ডেলিভারি সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন, তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 4th, March 2025 GMT
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক প্রসূতির প্রসবকালে নবজাতকের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, গর্ভে থাকতেই নবজাতক মারা গিয়েছিল। পরে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পেট থেকে নবজাতকের মাথা বের করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালের লেবার গাইনী ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় জ্যেষ্ঠ গাইনী চিকিসক ডা.
ভুক্তভোগী নারী পাবনার আতাইকুলা ইউনিয়নের আতাইকুলা গ্রামের দুবাই প্রবাসী রমজান খাঁর স্ত্রী শিউলী খাতুন (৩৫)। দুই সন্তানের জননী শিউলী তৃতীয় সন্তান গর্ভে ধারণ করেছিলেন।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৮
আদ্ দ্বীন সকিনা হাসপাতালে বিনামূল্যে হেলিকপ্টারে রোগী পরিবহন
হাসপাতাল ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গর্ভবতী মা প্রথম থেকে পাবনার গাইনী চিকিৎসক শাহীন ফেরদৌস শানুর নিয়মিত রোগী ছিলেন। হঠাৎ করে মঙ্গলবার ভোররাতে প্রসব ব্যথা উঠলে পরিবারের সদস্যরা তাকে সেহেরীর পরপরই ডা. শানুর শহরের বাসার চেম্বারে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক দেখে অবস্থা জটিল মনে করে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তির পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দীপা মর্জিনা রোগীর প্রাথমিক পরীক্ষা করে পেটের বাচ্চা মৃত বলে জানান। তবে পরিবারের সদস্যদের দাবি, বাচ্চা মৃত সেটি পরে জানতে পেরেছেন তারা। পরে হাসপাতালের ধাত্রী নরমাল ডেলিভারি করানোর সময় নবজাতকের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেটের ভেতরে রয়ে যায়। তারপর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পেট থেকে বিচ্চিন্ন মাথা বের করা হয়৷
ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রফিকুল হাসান বলেন, রোগীর অবস্থা এখন ভালো আছে। গাইনী চিকিসক নার্গিস সুলতানাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন। এরপরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী পরিচালক আরো বলেন, ‘‘রাতে বা সকালে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ডেলিভারির কাজটি করা উচিৎ ছিল। এ ঘটনায় চিকৎসকসহ যারা ছিলেন তাদের আমি ডেকে পাঠিয়েছি। সকলের সঙ্গে কথা বলে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা কী হয়েছিল।’’
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. জাহিদুল ইসলাম ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. ফাতেমা মাসুর। ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রধান গাইনী বিশেজ্ঞ চিকিসক ডা. নার্গিস সুলতানা বলেন, এই নারীর পেটে যে বাচ্চা ছিল সেটি মৃত অবস্থায় ছিল। মৃত বাচ্চা নিয়েই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পেটের বাচ্চার বয়সও পরিপূর্ণ ছিল না। সবে মাত্র সাত মাসে পড়েছে। সেই সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেই মায়ের পেটের ও জরায়ুর অবস্থা দেখে বাচ্চা মৃত বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের। মায়ের পরিপূর্ণ সেবা প্রদানসহ তার জন্য কী কী করণীয় সেটির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ডা. নার্গিস সুলতানা আরো জানান, পেটে থাকা মৃত শিশুটির বয়স কম হওয়াতে তার শরীরের কোনো কিছুই শক্ত ছিল না। এমনকি ওই শিশুটির দেহের মাথার অংশ পেটের উপরে ও পা নিচের দিকে ছিল। নরমাল প্রসব করানোর সময় সেবিকারা জোরে টান দিলে ঘাড় থেকে মাথা ছিঁড়ে যায়। পরে সিজার করে তার পেট থেকে মৃত শিশুর অবশিষ্ট অংশ মাথা বের করা হয়েছে।
এ ঘটনা কেন হয়েছে, কোনো অসাবধানতা ছিল কি-না, সেটি তদন্ত করে দেখছেন বলে জানান তিনি।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র সদস চ ক ৎসক অবস থ এ ঘটন সদস য ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ
ছবি: প্রথম আলো