বাসশ্রমিকদের মারধরের অভিযোগে ডাকা ধর্মঘটের কারণে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকায় চলাচলকারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। একই সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। রমজানে আয় বন্ধ হওয়ায় দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অনেক শ্রমিক।

গতকাল সোমবার বিকেল চারটার দিকে জামালপুর জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা বাস মালিক সমিতি যৌথভাবে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়।

আরও পড়ুনজামালপুরে বাস সেবা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধীদের মহাসড়ক অবরোধ১৯ ঘণ্টা আগে

ধর্মঘটের প্রথম দিনেই চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত জামালপুর শহরের কেন্দ্রীয় ও পৌর বাসস্ট্যান্ড, রাজীব কাউন্টার, ভোকেশনাল, জিগাতলা ও গেটপাড় এলাকার অটোরিকশা স্ট্যান্ড ঘুরে যাত্রীদের যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাসগুলো টার্মিনালে সারিবদ্ধ করে রাখা। কোনো বাস চলাচল করছে না। যাত্রীরা বাস বন্ধের খবর শুনে অন্যদিকে চলে যাচ্ছেন।শ্রমিকেরা কিছু সময়ের জন্য জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে শ্রমিক নেতাদের নির্দেশে সড়ক ছেড়ে দেয় তাঁরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা ধর্মঘট করতাছি। শ্রমিক ও মালিক নেতাদের মধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে সমাধান করবেন। কিন্তু সেটা তাঁরা পারতাছেন না। তাই সমস্যা বাড়তাছে। যাত্রীদের সঙ্গে আমাদেরও ক্ষতি হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, প্রতিদিন টাকা আয় না করলে ঘরে চাল জোটে না।’

আরও পড়ুনজামালপুরে দুর্ঘটনায় একজন নিহত, বাসে আগুন দিল বিক্ষুব্ধ জনতা০২ মার্চ ২০২৫

এর মধ্যেই অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছেন কয়েকজন চালক। শহরের জিগাতলায় অটোরিকশার স্ট্যান্ডে তাঁদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। চালকেরা বলেন, রমজান মাসে আয়রোজগার একটু কম। গাড়ি চালালে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয়। কী কারণে অটোরিকশার ধর্মঘট চলছে, তা তাঁরা জানেন না। তাঁদের নেতারা শুধু অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রাখতে বলছেন। তাই তাঁরা বন্ধ রেখেছেন।

শহরের ভোকেশনাল অটোরিকশার স্ট্যান্ডে দেখা হয় কম্পপুর এলাকার রবিউল ইসলাম (৩৫) নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তাঁর এক আত্মীয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখতে ময়মনসিংহে যেতে চান রবিউল। কিন্তু তিনি কোনো যানবাহন পাচ্ছিলেন না। রবিউলে ভাষ্য, ‘এসেই শুনলাম ধর্মঘট চলছে। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানলাম বাসও বন্ধ। তার মানে, যাওয়ার আর কোনো উপায় নাই। এভাবে হঠাৎ ধর্মঘট ডাকা ঠিক না। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিসের আন্দোলন?’

চলমান পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে শ্রমিকেরা কিছু সময়ের জন্য জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। পরে শ্রমিক নেতাদের নির্দেশে সড়ক ছেড়ে দেয়। আজ সকাল ১০টার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডের সামনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে কম মূল্যে গরুর মাংস–ডিম বিক্রির উদ্যোগ, দাম আরও কমানোর দাবি

ময়মনসিংহে পবিত্র রমজান উপলক্ষে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ‘সুলভ মূল্যে’ গরুর মাংস ও ডিম বিক্রি শুরু হয়েছে। সেখানে সপ্তাহে ২ দিন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জন ১ কেজি করে গরুর মাংস ও ১ ডজন করে ডিম কিনতে পারবেন। তবে মাংস ও ডিমের দাম আরও কিছুটা কমানোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।

আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এ বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন ও জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এ ছাড়া বিক্রয় ও বিপণনের কাজ করছে ‘বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশন’।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সেখানে ‘সুলভ মূল্যে’ মাংস ও ডিম বিক্রি করা হবে। আপাতত ৬৫০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস কিনতে পারবেন ক্রেতারা। আর ১ ডজন ডিমের দাম নেওয়া হচ্ছে ১২০ টাকা। স্থানীয় বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও প্রতি ডজন ডিম খুচরা বাজারে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানুষের চাহিদা বাড়লে সুলভ মূল্যের বাজারে পণ্যগুলোর পরিমাণও বাড়ানো হবে বলে জানান আয়োজকেরা। গত রমজানে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গরুর মাংস ৫৫০ টাকা এবং প্রতি ডজন ডিম ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিক্রি শুরু কথা থাকলেও শুরুর দিকে ক্রেতার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। আয়োজকেরা বলছেন, দিন দিন ক্রেতার উপস্থিতি বৃদ্ধি পাবে।

হোসনা বেগম নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘বাজার থেকে সেখানে মাংস ও ডিমের দাম কিছুটা কম। তবে গত বছর গরুর মাংস ৫৫০ টাকায় বিক্রি করেছিল প্রশাসন। এবার ১০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আমরা চাই, দাম আরও কিছুটা কমানো হোক।’

আবদুর রশিদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারের থেকে সেখানে পার্থক্য তেমন বেশি না। সেখানেও লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস ও ডিম কিনতে হয়। সরকার যেহেতু ভর্তুকি দিচ্ছে, দাম আরেকটু কম হলে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য উপকার হয়।’

উদ্বোধনের সময় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, রমজান উপলক্ষে সাধারণ মানুষের খাদ্যতালিকায় যেসব পণ্য থাকে, সেগুলো যেন কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারে, তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুধ বিতরণের ব্যবস্থাও করা হবে। সারা মাস এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ক্রেতাদের দাম কমানোর দাবির প্রসঙ্গে জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য নিম্ন আয়ের মানুষকে বাজার থেকে কিছুটা কম মূল্যে গরুর মাংস ও ডিম দেওয়া। এখানে সরকারি কোনো ভর্তুকির ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নিয়ে উৎপাদন মূল্যে ডিম ও মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতার যদি ১০০ টাকাও সেভ হয়, তাহলেও আরেকটা কাজ হয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু: আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
  • গাজীপুরে অন্তঃসত্ত্বা পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু, স্বামী গ্রেপ্তার
  • ময়মনসিংহে কম মূল্যে গরুর মাংস–ডিম বিক্রির উদ্যোগ, দাম আরও কমানোর দাবি
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক যানচলাচল স্বাভাবিক, কয়েকটি কারখানায় ছুটি
  • গাজীপুরে নারী শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে মহাসড়ক অবরোধ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
  • জামালপুরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
  • ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ, গাড়িতে আগুন 
  • মাটি কামড়ে নিজের পেশায় টিকে আছেন ময়মনসিংহের মৃৎশিল্পীরা
  • তিন বছরে কাজ হয়েছে ৫৫ শতাংশ, দ্রুত চালুর দাবি এলাকাবাসীর