চীনের গ্রাম ও নগরায়নের সমন্বিত উন্নয়ন নিয়ে ঢাকায় সেমিনার
Published: 4th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘উন্নয়নের নতুন ধারণা: চীনের গ্রামীণ ও নগরায়নের সমন্বিত কৌশল’ বিষয়ে সেমিনার।
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে অনুষ্ঠিত হয় এই সেমিনার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজ আয়োজন করে এই সেমিনারের। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড.
আরো পড়ুন:
গঙ্গার পানি প্রবাহ খতিয়ে দেখলেন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন: ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের দল
মূল প্রবন্ধে লি সিয়াও ইয়ুন তুলে ধরেন চীনের ঐতিহাসিক পটভূমি।১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে জোরপূর্বক আধুনিকীকরণ এবং কৃষি বিপ্লব ছাড়াই শিল্পায়নের গল্প। এরপর তুলে ধরেন নতুন চীন প্রতিষ্ঠার শুরুতে ১৯৫০-১৯৭০ এর দশকে শিল্পায়নে কৃষির ভূমিকা ।
লি সিয়াও ইয়ুন বলেন, সংস্কার এবং উন্মুক্তির পর ১৯৮০ থেকে ৯০-এর দশকে কৃষি, শিল্প এবং শহুরে উন্নয়নের একীভূত উন্নয়ন ঘটে চীনে। পাশাপাশি তুলে ধরেন একবিংশ শতকের শুরু থেকে শহর-গ্রামীণ সমন্বিত উন্নয়নের ধারণাটিও।
এরপর উঠে আসে চীনের দারিদ্র্য বিমোচনের গল্প। গ্রাফ চিত্রে দেখানো হয় ২০১২ সালে চীনে প্রায় ১০ কোটি মানুষ ছিল দরিদ্র। এরপরই সরকার শুরু করে জাতীয় দারিদ্র্য বিমোচন অভিযান। যেখানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৯.৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কয়েক বছরের ধারাবাহিক চেষ্টায় ২০২০ সালে দারিদ্র্যমুক্ত হয় চীন।
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক রূপান্তর, দারিদ্র্য নির্মূল এবং গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনে অসাধারণ ফলাফল অর্জনের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক পার্টির ধারাবাহিক কৌশলগত আধুনিকীকরণকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন ড. লি।
তার মতে, দীর্ঘমেয়াদি টেকসই ও সমন্বিত উন্নয়নে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবেশই ভূমিকা রেখেছে এবং কৃষির উন্নয়নই কৃষি-প্রধান ও গ্রামভিত্তিক দেশগুলোর উন্নয়নের ভিত্তি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে চীনের এই সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল কীভাবে বাংলাদেশেও কাজে লাগানো যায় তা নিয়েও মতামত তুলে ধরেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. চিয়াওছুন।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. চিয়াওছুন বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ বা এলএমআইসি হিসেবে উন্নীত হচ্ছে।
অন্যদিকে, কৃষি খাত এবং গ্রামীণ জীবিকা একটি বড় রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এলডিসি পরবর্তী দৃশ্যপটে, বাংলাদেশে গ্রামীণ-শহুরে সংযোগগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। দেশটি অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে উন্নত অবকাঠামো, বাজারের প্রবেশাধিকার এবং ডিজিটাল সংযোগ গ্রামীণ উৎপাদকদের সঙ্গে শহুরে ভোক্তাদের ব্যবধান কমাচ্ছে। এই সংযোগগুলোর শক্তিশালীকরণ কৃষি মূল্য চেইন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান তৈরি এবং সুষম আঞ্চলিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে। এর মাধ্যমেই টেকসই নগরায়ন এবং গ্রামীণ উন্নয়নও সম্ভব হবে।
