আইপিএলের বাকি তিন সপ্তাহ। এমন সময়ে কাল ঘোষণা এল—কলকাতা নাইট রাইডার্সকে এবার নেতৃত্ব দেবেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান অজিঙ্কা রাহানে। সেই রাহানে, যে কিনা এই আইপিএলের নিলামে প্রথম রাউন্ডে দলই পাননি।

শেষ পর্যন্ত নিলামের দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে তাঁকে ভিত্তিমূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে দলে নিয়ে নেয় কলকাতা। তখন ভাবা হচ্ছিল, বিকল্প হিসেবেই রাহানেকে কিনে রাখছে কলকাতা। তবে শেষ পর্যন্ত সেই রাহানেই হলেন কলকাতার অধিনায়ক। কেন?

ব্যাটিং রেকর্ড বিবেচনায় নিলে কলকাতার একাদশে রাহানের জায়গা পাওয়াটাই মুশকিল। এই দলে ওপেনার হিসেবে আছেন সুনীল নারাইন, কুইন্টন ডি কক, রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

আছেন অংকৃশ রঘুবংশী, ২০ বছর বয়সী যে ব্যাটসম্যান নিজের প্রথম মৌসুমেই গতবার ব্যাটিং করেছিলেন ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, রিংকু সিং ও রমনদীপ সিং তো আছেনই। এবার তারা দলে নিয়েছে ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীকেও। মানে সব মিলিয়ে বিধ্বংসী এক ব্যাটিং লাইনআপ। সে ক্ষেত্রে এই দলে রাহানের জায়গা কই?

রাহানেকে নিয়ে ভিন্ন কোনো বিশেষ পরিকল্পনা থাকলে তাঁকে নিশ্চয় নিলামের শেষ দিনে দলে নিত না কলকাতা!

আরও পড়ুন৪ রানে নেই ৬ উইকেট, ঢাকা লিগে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং–বিপর্যয়২ ঘণ্টা আগে

মূলত কলকাতা বিপদে পড়েই তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেছে। পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়ে লাভটা হয়েছে রাহানের। বলে রাখা ভালো, রাহানেও উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ নয়। আইপিএলে রাজস্থানকে দুই মৌসুম নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহানে। ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১১টি ম্যাচে। ২০২০–২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের যে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়, সেটি এসেছে এই রাহানের নেতৃত্বেই। ভারতের ক্রিকেটে এখনো মুম্বাইকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই রাহানে।

রাহানে কেন অধিনায়ক, সে প্রসঙ্গে ফেরা যাক। আসলে আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এবারের মৌসুমে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না। সে কারণেই রাহানের দিকে ছুটেছে দলটি। রাহানে ছাড়া কলকাতাকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন কুইন্টন ডি কক, রাসেল কিংবা নারাইন। এই তিনজনের মধ্যে রাসেল ও নারাইনের একাদশে জায়গা নিশ্চিত।

তবে রাসেল চোটপ্রবণ, নারাইন অধিনায়ক হিসেবে আইএলটি-টোয়েন্টিতে হয়েছেন ব্যর্থ। সব মিলিয়ে আবুধাবি নাইট রাইডার্সকে ৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে মাত্র ৯টিতে জেতাতে পেরেছেন নারাইন। তাই তাঁদের নিয়ে ভাবেনি কলকাতা। ডি ককের যেহেতু একাদশে জায়গা নিশ্চিত নয়, বিদেশি এই ক্রিকেটারকে নিয়ে কেন ঝুঁকি নেবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি?

আইয়ারও অধিনায়ক হতে পারতেন। আলোচনাটা আসলে তাঁকে নিয়েই বেশি ছিল। ২০২১ সাল থেকে আইয়ার দলের সঙ্গে আছেন। এবার কলকাতা তাঁকে ধরে রেখেছে ২৩ কোটি ৭৫ লাখ রুপি দিয়ে।

১৭২.

৪৯২০২৩ সালের আইপিএলে রাহানের স্ট্রাইক রেট

টাকার অঙ্ক দেখে বোঝাই যাচ্ছে, এই দলে আইয়ারের গুরুত্ব! তবে আইয়ার টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও কখনো নেতৃত্ব দেননি। আর রাহানে ৫৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দিন শেষে কলকাতা টিম ম্যানেজমেন্ট অভিজ্ঞতাকেই বেছে নিয়েছে। আইয়ারের কপালে জুটেছে সহ-অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। মানে আইয়ার আগামীর পরিকল্পনায় আছেন। তবে এ মুহূর্তে আইয়ারের হাতে দায়িত্ব না ছাড়াকেই নিরাপদ ভাবছে দলটি।

প্রশ্ন আছে, রাহানের ব্যাটিং–সামর্থ্য নিয়ে। টুকটুক ব্যাটিংয়ের জন্য টি-টোয়েন্টিতে ব্রাত্য হয়েই যে পড়েছিলেন রাহানে। তবে ২০২৩ সাল থেকে টি-টোয়েন্টিতে নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়ার চেষ্টায় আছেন রাহানে। কখনো পেরেছেন, কখনো পারেননি। সব মিলিয়ে আইপিএলে ১২৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা রাহানে ২০২৩ সালের আইপিএলে ব্যাটিং করেছিলেন ১৭২.৪৯ স্ট্রাইক রেটে।

রাহানে–আইয়ার জুটি দেখা যাবে আইপিএলে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ইন কলক ত আইয় র

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