ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামানোকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক চালককে লাঠিপেটা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ইউএনও’র বিচার দাবি করেন তারা। এ সময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তির শিকার হয় জনসাধারণ।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ইউএনও আতিকুল ইসলাম শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মোড়ে আসেন। সেখানে দেখতে পান মুক্তাগাছা থেকে ঢাকাগামী ইসলাম পরিবহনের বাস নির্ধারিত স্টেশনের বাইরে মহাসড়কের পাশে দাঁড় করানোয় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ইউএনও তখন দ্রুত গাড়িটি সরাতে বলেন। এ নিয়ে চালকের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ইউএনওর সঙ্গে থাকা আনসার সদস্যরা বাসটির চালক বুলু মিয়াকে লাঠিপেটা করেন। 

তবে বাসচালক বুলুর দাবি, তিনি স্থানীয় ভাবকির মোড় থেকে বাসটি চালিয়ে পৌরসভার পাশে যাওয়া মাত্র ইউএনও বাসে উঠে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে সহকর্মীরা হাসপাতালে নেয়। তিনি বলেন, সরকারের বড় একজন কর্মকর্তা, এভাবে আমাকে মারবেন তা কখনও ভাবতে পারিনি। আমি এর বিচার চাই।  

ওই ঘটনার আধা ঘণ্টা পর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে বড়হিস্যা বাজার পর্যন্ত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে ইসলাম পরিবহনের বাস রেখে অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পরে মুক্তাগাছা থানার ওসি কামাল হোসেন ও ময়মনসিংহ থেকে সেনা সদস্যরা গিয়ে স্থানীয় পরিবহন সেক্টরের নেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

এ বিষয়ে ওসি কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পুরান বাসস্ট্যান্ডের ওই স্থানে ইসলাম পরিবহন গাড়ি রেখে যাত্রী উঠানো-নামানো করায় শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে সব পরিবহনকে নির্ধারিত টার্মিনালে বাস রাখার বিষয়ে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হলেও ইসলাম পরিবহন এটি মানছে না। সকালে বিষয়টি ইউএনওর নজরে আসলে তিনি গাড়ি সরিয়ে নিতে বলেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে লাটিচার্জ করে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। সমাধানের আশ্বাসে পরে তারা অবরোধ তুলেছে। 

ইউএনও আতিকুল ইসলাম বলেন, যত্রতত্র গাড়ি রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করায় যানজটে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয় মুক্তাগাছাবাসীকে। ইসলাম পরিবহনকে টার্মিনালে বাস রাখতে বলা হলেও তারা যত্রযত্র গাড়ি রেখে যানজটের সৃষ্টি করে। একাধিক অভিযানের পরও পরিবহনটি টার্মিনালে না যাওয়ার জন্য টালবাহানা করে আসছে। সকালে সড়কে বাস রেখে যানজট সৃষ্টি করায় গাড়ি সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু বিষয়টি অন্যদিকে ঘুরাতে চালককে মারধরের  অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধের ‘নাটক সাজিয়েছে’ তারা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউএনও ময়মনস হ অবর ধ য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে পুরস্কার বিতরণে ক্ষোভ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পাশে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও ইউএনও। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগে নেতার সঙ্গে ডিসি ও ইউএনও একই মঞ্চে বসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতার নাম হাফিজুর রহমান। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। গত শনিবার বিকেলে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউএনও নূর-ই আলম সিদ্দিকী। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গতকাল রোববার। আওয়ামী লীগ নেতাকে পাশে নিয়ে তাদের পুরস্কার বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফুর সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে ছিল। আন্দোলন চলাকালে মানুষের ওপর 
নির্বিচারে গুলি করেছে। নিষিদ্ধ না হলেও সর্বমহলে তাদের অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে। কীভাবে সেই দলের স্থানীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকে নিয়ে পাশে বসেন ডিসি ও ইউএনও? এতে বোঝা যায়, এখনও 
সেই পিছুটান রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষের সাবধান হওয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলজার হোসেনের ভাষ্য, তিনি জানতেন হাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা। তিনি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ হওয়ায় তাঁকে অতিথি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, মঞ্চে পাশে বসা হাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতা, তা জানতেন না তিনি। জানলে তিনি অনুষ্ঠানেই যেতেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামানোয় চালককে ‘লাঠিপেটা’ ইউএনওর
  • ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় ইটভাটা মালিক সমিতির বিক্ষোভ
  • ইউএনওর কক্ষে জামায়াতের ৪ নেতাকে পেটানোর অভিযোগ বিএনপির
  • বাসচালককে পেটানোর অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে, মহাসড়কে বিক্ষোভ
  • ইউএনওর কক্ষে ঢুকে জামায়াত নেতাদের বেধড়ক মারলেন বিএনপি নেতারা, ইউএনওকে হুমকি
  • ইউএনওর সামনে ৪ জামায়াত নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতারা
  • টিসিবির কার্ড বিতরণ নিয়ে সন্দেহ, ঘেরাও-অবরোধ
  • মনিরামপুরে টিসিবির পণ্যের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ইউএনওর অপসারণ দাবি
  • আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে পুরস্কার বিতরণে ক্ষোভ