ফতুল্লায় দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় শরীফ মোল্লা নামক এক ইট বালুর ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে সন্ত্রাসীরা। পরে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ওই ব্যবসায়িকে উদ্ধার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে। 

জানা গেছে, সোমবার রাত আনুমানিক দশটার সময় ব্যবসায়ী শরীফ মোল্লাকে দূর্র্ধষ মাদক কারবারী এবং সন্ত্রাসী উৎস তার দলবল নিয়ে অস্ত্রের মুখে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ফতুল্লার ইসদাইর কাপুইরাপট্টি এলাকায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরীর পেছনে নির্জন মাঠে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। 

শরীফ মোল্লাকে দিয়ে তার পরিবারের কাছে ফোন করিয়ে এই টাকা দাবি করে অপগরণকারীরা। তখন শরীফ মোল্লার স্ত্রীর বড় ভাই কামরুল মেম্বার বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শরীফ মোল্লাকে উদ্ধার করে। এ সময় বহু লোকের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। 

ভূক্তভোগী শরীফ মোল্লা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদক ব্যবসায়ী উৎস তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করায় দুইদিন আগে উৎস এসে তার ইট বালু পরিবহনের নসিমন গাড়িটি নিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি গাড়িটি উদ্ধার করেন।

এতে আরো ক্ষুব্দ হয়ে উৎস ও তার বাহিনী তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে টাকা দাবি করে এবং মারধোর করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তিনি প্রানে বেঁেচ যান। কিন্তু এখন তিনি তার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, একজন শীর্ষ যুবদল নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে নতুন করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী উৎস। আগে সে আওয়ামী লীগের এক নেতার নাম ভাঙ্গাতো। এই সন্ত্রাসী প্রতিদিনই ফতুল্লা থানার গাবতলী এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। গত এক সপ্তাহে তিনটি বাড়িতে গিয়ে চাঁদার দাবিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। রাস্তা ঘাটে প্রকাশ্যে যাকে তাকে মারধর করছে। মাসদাইর কাবরস্থান থেকে শুরু করে পঞ্চবটি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দোকানপাটে চাঁদাবাজী করছে।

ফলে ওই এলাকার মানুষ এই সন্ত্রাসীর অত্যাচারে একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গাবতলী এলাকায় কামরুল মেম্বার, মনির হোসেন, জামাই কামরুল, তুহিন সহ আরো অনেকের বাড়িতে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করেছে। এতে গাবতলী এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত এই উৎস নারায়ণগঞ্জের একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে অপর মাদক ব্যবসায়ী পেটকাটা রকির সহযোগী। বিগত প্রায় এক যুগ ধরে এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এবং বহুবার মাদক সহ গ্রেফতারও হয়েছেন। কয়েক মাস আগে ৫০ কেজি গাজা সহ কুমিল্লায় গ্রেফতার হয়েছিলো এই উৎস। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসে এখন সে যুবদলের পরিচয় দিচ্ছে।

যদিও এই সন্ত্রাসী কোনো দলের কোনো পদে নেই। দিনের পর দিন ত্রাস সৃষ্টি করে চলেছে। ফলে এখনই আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এই সন্ত্রাসীবাহিনী এলাকায় আরো অঘটন ঘটাবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ অপহরণ এল ক ব স ব যবস য় এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দিন পর মুক্তি পেলেন বান্দরবানে অপহৃত নির্মাণশ্রমিক

অপহরণের পাঁচ দিন পর বান্দরবানে রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজের মাঝি (তত্ত্বাবধায়ক) মো. বাবুল মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে সদর উপজেলার সুয়ালকের লাম্বা রাস্তা নামের এলাকায় ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তাঁকে ১৭ এপ্রিল রাতে একই স্থান থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। কারা, কী কারণে তাঁকে অপহরণ করেছে, বিষয়টি জানার জন্য মো. বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

রেডক্রিসেন্টের হাসপাতাল নির্মাণকাজের ঠিকাদার জসীম উদ্দিন বাবুলকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় মো. বাবুলকে অপহরণকারীরা সুয়ালক মাঝের পাড়া রাস্তার মাথায় ছেড়ে দিয়ে যায়। তাঁকে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সুয়ালক মাঝের পাড়া রাস্তার মাথা এলাকাটি বান্দরবান জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ওই স্থানের এক কিলোমিটারের মধ্যে সুয়ালক বাজারের পাশে আনসার ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরের অবস্থান।

মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নির্মাণকাজের ঠিকাদার জসীম উদ্দিন বলেছেন, মুক্তিপণের জন্য কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে থানায় অপহরণ মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। কারা অপহরণের সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে জানার জন্য পুলিশ বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় সুয়ালক লাম্বারাস্তা এলাকায় মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখান থেকে নির্মাণকাজ দেখভালকারী মো. বাবুলকে অপহরণ করা হয়েছিল। পাঁচ দিন পর অপহরণকারীরা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, মো. বাবুলকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছ। তাঁর কাছ থেকে অপহরণকারীদের ব্যাপারে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তথ্য পাওয়া গেলে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপহৃত ৩ শ্রীলঙ্কার নাগরিককে উদ্ধার, আটক ৪
  • ‘হঠাৎ ফোন দিয়ে দিব্যি বলে, মা আমি রাঙামাটি আছি’
  • ডাকাতের ভয়ে ফুটবলার লুকালেন খাটের নিচে, ধরে নিয়ে গেল স্ত্রী ও সন্তানকে
  • অপহৃত চবির ৫ শিক্ষার্থী মুক্ত
  • অপহরণের ৯ দিন পর খাগড়াছড়ির ৫ শিক্ষার্থী মুক্ত
  • আট দিন পর চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থী উদ্ধার
  • খাগড়াছড়িতে অপহৃত পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী মুক্ত: পিসিপি
  • ব্যবসায়িক আমন্ত্রণ করে অপহরণ, সেই ৩ শ্রীলঙ্কান নাগরিক উদ্ধার
  • অপহরণের শিকার তিন শ্রীলঙ্কান বাগেরহাট থেকে উদ্ধার
  • ৫ দিন পর মুক্তি পেলেন বান্দরবানে অপহৃত নির্মাণশ্রমিক