শুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে হতাশা আরেকটু বাড়তে পারে। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনে বাংলাদেশ দল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আকিব জাভেদ বললেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একটা জায়গায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ভারতের ঠিক পরই।
আরও পড়ুনটানা ১১ ওয়ানডেতে টস হারা রোহিতের সামনেও আছেন একজন৪ ঘণ্টা আগেকোন দিক দিয়ে, সেটাও বলেছেন আকিব—অভিজ্ঞতা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সেই অভিজ্ঞতা পারফরম্যান্সে অনূদিত হয়নি। তিন ম্যাচের একটি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে, আর দুটিতেই হেরে সেমিফাইনালের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আকিব বলেছেন ওই কথাটা, ‘আমার মনে হয় ভারতের পর তারাই ছিল সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল। কিন্তু যে রকম পারফর্ম করা উচিত ছিল, সেটা তারা পারেনি। কারণ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অনেক কঠিন একটা টুর্নামেন্ট। হারানোর জন্য এখানে দ্বিতীয় সারির কোনো দল নেই। কাউকে হারাতে হলে সেটা আপনার সমকক্ষ দলই হবে, অথবা আপনার চেয়ে ভালো। সে জন্যই এটাকে বলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। তিনটি সুযোগের দুটিতেই হেরে গেলে আপনি শেষ।’
অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশকে অনেক দলের চেয়ে এগিয়ে রেখেছিলেন আকিব.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বড় টার্গেট দেওয়ার আশা মিরাজদের
‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে টেস্ট ম্যাচটি জিতেছিলাম, তার কথা বোধ হয় ভুলে গেছেন। প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়ে আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ফিরে এসেছিলাম। ওই টেস্ট থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।’
মেহেদী হাসান মিরাজ সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বড় দলের বিপক্ষে প্রত্যাবর্তন করা সম্ভব হলে জিম্বাবুয়ের সঙ্গেও বড় ইনিংস গড়ে ম্যাচ জেতা সম্ভব। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষেও বাংলাদেশ খানিকটা ব্যাকফুটে, বিশেষ করে জিম্বাবুয়ের ২৫ রানের লিড বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। যদিও মিরাজরা সেভাবে দেখছেন না। তারা বিশ্বাস করেন, দ্বিতীয় ইনিংসে চারশ বা সাড়ে চারশ রান করে বড় লিড নেবে বাংলাদেশ। সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটেও যে রান তাড়া করতে পারবে না জিম্বাবুয়ে।
এই টেস্টে গত দুই দিনে যে ছয়টি সেশন খেলা হয়েছে, তাতে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে উভয় দল। প্রথম দিনে বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউট করে জিম্বাবুয়ে ৬৭ রান করেছিল বিনা উইকেটে। বিশ্লেষকরা ম্যাচের প্রথম দিন জিম্বাবুয়েকেই এগিয়ে রেখেছিলেন। দ্বিতীয় দিনে বোলিং-ব্যাটিং মিলিয়ে বাংলাদেশ লিডে। সেদিক থেকে সিলেট টেস্ট ভারসাম্য রেখে এগোচ্ছে। যেখানে বোলারদের সমন্বিত পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে স্বাগতিক শিবিরে। গতকাল তিন সিমার নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদের সঙ্গে অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং ছিল নজরকাড়া। বিশেষ করে, মিরাজের পাঁচ উইকেট ছিল দারুণ ব্যাপার। ৫২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ইনিংসে ১১ বার পাঁচ উইকেট শিকার করা এ অফস্পিনার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করতে উন্মুখ হয়ে আছেন।
প্রথম দিনের ৬৭ রানের সঙ্গে দ্বিতীয় দিন ২ রান যোগ করার পর ভাঙে জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি। মেঘাচ্ছন্ন সকালে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন টাইগার ফাস্ট বোলার। ২১ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনার বেন কারেন ও ব্রায়ন ব্যানেটকে আউট করে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দেন ফাস্ট বোলার রানা। উইকেট শিকারে রানার সঙ্গে হাসান মাহমুদ যোগ দেওয়ায় প্রথম ঘণ্টায় তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ৩৩ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার ভালো শুরু। সেশন শেষে যেটা ৪ উইকেটে ৬৬ রান ছিল। প্রথম সেশন নিজেদের করে নেওয়ার বড় কৃতিত্ব পেসার রানার প্রাপ্য। কারণ চার উইকেটের তিনটিই তাঁর শিকার। ৪ উইকেটে ১৩৩ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়া জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় সেশনে ভালো খেলে। মেঘ কেটে রোদের হাসিতে হেসেছিল সফরকারীদের ব্যাটও। ক্রেইগ আরভিন-শন উইলিয়ামস, ওয়েসলি মাধেভেরি-শন উইলিয়ামস ছোট ছোট দুটি জুটি গড়ায় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় সেশনে দুই উইকেট হারালেও ৮০ রান যোগ করে। শেষ সেশনটাও ভালোভাবে সামাল দেয় তারা। টেলএন্ডাররা ছোট ছোট অবদান রাখায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২৭৩ রানে। মিরাজ পাঁচ এবং নাহিদ তিন উইকেট শিকার করেন।
৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। সাদমান ইসলাম অনিক ৪ রানে আউট হন। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারালেও মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক জুটি গড়ায় ১ উইকেটে ৫৭ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ২৫ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবে টাইগাররা। আজ নতুন শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। মুমিনুল ও জয় প্রথম ঘণ্টা পার করে দিতে পারলে হবে সোনালি সকাল। মিরাজের বিশ্বাস দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ক্রিকেট খেলে ম্যাচ জয়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারবেন তারা।