ফাইনালে উঠতে ভারতকে ২৬৫ রান করতে হবে
Published: 4th, March 2025 GMT
উইকেট নতুন, খটখটে শুকনো। মাইকেল আথারটন পিচ রিপোর্টে বলেছেন, পিচে বল ধরবে, বাঁক নেবে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টে এসব জেনেবুঝেই একাদশ পাল্টায়নি। তিন স্পিনারকে রেখে টস হেরে নেমেছে ফিল্ডিংয়ে এবং ষষ্ঠ ওভারেই আক্রমণে স্পিনার। তখনই বোঝা গিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আজ প্রথম সেমিফাইনালে দুবাই স্টেডিয়ামের বাইশ গজে লড়াইটা আসলে ভারতের স্পিনার বনাম অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের।
সে লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা জিতলেন না হারলেন, তা বলা যাবে ম্যাচ শেষে। আপাতত এটুকু বলা যায়, তিন শ এর ওপাশে যাওয়ার ভালো একটি ভিত পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু মাঝের ওভার গুলোয় সেটি নষ্ট করেছে তাঁরা নিজেরাই।শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি। ৪৯.
দুবাইয়ের এই মাঠে ওয়ানডেতে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ২২৯ দেখে আপনি বলতেই পারেন, একদম খারাপও করেনি অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনাল ম্যাচ বলে এ রান তাড়া করার একটা চাপ তো থাকবেই। তবে ভারতের লম্বা ব্যাটিং লাইন আপে তাকিয়ে এটাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার, দুবাইয়ে সর্বোচ্চ ২৮৪ তাড়া করে জয়ের নজির আছে। তাই একেবারে কঠিন কিছুও না।
কিন্তু কঠিন হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল ভারতের জন্য। ২২.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১১০। তখন অস্ট্রেলিয়াও হয়তো তিন শ পেরোনোর আশা করছিল। কিন্তু সেখান থেকে ৪০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৬ উইকেটে ২১৩। শুধু স্পিনার নয়, পেসাররাও ভারতকে এই মাঝে ওভারগুলোয় ফিরিয়েছেন খেলায়। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ আগেভাগেই এমন কিছু আন্দাজও করেছিলেন। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, মাঝের ওভারগুলোয় ভালো ব্যাট করতে হবে এবং সেটা যে স্পিনারদের বিপক্ষে তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু ম্যাচে এসে কি দেখা গেল? ২৩ থেকে ২৭ ওভারের মধ্যে ছোট্ট এক ছন্দপতন—২৩তম ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনে এলবিডব্লু মারনাস লাবুশেন, তারপর ২৭তম ওভারে সেই জাদেজার বলেই শর্ট কাভারে বিরাট কোহলিকে ক্যাচ দেন জস ইংলিশ। বল বাঁক নেওয়ার পাশাপাশি একটু থেমে আসায় লাবুশেন ও ইংলিশের খেলতে সমস্যা হচ্ছিল।
ব্যতিক্রম ছিলেন একজন। অধিনায়ক স্মিথ নিজে। তাঁর ক্রিজে আসার পটভূমিটাও একটু বলতে হবে। ম্যাথু শর্ট চোটে পড়ায় বিগ ব্যাশ ক্যারিয়ারে মাত্র একবার ওপেন করা কুপার কনোলিকে ওপেনিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ৯ বলে ০ রানে তাঁকে ফেরান মোহাম্মদ শামি ইনিংসের তৃতীয় ওভারে। স্মিথ এরপর আসেন ক্রিজে। অপর প্রান্তে ভারতের ‘মাথাব্যথা’ ট্রাভিস হেড নিজের মতো খেলতে শুরু করায় তাঁদের জুটিটি ৩২ বলে ৫০ করে ফেলে, যেখানে হেডের একার অবদানই ২৪ বলে ৩৮। আর স্মিথের ৮ বলে ৯—অর্থাৎ, হেড রান তুলতে থাকায় তাঁকে খেলাচ্ছিলেন স্মিথ। নবম ওভারে বরুণ চক্রবর্তী হেডকে (৩৩ বলে ৩৯) ফেরানোর পর শুরু হয় আসল পরীক্ষা—সেটা স্মিথের ইনিংস টেনে নেওয়ার পরীক্ষা। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক সে পরীক্ষায় একদম সঠিক সময়ে জ্বলে উঠে এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নিলেও আউট হয়েছেন বড় অসময়ে। লাবুশেনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৬, ইংলিশের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩৬ ও অ্যালেক্স ক্যারির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়া স্মিথ ৩৭তম ওভারে শামির ফুল টস বলে বোল্ড হন!
