রেজিস্ট্রার পদ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে জামায়াত ট্যাগ দিলে হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শাখা ছাত্রদলসহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত হন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে উপাচার্যের কার্যালয়ে তথ্য সংগ্রহে ভিতরে থাকা সাংবাদিকদের বের করে দেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

আরো পড়ুন:

বার কাউন্সিলের অযৌক্তিক ফি নির্ধারণের প্রতিবাদে ইবিতে মানববন্ধন

সংস্কার চান আল ফিকহ্ বিভাগের শিক্ষার্থীরা

জানা যায়, বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। পরে দুপুর পৌঁনে ১টার দিকে জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড.

ফারুকুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এবং শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

এ সময় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সদস্য নুর উদ্দিন, রাফিজ আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, আলিনুর রহমান, উল্লাস মাহমুদ ও সাবিক জোয়ার্দারসহ অন্যান্য কর্মীরা ভিতরে থাকা সাংবাদিকদের বের করে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যে বাকবিতন্ডার শুরু হয়। একপর্যায়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলামকে ধাক্কা দেন উপ-উপাচার্য এবং প্রক্টরকে ‘জামায়াত’ ট্যাগ দিলে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। তবে উপ-উপাচার্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পরে উচ্চবাচ্য শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলেও ছাত্রদল কর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। এ নিয়ে সমন্বয়ক এসএম সুইট ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে ছাত্রদলের বাধা উপেক্ষা করে তারা ভিতরে ঢোকেন।

জানা যায়, গত সোমবার রেজিস্ট্রার পদে থাকা আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা এইচএম আলী হাসানকে সরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে এ পদে নিয়োগের দাবিতে উপাচার্যের সঙ্গে মতবিনিময় করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ছাত্রদল ও বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের পছন্দমতো এক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার পদে রাখতে চাওয়ায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রারকে তার পদ ছাড়তে কার্যালয়ে ভাঙচুর ও কয়েক দফায় হুমকি দেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এতে ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বেলা সাড়ে ৩টায় গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বে বাধা ও শিক্ষক হেনস্তার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।

গণমাধ্যমকর্মীদের বাধার বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, “আজকের এ ঘটনা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। দোষীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। এর মধ্যে বিচার না করলে শিক্ষার্থীরা অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।”

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, “আমাকে কেন জামায়াত বলবে? আমি ২০ বছর ধরে বিএনপি করে আসছি। দলের ক্রান্তিলগ্নে আমি সামনের সারিতে থেকে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছি।”

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “উপাচার্য কার্যালয়ে এক জুনিয়র শিক্ষক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। কিন্তু উপাচার্য এর কোন প্রতিবাদ করেনি। তিনি এর বিচার না করলে আমি বিষয়টি অন্যভাবে দেখবো। আমি প্রক্টরকে 'জামায়াত' বলিনি, অন্য কোন এক কর্মকর্তাকে এটা বলেছি।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “উপাচার্যের কার্যালয়ে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ বিষয় নিয়ে কোন তদন্ত হবে না। তবে শিক্ষকদের উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেব।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য ন ত কর ম র ছ ত রদল র কর মকর ত এ ঘটন ব এনপ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শোলাকুড়ায় সালিশি বৈঠকে পক্ষপাতিত্বের জেরে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং শোলাকুড়া বাজারের ১৮-২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। 

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফার সংঘর্ষ চলাকালে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বাংড়া ইউনিয়নের পীরবাড়িতে একই ইউনিয়নের মুলিয়া এবং সাকরাইল গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি মীমাংসা করতে সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে মুলিয়া গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ বিরোধ মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বৈঠক চলাকালে শুকুর মাহমুদের পক্ষপাতিত্বমূলক কথার জের ধরে পুনরায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা শুকুর মাহমুদ গুরুতর আহত হন। এ খবর তার নিজ গ্রাম সহদেবপুর পৌঁছালে তারাও এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এরপর ত্রিমুখী সংঘর্ষে সালিশি বৈঠকে আসা স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এছাড়াও কয়েক জন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। এ সময় শোলাকুড়া বাজারে হামলা চালিয়ে ১৮-২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং দোকানগুলোতে লুটপাট চালানো হয়।

এদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের তিন দিকে তিন গ্রামের বাসিন্দারা অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এসময় ওই মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়েন্ত্রণে আনে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে থানায় কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইকে ঘোষণা দিয়ে তিন গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ১৫ 
  • বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
  • ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
  • বাগবিতণ্ডা-হাতাহাতির একপর্যায়ে যুবদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা