অর্থপাচার মামলায় তারেক ও মামুনের আপিলের রায় ৬ মার্চ
Published: 4th, March 2025 GMT
সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অভিযোগে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের করা আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৬ মার্চ এ বিষয়ে রায় দেওয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ তারেক ও মামুনের করা আপিল আবেদন গ্রহণ করে তাদের বিরুদ্ধে সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও আইনজীবী জাকির হোসেন।
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর তারেক ও মামুনকে আসামি করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অভিযোগে বলা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ নির্মাণ কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন মামুন। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ওই টাকা বিভিন্ন পদ্ধতিতে সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের ব্যাংক হিসাবে পাচার করা হয়। ওই টাকার মধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা তুলে খরচ করেন তারেক রহমান। ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর এ মামলায় রায় দেন ঢাকার আদালত। রায়ে তারেক রহমানকে খালাস এবং গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তারেক রহমানের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট দুদকের আপিল গ্রহণ করেন। এরপর দুদকের করা আপিলের সঙ্গে কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে মামুনের করা আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ২১ জুলাই রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ে গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে দেওয়া ৭ বছরের কারাদণ্ডও বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে মামুনকে দেওয়া ৪০ কোটি টাকার জরিমানা কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তারেক ও মামুনের করা আপিলের শুনানি নিয়ে ১০ ডিসেম্বর তা গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ম ম ন র কর
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আ.লীগ করব না: কাঠগড়ায় কামাল মজুমদার
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও পদত্যাগ করলাম।
সোমবার (৩ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে কাফরুল থানার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।
এদিন আদালতে তোলার পর কাঠগড়ায় রাখা হয় তাকে। এরপর সকাল ১০টা ৭ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর বিচারকের উদ্দেশ্যে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার চাই।’
তিনি বলেন, আমার ৭৬ বয়স, আমি ডায়াবেটিসের রোগী। চোখের ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনো খোঁজ খবর নিতে পারছি না। তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আপনার (বিচারক) কাছে আমার আবেদন, আপনার কাছে সুবিচার চাই। একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন নাতি নাতনিদের নিয়ে খেলা করার সময়। কিন্তু জেলখানায় অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডিজিটাল কুরআন ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না। আমাকে ডিজিটাল কুরআন, ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দেওয়া হোক।
এরপর শুরু হয় আসামিদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানি। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক কাফরুল থানার এক হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। গ্রেফতার দেখানো অন্যরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অপর সাবেক আইজিপি এ. কে. এম শহিদুল হক। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
পরে কাঠগড়া থেকে নামার সময় কামাল আহমেদ মজুমদার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, রাজনীতি থেকে একেবারে অব্যাহতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি। আমার দলীয় কোনো পদ নেই। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।
গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে বারেটার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এম জি