৯৬ বলে ৭৩ রান করা স্মিথ আউট হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৫ উইকেটে ১৯৮। অর্থাৎ, তিন শ পেরোনার সুযোগ তখনো ছিল। কিন্তু পরের ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (৫ বলে ৭) অক্ষর প্যাটেল বোল্ড করার পর শুরু হয় ক্যারির লড়াই। দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি পুরো ৫০ ওভার খেলার চ্যালেঞ্জ নিতে হয় অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু ক্যারি তা পারেননি। ৪৭.১ ওভারে ৫৭ বলে তাঁর ৬১ রানের ইনিংসটি শেষ হয় শ্রেয়াস আইয়ারের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে।
৪০ ওভার শেষে পরবর্তী ৫৭ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে উইকেট হারিয়ে ৫১ রান তুলতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট নেন শামি। ২টি করে উইকেট বরুণ ও জাদেজার। দুবাইয়ের এ মাঠে সর্বোচ্চ ২৪১ রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। সেটা এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই ভারতের বিপক্ষে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
ফাইনালে উঠতে ভারতকে ২৬৫ রান করতে হবে
উইকেট নতুন, খটখটে শুকনো। মাইকেল আথারটন পিচ রিপোর্টে বলেছেন, পিচে বল ধরবে, বাঁক নেবে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টে এসব জেনেবুঝেই একাদশ পাল্টায়নি। তিন স্পিনারকে রেখে টস হেরে নেমেছে ফিল্ডিংয়ে এবং ষষ্ঠ ওভারেই আক্রমণে স্পিনার। তখনই বোঝা গিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আজ প্রথম সেমিফাইনালে দুবাই স্টেডিয়ামের বাইশ গজে লড়াইটা আসলে ভারতের স্পিনার বনাম অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের।
সে লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা জিতলেন না হারলেন, তা বলা যাবে ম্যাচ শেষে। আপাতত এটুকু বলা যায়, তিন শ এর ওপাশে যাওয়ার ভালো একটি ভিত পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু মাঝের ওভার গুলোয় সেটি নষ্ট করেছে তাঁরা নিজেরাই।শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি। ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া।
দুবাইয়ের এই মাঠে ওয়ানডেতে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ২২৯ দেখে আপনি বলতেই পারেন, একদম খারাপও করেনি অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনাল ম্যাচ বলে এ রান তাড়া করার একটা চাপ তো থাকবেই। তবে ভারতের লম্বা ব্যাটিং লাইন আপে তাকিয়ে এটাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার, দুবাইয়ে সর্বোচ্চ ২৮৪ তাড়া করে জয়ের নজির আছে। তাই একেবারে কঠিন কিছুও না।
কিন্তু কঠিন হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল ভারতের জন্য। ২২.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১১০। তখন অস্ট্রেলিয়াও হয়তো তিন শ পেরোনোর আশা করছিল। কিন্তু সেখান থেকে ৪০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৬ উইকেটে ২১৩। শুধু স্পিনার নয়, পেসাররাও ভারতকে এই মাঝে ওভারগুলোয় ফিরিয়েছেন খেলায়। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ আগেভাগেই এমন কিছু আন্দাজও করেছিলেন। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, মাঝের ওভারগুলোয় ভালো ব্যাট করতে হবে এবং সেটা যে স্পিনারদের বিপক্ষে তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু ম্যাচে এসে কি দেখা গেল? ২৩ থেকে ২৭ ওভারের মধ্যে ছোট্ট এক ছন্দপতন—২৩তম ওভারে রবীন্দ্র জাদেজার স্পিনে এলবিডব্লু মারনাস লাবুশেন, তারপর ২৭তম ওভারে সেই জাদেজার বলেই শর্ট কাভারে বিরাট কোহলিকে ক্যাচ দেন জস ইংলিশ। বল বাঁক নেওয়ার পাশাপাশি একটু থেমে আসায় লাবুশেন ও ইংলিশের খেলতে সমস্যা হচ্ছিল।
ব্যতিক্রম ছিলেন একজন। অধিনায়ক স্মিথ নিজে। তাঁর ক্রিজে আসার পটভূমিটাও একটু বলতে হবে। ম্যাথু শর্ট চোটে পড়ায় বিগ ব্যাশ ক্যারিয়ারে মাত্র একবার ওপেন করা কুপার কনোলিকে ওপেনিংয়ে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। ৯ বলে ০ রানে তাঁকে ফেরান মোহাম্মদ শামি ইনিংসের তৃতীয় ওভারে। স্মিথ এরপর আসেন ক্রিজে। অপর প্রান্তে ভারতের ‘মাথাব্যথা’ ট্রাভিস হেড নিজের মতো খেলতে শুরু করায় তাঁদের জুটিটি ৩২ বলে ৫০ করে ফেলে, যেখানে হেডের একার অবদানই ২৪ বলে ৩৮। আর স্মিথের ৮ বলে ৯—অর্থাৎ, হেড রান তুলতে থাকায় তাঁকে খেলাচ্ছিলেন স্মিথ। নবম ওভারে বরুণ চক্রবর্তী হেডকে (৩৩ বলে ৩৯) ফেরানোর পর শুরু হয় আসল পরীক্ষা—সেটা স্মিথের ইনিংস টেনে নেওয়ার পরীক্ষা। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক সে পরীক্ষায় একদম সঠিক সময়ে জ্বলে উঠে এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নিলেও আউট হয়েছেন বড় অসময়ে। লাবুশেনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৫৬, ইংলিশের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩৬ ও অ্যালেক্স ক্যারির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়া স্মিথ ৩৭তম ওভারে শামির ফুল টস বলে বোল্ড হন!
৯৬ বলে ৭৩ রান করা স্মিথ আউট হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৫ উইকেটে ১৯৮। অর্থাৎ, তিন শ পেরোনার সুযোগ তখনো ছিল। কিন্তু পরের ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (৫ বলে ৭) অক্ষর প্যাটেল বোল্ড করার পর শুরু হয় ক্যারির লড়াই। দ্রুত রান তোলার পাশাপাশি পুরো ৫০ ওভার খেলার চ্যালেঞ্জ নিতে হয় অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটসম্যানকে। কিন্তু ক্যারি তা পারেননি। ৪৭.১ ওভারে ৫৭ বলে তাঁর ৬১ রানের ইনিংসটি শেষ হয় শ্রেয়াস আইয়ারের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে।
৪০ ওভার শেষে পরবর্তী ৫৭ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে উইকেট হারিয়ে ৫১ রান তুলতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট নেন শামি। ২টি করে উইকেট বরুণ ও জাদেজার। দুবাইয়ের এ মাঠে সর্বোচ্চ ২৪১ রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। সেটা এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই ভারতের বিপক্ষে।