দুই ঘণ্টাব্যাপী উন্নয়নের নতুন ধারণার এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।এছাড়া দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মাঠেই ছিলেন আম্পায়াররা। আকাশ পরিষ্কার হয়ে আলোর সংকট কাটে কিনা সেটি দেখতে মিনিট দশেক অপেক্ষা করেছেন তাঁরা। এরপর ঘোষণা দিয়েছেন আজ আর খেলা সম্ভব নয়।
দেরিতে শুরু আর আগেভাগেই শেষ হওয়া সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনটা বাংলাদেশ শেষ করেছে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে। জিম্বাবুয়ের চেয়ে এখন ১১২ রানে এগিয়ে নাজমুল হোসেনের দল। দলের ভরসা হয়ে টিকে আছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। আগামীকাল চতুর্থ দিনটা ৬০ রানে শুরু করবেন নাজমুল। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে তাঁর সঙ্গী জাকের আলী অপরাজিত ২১ রানে।
বৃষ্টির কারণে দিনের খেলা শুরু হয় দুপুর ১টা। এরপর খেলা হতে পারে ৪৪ ওভার। ১ উইকেট ৫৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে ১৩৭ রান।
বৃষ্টিভেজা দিনে ইনিংসের শুরুতে নাজমুল বোলারদের ওপর চড়াও হলেও ধীরে ধীরে ফিরেছেন প্রথাগত টেস্টে মুডে। বিশেষ করে ২৬ রানের একবার জীবন পাওয়ার পর। জিম্বাবুয়ের দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচি নাজমুলকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার প্ররোচনা দিয়েছেন বারবারই।
উদাহরণ হিসেবে ইনিংসের ৩৫তম ওভারের কথা বলা যেতে পারে। নিয়াউচির করা সেই ওভারে ষষ্ঠ-সপ্তম স্টাম্পের পাঁচ–পাঁচটি বল ছেড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পুরো ইনিংসে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলগুলোতে ছিলেন বাড়তি সতর্ক। ভুল যে করেননি তা নয়!
৩৮তম ওভারে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়ায় দ্বিতীয় স্লিপের পাশ দিয়ে বল যায় বাউন্ডারিতে। তৃতীয় স্লিপ থাকলে অনায়াসে হতে পারত ক্যাচ। তবে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা শন উইলিয়ামসের হাতে লেগে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। এরপর ব্যাট ছুড়ে নাজমুল যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতেই বোঝা গেছে নাজমুলের আজ ভুল করতে মানা! প্রথম ইনিংসে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে ৪০ রানে আউটের পরই হয়তো এই উপলব্ধি তাঁর।
নাজমুল যা পেরেছেন সিলেটে আজ তা পারেননি মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের বিষয়টি অবশ্য ভিন্ন। বাঁহাতি মুমিনুল সকাল থেকে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড টেনেছেন। তবে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে মনযোগ হারান এই ব্যাটসম্যান। নিয়াউচির অফ স্টাম্পের বাইরে পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন মুমিনুল।হক। ক্যাচ দেন নিয়াশা মায়াভোর গ্লাভসে।
অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি মুমিনুল। ব্যাটে লেগে ক্যাচ যায় উইকেটরক্ষক মায়াভোর কাছে। ভাঙে ৯১ বল স্থায়ী ৬৫ রানের জুটি।
মুশফিক ফেরেন এর পরপরই। ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে বসেন মুশফিক। ৪ রান করা মুশফিকের সহজ ক্যাচ নেন আরভিন।
দিনের বাকি যে সময়টুকুতে খেলা হয়েছে, তাতে ভালোভাবেই সামলেছেন নাজমুল ও জাকের আলী। ১০৩ বলে ৭ চারে ৬০ রানে খেলছেন নাজমুল । ৩ চারে ৬০ বলে জাকের আলীর রান ২১।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবাংলাদেশ: ১৯১ ও ৫৭ ওভারে ১৯৪/৪ (সাদমান ৪, মাহমুদুল ৩৩, মুমিনুল ৪৭, নাজমুল ৬০*, মুশফিক ৪, জাকের ২১*; মুজারাবানি ৩/৫১, নিয়াউচি ১/২৮)।জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৩।
(তৃতীয় দিন শেষে)