মাটির উর্বরতা ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় পাহাড়-টিলা অধ্যুষিত সিলেটে লেবুর উৎপাদন বেশি হয়। এ জন্য সিলেটকে বলা হয় ‘লেবুর দেশ’। তবে এবার চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় ‘লেবুর দেশে’ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লেবু।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভাষ্য, ইফতারের সময় ধনী-গরিবনির্বিশেষে সবার কাছে লেবুর শরবতের বেশ চাহিদা থাকে। ফলে রোজার সময় বাজারে লেবুর চাহিদা বাড়ে। চাহিদা যতটা, সে পরিমাণে জোগান নেই। এ কারণে লেবুর দাম একলাফে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘সবজি বাজার পরিদর্শন করেছি। সবজি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তাঁরা প্রতি হালি ছোট লেবু ৬০ টাকা এবং বড় লেবু ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাঁদের দাবি, পাইকারি বাজার থেকে তাঁরা ১০০টি ছোট লেবু ১ হাজার ৪০০ টাকায় এবং বড় লেবু ২ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছেন। সেসব যাচাই করা হবে। কেউ বেশি লাভ করার চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট শহরতলি এলাকা, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার থেকে চাহিদার অর্ধেক বেশি লেবু সরবরাহ করা হচ্ছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। এর বাইরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এবং ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও সিলেটে লেবু আসে।

নগরের বন্দরবাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকায় প্রতি হালি মাঝারি লেবু ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চাষি লেবু ১০০ টাকা, টনা লেবু ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০ দিন আগেও এসব লেবু প্রতি হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকার কমে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এখন আকারভেদে একেকটি জারা লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায়। এ লেবু আগে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা কমে মিলত।

বন্দরবাজার লালবাজার-সংলগ্ন মাছবাজারের পাশে কয়েকটি লেবুর দোকান আছে। সোমবার বেলা দেড়টার দিকে এখানে লেবু কিনতে এসেছিলেন সোবহানীঘাট এলাকার বাসিন্দা মহিতুর রহমান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বড় আকারের যে লেবু চার-পাঁচ দিন আগে ৮ টাকায় কিনেছি, সে লেবু এখন ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ল।’

রিকাবিবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী মো.

হেলাল মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে লেবুর দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে লেবুর দাম একলাফে কয়েক গুণ বেড়েছে।

সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট লেবুবাগান ১ হাজার ৪৫৭টি। এর মধ্যে ৮২৫টি জারা লেবুর বাগান এবং ৬৩২টি অন্যান্য জাতের লেবুর বাগান। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫৩১ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হয়েছে, মোট লেবু হয়েছে ৪ হাজার ৪৩৯ টন।

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণভাগ চৌধুরীপাড়ার আলভীনা গার্ডেনের স্বত্বাধিকারী মো. আবদুর রব বলেন, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে সিডলেস লেবু চাষ করেছেন। মৌসুম শেষ হওয়ায় তাঁর বাগানেও এখন লেবু নেই। আবার চাহিদাও বেড়েছে। তাই দামও বাড়তি। তিনি বর্তমানে দৈনিক ২০০ লেবু বিক্রি করতে পারছেন। পাইকারি দামে প্রতি হালি ৮০ টাকায় বিক্রি করছেন। সেসব লেবু খুচরা বাজারে হালি বাজারে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব লেবুই রমজানের দুই সপ্তাহ আগে প্রতি হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান বলেন, লেবুর মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। তবে সিলেটের বাগানগুলোতে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে সিডলেস লেবু পাওয়া যাচ্ছে। তাই হুট করে দাম বেড়ে যাওয়ার যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টিকটকে নতুন সুবিধা

ছোট আকারের ভিডিও সহজে তৈরি ও বিনিময়ের সুযোগ থাকায় নিয়মিত টিকটক ব্যবহার করেন অনেকেই। বিভিন্ন বিষয়ের ভিডিওর পাশাপাশি একাধিক ছবির সমন্বয়ে তৈরি স্লাইড শো বেশ জনপ্রিয় টিকটকে। কিন্তু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা চাইলেও টিকটকে থাকা এসব ছবি দেখতে পারেন না। এ সমস্যা সমাধানে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে অলটারনেটিভ (এএলটি) টেক্সট সুবিধা চালু করেছে টিকটক। নতুন এ সুবিধা চালুর ফলে স্ক্রিন রিডারের মাধ্যমে টিকটকে থাকা ছবির বর্ণনা শুনতে পারবেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা।

টিকটক জানিয়েছে, নতুন এ সুবিধা চালুর ফলে ছবি আপলোডের সময় অল্ট টেক্সট অপশনের মাধ্যমে ছবিতে থাকা দৃশ্যের বর্ণনা লিখতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। পোস্ট প্রকাশের পরও চাইলে ব্যবহারকারীরা অল্ট টেক্সট সম্পাদনা বা নতুন করে যুক্ত করতে পারবেন।

ছবির জন্য অল্ট টেক্সট সুবিধা টিকটক অ্যাপে থাকা বিদ্যমান অ্যাক্সেসিবিলিটি ফিচারের সম্প্রসারিত রূপ। এর আগে ভিডিও কনটেন্টের জন্য স্বয়ংক্রিয় ক্যাপশন তৈরির সুবিধা এবং লেখার আকার ইচ্ছেমতো বড়-ছোট করার অপশন চালু করেছে প্ল্যাটফর্মটি।

সূত্র: টেক ক্র্যান্চ

সম্পর্কিত নিবন্ধ