উপদেষ্টা হচ্ছেন সি আর আবরার ও অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম
Published: 4th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন অধ্যাপক সি আর আবরার ও অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম। বুধবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টায় বঙ্গভবনে নতুন উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্য দিয়ে আকার বাড়ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের। অধ্যাপক সি আর আবরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী। জানা গেছে, তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ পাচ্ছেন অধ্যাপক সি আর আবরার। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যদিকে, প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড.
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারীর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘‘বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় স্যারকে বঙ্গভবনে থাকতে বলা হয়েছে। সকাল ১১টায় উপদেষ্টা হিসেবে তার শপথ হবে।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন উপদ ষ ট মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হলে সুবিধা পাবে ভারত
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতির মধ্যেই উত্তরণ ঘটলে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ে দেশের অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ: প্রস্তুতি ও বাস্তবতা’ শিরোনামের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এমন আশঙ্কার কথা জানান।
রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে গতকাল বুধবার চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ নামে একটি সংস্থা এ বৈঠকের আয়োজন করে। এতে কয়েকজন রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক ও আমলা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের দ্য স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, বাংলাদেশ যদি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কছাড় সুবিধা কমবে; বিদেশি ঋণের সুদের হার বাড়বে এবং দেশি শিল্পকারখানা তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ে অনেকটি বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলো চাইবে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাক; তাহলে তাদের সুবিধা হয়। প্রতিযোগী দেশের মধ্যে অন্যতম ভারত। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে, অর্থাৎ বাণিজ্য সুবিধা না পেলে ভারতই সবচেয়ে লাভবান হবে। জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশ যদি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করে, সে ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে প্রতিযোগীরা। তারা চাইবে বাংলাদেশের আবেদন যেন বিবেচনা করা না হয়।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণাপ্রধান ইশতিয়াক বারী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উত্তরণের তিনটি শর্তই পূরণ করেছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ এ তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিছু দেশ ও অঞ্চলে বাংলাদেশের বাণিজ্যে শুল্কছাড় সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে। ওষুধ উৎপাদনে মেধাস্বত্বে ছাড় সুবিধা থাকবে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত।
তিনি বলেন, কোনো দেশ নিজের সিদ্ধান্তে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে পারে না। পেছাতে চাইলে জাতিসংঘে আবেদন করতে পারে। অবশ্য এ জন্য শক্ত যুক্তি থাকতে হয়।
গত ১৩ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৬ সালেই উত্তরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুশতাক খান প্রশ্ন করেন, চীন ও ভারতের পণ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের উৎপাদকরা কি প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে? বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক শিল্প, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্প, ওষুধ শিল্প– এসব খাত কি প্রস্তুত? সার্বিকভাবে বাংলাদেশ কি প্রস্তুত? উত্তরও তিনিই দেন। বলেন, ‘আমি প্রমাণ দেখছি না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা অর্থনীতির নানা পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যার ওপর ভিত্তি করে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি আর্থিক খাতের দুরবস্থা, ব্যাংক খাতের সংকট, রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য না আসাসহ বিভিন্ন সংকটের কথা উল্লেখ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বিষয়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন থাকতে হবে। বিগত ১৫ বছরে দেশে গণতন্ত্র ছিল না। এখন বাংলাদেশ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের আশা করছে। ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার আসবে। উত্তরণের বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হওয়া উচিত। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া উচিত এবং পরে জনগণের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিতর্কের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার।