বন্দর ডকইয়ার্ড-২ বিআইডব্লিউটিসি প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ
Published: 4th, March 2025 GMT
বন্দরে ২৬নং ওয়ার্ডের ডকইয়ার্ড-২ বিআইডব্লিউ টিসি প্রধান প্রকৌশলী আবু আল-আব্দুল হামিদ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগকারী শ্রমিকরা চাকুরী হারানোর ভয়ে নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। প্রকৌশলী আবু আল-আব্দুল হামিদ সৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন আমলে ঢাকেশ্বরী বিআইডব্লিউটিসির ডকইয়ার্ড-২ এ যোগদান করেন।
সরকারি চাকুরীর বিধি মোতাবেক যদিও দুই বছরের অধিক একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার নিয়ম নেই। তারপরও কোন খুঁটির জোরে তিনি দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে চাকুরী করছেন? তার সময়ে মাত্র ১টি ফেরী ও ১টি পল্টন-৭ মেরামত করা হয়েছে। তাও আবার পল্টন-৭ পাটুরিয়া ফেরীঘাট গিয়ে ভেঙ্গে গিয়েছে। এমনকি জেডিতে দীর্ঘদিন যাবত স্লীপওয়ে অব্যবস্থাপনা ও অকার্যকর করে রেখেছেন।
যার কারনে জাহাজ ওঠানামার সময় রশি ছিড়ে গিয়ে গাড়ির চাকা ভেঙে ক্ষয়ক্ষতিসহ মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটে। অথচ এই বিষয়ে আব্দুল হামিদ উর্ধতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে নিজের মনগড়া মতো কাজ করেন। এমনকি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রশাসনিক অফিস ভবন নির্মান করা হলেও সেখানে বসে অফিসের কোন কাজ পরিচালনা করেননা।
যেখানে নতুন প্রশাসনিক ভবনে অফিস পরিচালনা করা চেয়ারম্যানের নির্দেশ রয়েছে সেখানে নিয়মনীতির বালাই মানছেনা। অথচ নতুন ভবন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার কারনে ময়লা বাসা বেদে চুনা রং খসে পড়ছে। বর্তমানে কলমিলতা জাহাজটি মেরামত করতে গিয়ে তীরে উঠাইতে গিয়ে নিম্নমানের গাড়ির চাকা ব্যবহার করার ফলে ভেঙ্গে গিয়েছে।
কাউকে না জানিয়ে সম্পূর্ণ নিজ মনগড়া মতে জাহাজটি তীরে তুলছে। যেখানে ১০/১৫ জন্য শ্রমিকের প্রয়োজন সেখানে মাত্র ৩/৪ জন্য শ্রমিক দিয়ে জাহাজটি তীরে তুলতে গিয়ে দূর্ঘটনা ঘটে। তাছাড়া শ্লিপ ওয়ে পরিষ্কার করাতে বাজেট এনে কাজের বুয়াকে দিয়ে দুপুরের রান্না করে খায়। শ্রমিকদের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যাহা একজন উচ্চ পদস্থ অফিসারের নিকট মোটেও কাম্য নয়। তার ভয়ে শ্রমিকরা একটা সেকশন থেকে অন্য সেকশনে কাজ করতে গিয়ে অর্ধাঙ্গ পুড়ে যায়।
শুধু তাই নয় শ্রমিকরা আব্দুল হামিদের কথামত কাজ করতে না চাইলে তাদেরকে অন্যত্র বদলী করার হুমকি দেয়। শ্রমিকদের অভিযোগ অন্যান্য ডকইয়ার্ডে ওভারটাইম চালু থাকলেও ২নং ডকইয়ার্ডে গত দুই বছরের অধিক সময় কোন ওভারটাইম নেই। কোন কিছু চাইতে গেলেই টিডির উপর দোষ চাপিয়ে দেন। বলেন টিডি আমাদের শোষন করে কিছুই দিচ্ছে না। এমনকি প্রয়োজনীয় কোন কথা বলতে গেলে টিডিকে দায়ী করেন।
বর্তমানে সন্ধা মালতি জাহাজের শুধু ইঞ্জিন ফিটিংসের জন্য ডকইয়ার্ডে আছে। অথচ এক মাসের কাজ দুই বছর লাগিয়ে দিয়েছে। শ্রমিকরা কিছু বলতে গেলেই সম্পূর্ণ দোষ টিডির উপর চাপিয়ে দেন। এমন হাজারো অভিযোগ থাকা সত্বেও তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাকে অন্যত্র বদলী করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শ্রমিক সহ অন্যান্য ষ্টাফগন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রকৌশলী আবু আল-আব্দুল হামিদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। এবং শ্রমিকদের অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ দ ই বছর
এছাড়াও পড়ুন:
ফেরি সার্ভিস বন্ধের গুঞ্জনে ক্ষুব্ধ সন্দ্বীপবাসী, বন্ধ করা হবে না বলে আশ্বাস উপদেষ্টার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে চালু হওয়া ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। তারা বলেন, একটি সিন্ডিকেট আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও অন্যান্য সময়ে ফেরি চালু রাখার দাবি জানান তারা। এছাড়া সিট্রাক দিতে মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ তা অমান্য করে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সন্দ্বীপবাসী মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
এদিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে কথা হয়েছে। ফেরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেরি তুলে নেওয়ার আগেই বিকল্প সিট্রাক দেওয়া হবে। পন্টুনও কোথাও সরানো হচ্ছে না।’
গত ২৪ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ সমুদ্র পথে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছয়জন উপদেষ্টা ও দুইজন বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখে প্রধান উপদেষ্টাও। এতে উচ্ছ্বসিত হন যাতায়াতে দীর্ঘদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। গত ২০ এপ্রিল এই রুটে ফেরি সার্ভিস সাময়িক বন্ধের একটি আদেশ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধের কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সামুদ্রিক এই রুটে ফেরিটি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স›দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর থেকে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা, এই রুটে চলাচলরত কপোতাক্ষ ফেরি ও পন্টুন সরিয়ে না নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যদি ফেরি বন্ধ করে, আমাদের লাশের উপর দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমরা ফেরি এখান থেকে যেতে দেবো না। ফেরি এখানে থাকবে। প্রতিকূল পরিবেশে বন্ধ রাখা হলেও অনুকূল পরিবেশে যেন ফেরি চলাচল চালু থাকে।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘আগে লাল বোটের মাধ্যমে যাতায়াতে অনেক লোক হতাহত হয়েছেন। আমরা চাই নিরাপদ যাত্রীবাহন ফেরি যেন চালু থাকে। একটি সিন্ডিকেট আমাদের ফেরি বন্ধের চক্রান্ত চালাচ্ছে। যেটা আমরা কখনও হতে দেবো না। আমরা চাই চক্রান্ত মুক্ত করে যাতায়াতের সুব্যবস্থা যেন অব্যাহত থাকে।’