ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কিওরি পেক্রা উও’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী
Published: 4th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের প্রথম ম্রো ভাষার চলচ্চিত্র ‘কিওরি পেক্রা উও’ যার ইংরেজি অনুবাদ ‘ডিয়ার মাদার’;এবার পা রাখতে চলেছে বিশ্ববিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আগামীকাল ৫ মার্চ ক্যামব্রিজ স্থানীয় সময় বিকেল ২টা ৩০ এবং বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ইন্ডিজিনিয়াস স্টাডিজ গ্রুপ ক্যাম্ব্রিজের আয়োজনে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ৬৭ মিনিটের চলচ্চিত্রটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এর যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরার মতো মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়েছে।
সিনেমার পরিচালক এসকে শুভ সাদিক শুরু থেকেই চলচ্চিত্রটিকে শুধু একটি সৃষ্টিশীল প্রয়াস নয়, বরং একটি আন্দোলন হিসেবে দেখেছেন। তিনি বলেন, "এটি শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়; এটি একপ্রকার ঘোষণাপত্র, একটি প্রতিরোধ, একটি প্রমাণ যে সিনেমা কোনো কর্পোরেশন বা বিনিয়োগকারীদের সম্পত্তি নয় এটি তাদের, যারা সাহস করে নিজেদের গল্প বলে। আমরা অতি সীমিত বাজেটে কাজ করেছি, কিন্তু প্রমাণ করেছি যে সিনেমার সফলতা টাকার অঙ্কে নয়, বরং এর ক্ষমতায় এবং হারিয়ে যেতে বসা কণ্ঠগুলোকে সংরক্ষণ করার। এখন প্রযুক্তি আমাদের হাতে; আমাদের আর প্রচলিত সিনেমার ছক মেনে চলতে হবে না। সময় এসেছে নতুন আখ্যান খোঁজার, বাঁধা ধরা কৌশল থেকে বেরিয়ে আসার, এবং সিনেমাকে শিল্প হিসেবে পুনরুদ্ধার করার।”
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র চলচ চ ত র প রদর শ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।