গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকায় প্যানারোমা অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ছাদ থেকে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বাসন থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলাটি দায়ের করেছেন নিহতের মা নাজমা বেগম।

নিহত ওই নারী শ্রমিকের নাম আফসানা আক্তার (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার জাগির ভূগলী এলাকার আফসার আলীর মেয়ে। আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম হৃদয় খান ওরফে মল্লিক মিয়া (৩০)।

নিহতের মা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, প্রায় ১০ বছর আগে তাঁর মেয়ে আফসানা আক্তারের সঙ্গে হৃদয় খানের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে এবং আফসানা আক্তার দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আফসানা আক্তার গাজীপুর মহানগরীর প্যানারোমা অ্যাপারেলস লিমিটেডে সুইং জুনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের পর থেকে তাঁর স্বামী তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন এবং ঠিকমতো ভরণপোষণ দিতেন না। সব সময় গার্মেন্টসে কাজ করার জন্য চাপ দিতেন। আফসানা অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আর গার্মেন্টসে কাজ করবেন না। এ কথা শুনে জামাতা হৃদয় খান উত্তেজিত হয়ে আফসানাকে শারীরিক নির্যাতন করেন এবং গার্মেন্টসের চাকরি করতে বাধ্য করেন।

বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ‘২ মার্চ সকালে আসামির অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর মেয়েকে মারতে উদ্যত হয় এবং বলে যে “তুই মরে গেলে আমি শান্তি পাই, তুই মরে যা।” পরে দুপুর আনুমানিক ১টা ৪০ মিনিটের দিকে কারখানার ছাদ হতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে।’

আরও পড়ুনগাজীপুরে কারখানার ছাদ থেকে পড়ে নারী শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ০৩ মার্চ ২০২৫

এদিকে এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে ওই কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় শ্রমিকেরা দাবি করেন, ছুটি না দেওয়ায় ওই অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার সামনে থাকা ব্যক্তিগত গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল মহাসড়কে এনে আগুন ধরিয়ে দেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দুলাল চন্দ্র বলেন, ওই ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। মামলা দায়েরের পর তাঁর স্বামীকে মহানগরীর হাড়িনাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন আফস ন

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে কম মূল্যে গরুর মাংস–ডিম বিক্রির উদ্যোগ, দাম আরও কমানোর দাবি

ময়মনসিংহে পবিত্র রমজান উপলক্ষে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ‘সুলভ মূল্যে’ গরুর মাংস ও ডিম বিক্রি শুরু হয়েছে। সেখানে সপ্তাহে ২ দিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন ১ কেজি করে গরুর মাংস ও ১ ডজন করে ডিম কিনতে পারবেন। তবে মাংস ও ডিমের দাম আরও কিছুটা কমানোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।

আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এ বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন ও জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এ ছাড়া বিক্রয় ও বিপণনের কাজ করছে ‘বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন’।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সেখানে ‘সুলভ মূল্যে’ মাংস ও ডিম বিক্রি করা হবে। আপাতত ৬৫০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস কিনতে পারবেন ক্রেতারা। আর ১ ডজন ডিমের দাম নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকা। স্থানীয় বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও প্রতি ডজন ডিম খুচরা বাজারে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানুষের চাহিদা বাড়লে সুলভ মূল্যের বাজারে পণ্যগুলোর পরিমাণও বাড়ানো হবে বলে জানান আয়োজকেরা। গত রমজানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা এবং প্রতি ডজন ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্রি শুরু কথা থাকলেও শুরুর দিকে ক্রেতার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। আয়োজকেরা বলছেন, দিন দিন ক্রেতার উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।

হোসনা বেগম নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘বাজার থেকে সেখানে মাংস ও ডিমের দাম কিছুটা কম। তবে গত বছর গরুর মাংস ৫৫০ টাকায় বিক্রি করেছিল প্রশাসন। এবার ১০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আমরা চাই, দাম আরও কিছুটা কমানো হোক।’

আবদুর রশিদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারের থেকে সেখানে পার্থক্য তেমন বেশি না। সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস ও ডিম কিনতে হয়। সরকার যেহেতু ভর্তুকি দিচ্ছে, দাম আরেকটু কম হলে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য উপকার হয়।’

উদ্বোধনের সময় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, রমজান উপলক্ষে সাধারণ মানুষের খাদ্যতালিকায় যেসব পণ্য থাকে, সেগুলো যেন কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারে, তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুধ বিতরণের ব্যবস্থাও করা হবে। সারা মাস এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ক্রেতাদের দাম কমানোর দাবির প্রসঙ্গে জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য নিম্ন আয়ের মানুষকে বাজার থেকে কিছুটা কম মূল্যে গরুর মাংস ও ডিম দেওয়া। এখানে সরকারি কোনো ভর্তুকির ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে উৎপাদন মূল্যে ডিম ও মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতার যদি ১০০ টাকাও সেভ হয়, তাহলেও আরেকটা কাজ হয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে অন্তঃসত্ত্বা পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, স্বামী গ্রেপ্তার
  • ময়মনসিংহে কম মূল্যে গরুর মাংস–ডিম বিক্রির উদ্যোগ, দাম আরও কমানোর দাবি
  • মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিসের আন্দোলন, প্রশ্ন যাত্রীর
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক যানচলাচল স্বাভাবিক, কয়েকটি কারখানায় ছুটি
  • গাজীপুরে নারী শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে মহাসড়ক অবরোধ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
  • জামালপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ, গাড়িতে আগুন 
  • মাটি কামড়ে নিজের পেশায় টিকে আছেন ময়মনসিংহের মৃৎশিল্পীরা
  • তিন বছরে কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ, দ্রুত চালুর দাবি এলাকাবাসীর