৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় ইটভাটা মালিক সমিতির বিক্ষোভ
Published: 4th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে জেলার ইটভাটা মালিক সমিতির ব্যানারে শহরের টাউন ফুটবল মাঠ থেকে মিছিলটি বের করা হয়। এতে ইটভাটার মালিক ছাড়া শ্রমিক ও কর্মচারীরা অংশ নেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
চুয়াডাঙ্গা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় চত্বরে সমবেত হয়। তাৎক্ষণিক সমাবেশে ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা তাঁদের দাবির পক্ষে বক্তব্য দেন।
সমাবেশ শেষে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা ইউএনও এম সাইফুল্লাহর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠান। স্মারকলিপিটি দ্রুততম সময়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও। সদর ছাড়া আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় অভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির দাবিগুলো হচ্ছে জিগজ্যাগ ইটভাটার জন্য আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারির মাধ্যমে পরিচালনা করার সুযোগ; জিগজ্যাগ ইটভাটায় কোনো প্রকার হয়রানি বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না; কোনো ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারিভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে; পরিবেশগত ছাড়পত্র, ডিসি লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র ইস্যু বা নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার বিধান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে; ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং ইটভাটা পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
জেলার ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, চুয়াডাঙ্গায় ইটভাটাগুলোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৩০ হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারীর জীবন–জীবিকা নির্ভরশীল। জেলার জিগজ্যাগ ইটভাটার মালিকেরা পরিবেশের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স পাচ্ছেন না। এ জন্য তাঁদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে এই শিল্প চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইটভ ট
এছাড়াও পড়ুন:
সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামানোয় চালককে ‘লাঠিপেটা’
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সড়কে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামানোকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এক চালককে লাঠিপেটা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ইউএনও’র বিচার দাবি করেন তারা। এ সময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তির শিকার হয় জনসাধারণ।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ইউএনও আতিকুল ইসলাম শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মোড়ে আসেন। সেখানে দেখতে পান মুক্তাগাছা থেকে ঢাকাগামী ইসলাম পরিবহনের বাস নির্ধারিত স্টেশনের বাইরে মহাসড়কের পাশে দাঁড় করানোয় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ইউএনও তখন দ্রুত গাড়িটি সরাতে বলেন। এ নিয়ে চালকের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ইউএনওর সঙ্গে থাকা আনসার সদস্যরা বাসটির চালক বুলু মিয়াকে লাঠিপেটা করেন।
তবে বাসচালক বুলুর দাবি, তিনি স্থানীয় ভাবকির মোড় থেকে বাসটি চালিয়ে পৌরসভার পাশে যাওয়া মাত্র ইউএনও বাসে উঠে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে সহকর্মীরা হাসপাতালে নেয়। তিনি বলেন, সরকারের বড় একজন কর্মকর্তা, এভাবে আমাকে মারবেন তা কখনও ভাবতে পারিনি। আমি এর বিচার চাই।
ওই ঘটনার আধা ঘণ্টা পর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে বড়হিস্যা বাজার পর্যন্ত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে ইসলাম পরিবহনের বাস রেখে অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পরে মুক্তাগাছা থানার ওসি কামাল হোসেন ও ময়মনসিংহ থেকে সেনা সদস্যরা গিয়ে স্থানীয় পরিবহন সেক্টরের নেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে ওসি কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পুরান বাসস্ট্যান্ডের ওই স্থানে ইসলাম পরিবহন গাড়ি রেখে যাত্রী উঠানো-নামানো করায় শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে সব পরিবহনকে নির্ধারিত টার্মিনালে বাস রাখার বিষয়ে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হলেও ইসলাম পরিবহন এটি মানছে না। সকালে বিষয়টি ইউএনওর নজরে আসলে তিনি গাড়ি সরিয়ে নিতে বলেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ইউএনওর নির্দেশে লাটিচার্জ করে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। সমাধানের আশ্বাসে পরে তারা অবরোধ তুলেছে।
ইউএনও আতিকুল ইসলাম বলেন, যত্রতত্র গাড়ি রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করায় যানজটে তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হয় মুক্তাগাছাবাসীকে। ইসলাম পরিবহনকে টার্মিনালে বাস রাখতে বলা হলেও তারা যত্রযত্র গাড়ি রেখে যানজটের সৃষ্টি করে। একাধিক অভিযানের পরও পরিবহনটি টার্মিনালে না যাওয়ার জন্য টালবাহানা করে আসছে। সকালে সড়কে বাস রেখে যানজট সৃষ্টি করায় গাড়ি সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু বিষয়টি অন্যদিকে ঘুরাতে চালককে মারধরের অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধের ‘নাটক সাজিয়েছে’ তারা।