কুষ্টিয়ায় প্লাস্টিকের বস্তার ব্যাপক ব্যবহার
Published: 4th, March 2025 GMT
পরিবেশগত ঝুকি উপেক্ষা করে কুষ্টিয়ায় চাল বাণিজ্যে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা এখন প্লাস্টিকের বস্তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অথচ প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বড় বড় মোকাম ও ব্যবসায়িক হাটগুলোতে প্লাস্টিকের বস্তায় চাল প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। এ বস্তাগুলো ব্যবহারের পর যেখানে-সেখানে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। যা মারাত্মক পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কঠোর বিধান থাকলেও কুষ্টিয়ায় তা কার্যকর হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় দফতর থেকেও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরো পড়ুন:
ভারত থেকে এলো ১৬ হাজার ৪০০ টন চাল
ভিয়েতনাম থেকে কেনা হচ্ছে এক লাখ মেট্রিক টন চাল
জেলার মিরপুর উপজেলার আমলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মামুনুল হক ডায়মন্ড বলেন, প্লাস্টিকের বস্তা তুলনামূলকভাবে সস্তা ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় তারা এটি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আরেক ব্যবসায়ী সুফী আল আসাদ বিপ্লব বলেন, “আমরা বিকল্প চটের বস্তা পেলে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করব। কিন্তু সরকার যদি সাশ্রয়ী মূল্যে বিকল্প ব্যবস্থা না করে তাহলে আমরা কীভাবে পরিবর্তন করব?’’
পরিবেশ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের উপপরিচালক আতাউর রহমান বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে এখনো পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায় না।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ গৌতম কুমার রায় বলেন, “চালের মতো খাদ্যপণ্য প্লাস্টিকের বস্তায় সংরক্ষণ করা হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে নদী-নালা ও জলাশয়ে জমা হয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।’’
তিনি আরো বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করলে হবে না, পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের জন্য সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি। এছাড়া জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
কুষ্টিয়ার পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে প্লাস্টিক দূষণ মারাত্মক হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রশাসনের নিষ্ক্রীয়তার কারণে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন, যা সামগ্রিকভাবে পরিবেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র ব যবস থ ব যবস য় ক র যকর পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন কারাগারে
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
এর আগে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ইমরান হোসেনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে পুলিশ। অপরদিকে আসামিপক্ষ থেকে জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১৩৩ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে গতকাল মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, ইমরান হোসেনের প্রতিষ্ঠান সাদিক অ্যাগ্রো সংঘবদ্ধ চোরাচালান ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করেছেন। এ ছাড়া সাদিক অ্যাগ্রো টেকনাফ, উখিয়া ও কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড, মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ এনে তা বিক্রি করেছেন। ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে এনেও তা বিক্রি করা হয়েছে।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু-ছাগলকে বিদেশি ও ‘বংশীয়’গরু-ছাগল বলে প্রচার করে তা উচ্চমূল্যে কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন ইমরান।
শুনানির সময় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেছেন, ইমরান হোসেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। তিনি চোরাচালান ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। চোরাচালানের মাধ্যমে বিদেশ থেকে গরু-ছাগল এনে সেটি উচ্চ মূল্যে বিক্রি করেছেন।
তবে আসামির পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, হয়রানির উদ্দেশ্যে ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের যে অভিযোগ আনা হয়েছে,সেটি ভিত্তিহীন।
গতকালরাজধানী থেকে ইমরান হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
গত বছর কোরবানির ঈদে ইমরানের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় (প্রাথমিক দর) ‘উচ্চবংশীয়’ছাগল কেনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হন তৎকালীন এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ওরফে ইফাত। এরপর আলোচনায় আসে সাদিক অ্যাগ্রো খামার।
সাদিকঅ্যাগ্রোর ইমরানের ১৩৩ কোটি টাকা উপার্জন চোরাচালান ও জালিয়াতি করে: সিআইডিজব্দ করা ব্রাহমা গরু কৌশলে সাদিক অ্যাগ্রোকে দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর