সামুদ্রিক প্রাণীদের অদ্ভুত আচরণ কি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কতা
Published: 4th, March 2025 GMT
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণীর অদ্ভুত আচরণ শনাক্ত করা হয়েছে। জাপানে ওরফিশের ভেসে আসা, বিভিন্ন এলাকায় তিমির আটকে পড়া, সমুদ্রতীরের কাছে অ্যাংলারফিশের উপস্থিতির মতো অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা গেছে। আর তাই এসব ঘটনা সম্ভাব্য কোনো পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। সামুদ্রিক প্রাণীদের এসব আচরণের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হলেও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র ও সম্ভাব্য দুর্যোগের সঙ্গে এসব প্রাকৃতিক ঘটনার সংযোগ আছে কি না, তা নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ওরফিশ, তিমি ও অ্যাংলারফিশের মতো প্রাণীরা গভীর সমুদ্রের বাস করে। এসব প্রাণী যখন তীরের কাছে চলে আসছে তখন জলবায়ু পরিবর্তন ও উষ্ণায়নের প্রভাব পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসব প্রাণীর আবাসে ব্যাপক পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। রহস্যময় ওরফিশের হঠাৎ তীরের কাছে আসার ঘটনা সবচেয়ে বেশি চমক তৈরি করেছে। এই মাছকে পৌরাণিক কাহিনিতে কেয়ামতে মাছ বা ডুমসডে ফিশ নাম দেওয়া হয়েছে। গভীর সমুদ্রের এই মাছ খুব কমই সৈকতের কাছাকাছি দেখা যায়। এসব মাছের সৈকতের কাছে আসাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে মনে করেন অনেকেই। যদিও এমন আচরণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় তিমির উপস্থিতি ও অগভীর জলে অ্যাংলারফিশের উপস্থিতি অনেক প্রশ্ন তুলছে। এসব আচরণ কি কাকতালীয় নাকি কোনো পরিবেশগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আরও পড়ুনযে মাছ হাঁটতে পারে২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বিভিন্ন এলাকায় তিমি আটকা পড়ার ঘটনা যদিও অনেক পুরোনো বিষয় তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি তাসমানিয়ান সমুদ্রসৈকতে ১৫০টিরও বেশি ফলস কিলার তিমি আটকা পড়েছিল, পরে বেশির ভাগই তিমিই মারা যায়। গভীর সমুদ্রে বড় বড় বাণিজ্যিক জাহাজের উপস্থিতি তিমির আবাস ও চলার পথে বাধা তৈরি করছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন তীরবর্তী এলাকায় অ্যাংলারফিশের হঠাৎ উপস্থিতি বেড়ে গেছে। আলো উৎপন্নকারী গভীর সমুদ্রের এই প্রাণীটিকে সম্প্রতি সমুদ্রতটের দিকে বেশি করে আসতে দেখা গেছে। গভীর সমুদ্রের পরিবেশ ও তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারণে এসব মাছ তটের দিকে চলে আসছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুনহাঙরসহ সামুদ্রিক প্রাণীর সংখ্যা দ্রুত কমছে, কারণ কী২১ ডিসেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র উপস থ ত পর ব শ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিবির চাকরিতে ফিরছেন না আম্পায়ার সৈকত
মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচ কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিসিবির চাকরি ছেড়েছেন আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। ২১ এপ্রিল বিসিবিতে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। দেশের প্রথম এলিট আম্পায়ার সৈকত এ সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন বলে জানা গেছে।
আইসিসি ও বিসিবির এলিট আম্পায়ার সৈকতের মাসিক বেতন ছিল দুই লাখ টাকা। ম্যাচ ফিতেও শীর্ষে ছিলেন তিনি। দেশের ক্রিকেট বোর্ড সর্বোচ্চ সম্মান দিলেও আম্পায়ার্স বিভাগের একটি অনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি তিনি।
১১ এপ্রিল আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে তাওহীদ হৃদয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী আচরণে ক্ষুন্ন হয়েছিলেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। দুই ফিল্ড আম্পায়ার সৈকত ও তানভীর আহমেদের রিপোর্টের ভিত্তিতে হৃদয়কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও তিনটি ডি মেরিট পয়েন্টের শাস্তি হিসেবে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা নির্ধারণ করেন ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশিদ রাহুল।
শুনানিতে গিয়েও খারাপ আচরণ করা তাওহীদ হৃদয় পরবর্তীতে ভুল স্বীকার করে আর্থিক জরিমানা থেকে মাফ পান। যদিও সেদিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে আম্পায়ারদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং পরোক্ষভাবে ‘গোমর ফাঁসের’ হুমকি দিয়ে নতুন করে আরও চারটি ডি মেরিট পয়েন্ট পান তিনি। সাতটি ডি মেরিট পয়েন্টের শাস্তি হিসেবে দুই থেকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হৃদয়।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটি দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয় হৃদয়কে। টেকনিক্যাল কমিটিকে উপেক্ষা করে মোহামেডানের চাপের কথা বলে আম্পায়ার্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু এক ম্যাচ শাস্তি স্থগিত করেন। যেটা মারাত্মকভাবে সম্মানহানি করেছে বলে মনে করেন এলিট আম্পায়ার সৈকত ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যালি কমিটির চেয়ারম্যান এনামুল হক মনি। প্রতিবাদে সৈকত বিসিবির চুক্তি থেকে পদত্যাগ করেন। মনিও টেকনিক্যাল কমিটি ছেড়ে দেন।
বুধবার ইফতেখার মিঠু জানান, সৈকতকে বুঝিয়ে চাকরিতে ফেরাবেন। এদনি বিকেলে বিসিবির এক সভা শেষে মিঠু সংবাদ সম্মেলনে জানান, সৈকতের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছেন তারা। তবে শেষ খবর জানা পর্যন্ত সৈকত পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করবেন না। আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরবর্তীতে নতুন চুক্তি হতে পারে সৈকতের। বর্তমান মেয়াদে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে না ফেরার বিষয়ে অনড় তিনি।
এক হৃদয়কে নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে আম্পায়ার্স ও ম্যাচ রেফরিদের মধ্যে বিদ্রোহ বাঁধিয়েছে বিসিবি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মোহামেডান অধিনায়ককে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধের শাস্তি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত বুধবারের সভায় বহাল করা হয়েছে। মিঠু জানিয়েছেন, সুপার লিগে আরও এক ম্যাচ খেলতে পারবেন না হৃদয়। মোহামেডানের ম্যাচ বাকি আছে দুটি। এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করায় বুধবার গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার।