গঙ্গার পানি প্রবাহ খতিয়ে দেখলেন ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা
Published: 4th, March 2025 GMT
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে ফারাক্কা বাঁধ ও গঙ্গা নদীর পানি প্রবাহ পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) প্রতিনিধি দল। দুই দেশের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) একটি লঞ্চে করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায় গঙ্গা নদীতে ভারত-বাংলাদেশ ‘জয়েন্ট অবজারভেশন সাইট’ এ গিয়ে পানি প্রবাহের বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসিবি) সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, গত জানুয়ারি মাসে পানির প্রবাহ ভালো ছিল, কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে একটু কমেছে। যদিও এটাই স্বাভাবিক। কোনো বছর কম থাকে, কোনো বছর বেশি থাকে।
১৯৯৬ সালে সম্পাদিত গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশে যাওয়ার কথা সেটা যাচ্ছে, আবার যতটা ভারত পাওয়ার কথা সেটাও পাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
‘বাহুবলি টু’ সিনেমার রেকর্ড ভাঙবে ‘স্পিরিট’?
কলকাতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল
আবুল হোসেন আরো বলেন, আগামী বছর গঙ্গা চুক্তির নবায়ন নিয়ে একটা টেকনিক্যাল টিম গঠন করা হবে। চুক্তি নবায়নের বিষয়টি তারাই ভালো বলতে পারবেন।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামেন বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। এরপর কলকাতা থেকে ট্রেনে করে নিউ ফারাক্কা স্টেশনে পৌঁছান। সোমবার রাতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল আসা মাত্রই তাদেরকে স্বাগত জানান ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপান্ডে ও ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টেরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার গঙ্গা নদী পরিদর্শনের পর, আগামীকাল বুধবার ফারাক্কা থেকে দুই দেশের প্রতিনিধি দল কলকাতায় ফিরবেন। এরপর আগামী বৃহস্পতিবার কলকাতার হায়াত রিজেন্সি হোটেলে ৮৬তম বৈঠকে মিলিত হবেন দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা। শুক্রবার হবে কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক।
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি হয়েছিল। ৩০ বছরের সামগ্রিক চুক্তি অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মে মাস- এই শুখা মৌসুমে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই চুক্তিতে বলা হয়, নদীতে ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি পানি থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে বাংলাদেশ। নদীতে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে ভারত। আবার ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানি থাকলে তা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যেই সমান ভাগে ভাগ হবে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব হ কলক ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মাঠেই ছিলেন আম্পায়াররা। আকাশ পরিষ্কার হয়ে আলোর সংকট কাটে কিনা সেটি দেখতে মিনিট দশেক অপেক্ষা করেছেন তাঁরা। এরপর ঘোষণা দিয়েছেন আজ আর খেলা সম্ভব নয়।
দেরিতে শুরু আর আগেভাগেই শেষ হওয়া সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনটা বাংলাদেশ শেষ করেছে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে। জিম্বাবুয়ের চেয়ে এখন ১১২ রানে এগিয়ে নাজমুল হোসেনের দল। দলের ভরসা হয়ে টিকে আছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। আগামীকাল চতুর্থ দিনটা ৬০ রানে শুরু করবেন নাজমুল। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে তাঁর সঙ্গী জাকের আলী অপরাজিত ২১ রানে।
বৃষ্টির কারণে দিনের খেলা শুরু হয় দুপুর ১টা। এরপর খেলা হতে পারে ৪৪ ওভার। ১ উইকেট ৫৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে ১৩৭ রান।
বৃষ্টিভেজা দিনে ইনিংসের শুরুতে নাজমুল বোলারদের ওপর চড়াও হলেও ধীরে ধীরে ফিরেছেন প্রথাগত টেস্টে মুডে। বিশেষ করে ২৬ রানের একবার জীবন পাওয়ার পর। জিম্বাবুয়ের দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচি নাজমুলকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার প্ররোচনা দিয়েছেন বারবারই।
উদাহরণ হিসেবে ইনিংসের ৩৫তম ওভারের কথা বলা যেতে পারে। নিয়াউচির করা সেই ওভারে ষষ্ঠ-সপ্তম স্টাম্পের পাঁচ–পাঁচটি বল ছেড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পুরো ইনিংসে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলগুলোতে ছিলেন বাড়তি সতর্ক। ভুল যে করেননি তা নয়!
৩৮তম ওভারে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়ায় দ্বিতীয় স্লিপের পাশ দিয়ে বল যায় বাউন্ডারিতে। তৃতীয় স্লিপ থাকলে অনায়াসে হতে পারত ক্যাচ। তবে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা শন উইলিয়ামসের হাতে লেগে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। এরপর ব্যাট ছুড়ে নাজমুল যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতেই বোঝা গেছে নাজমুলের আজ ভুল করতে মানা! প্রথম ইনিংসে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে ৪০ রানে আউটের পরই হয়তো এই উপলব্ধি তাঁর।
নাজমুল যা পেরেছেন সিলেটে আজ তা পারেননি মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের বিষয়টি অবশ্য ভিন্ন। বাঁহাতি মুমিনুল সকাল থেকে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড টেনেছেন। তবে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে মনযোগ হারান এই ব্যাটসম্যান। নিয়াউচির অফ স্টাম্পের বাইরে পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন মুমিনুল।হক। ক্যাচ দেন নিয়াশা মায়াভোর গ্লাভসে।
অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি মুমিনুল। ব্যাটে লেগে ক্যাচ যায় উইকেটরক্ষক মায়াভোর কাছে। ভাঙে ৯১ বল স্থায়ী ৬৫ রানের জুটি।
মুশফিক ফেরেন এর পরপরই। ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে বসেন মুশফিক। ৪ রান করা মুশফিকের সহজ ক্যাচ নেন আরভিন।
দিনের বাকি যে সময়টুকুতে খেলা হয়েছে, তাতে ভালোভাবেই সামলেছেন নাজমুল ও জাকের আলী। ১০৩ বলে ৭ চারে ৬০ রানে খেলছেন নাজমুল । ৩ চারে ৬০ বলে জাকের আলীর রান ২১।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবাংলাদেশ: ১৯১ ও ৫৭ ওভারে ১৯৪/৪ (সাদমান ৪, মাহমুদুল ৩৩, মুমিনুল ৪৭, নাজমুল ৬০*, মুশফিক ৪, জাকের ২১*; মুজারাবানি ৩/৫১, নিয়াউচি ১/২৮)।জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৩।
(তৃতীয় দিন শেষে)