প্রাইম ব্যাংকের কোচ, ম্যানেজার ও অধিনায়ককে জরিমানা
Published: 4th, March 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) নতুন মৌসুমের প্রথম দিনেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রানআউটের একটি সিদ্ধান্ত ঘিরে ২০ মিনিট বন্ধ ছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। পরে অসদাচরণের কারণে প্রাইম ব্যাংকের কোচ, ম্যানেজার ও অধিনায়ককে জরিমানা করা হয়েছে।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসে রান নিতে গিয়ে রানআউটের শিকার হন ইরফান শুক্কুর। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ হন দলের কোচ তালহা জুবায়ের, ম্যানেজার দেব চৌধুরী ও অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর। তারা ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ শিপারের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং খেলোয়াড়দের মাঠ থেকে তুলে নেন।
পরে ম্যাচ সম্প্রচারকারীদের ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ইরফান শুক্কুর রান সম্পন্ন করেছিলেন। তবে কারিগরি সীমাবদ্ধতার কারণে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি, কারণ ম্যাচটিতে তৃতীয় আম্পায়ার ছিলেন না। ফিল্ড আম্পায়ার এ আই এম মনিরুজ্জামান সন্দেহের ভিত্তিতে রানআউটের সিদ্ধান্ত দেন, যা নিয়ে প্রাইম ব্যাংকের কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্ট আপত্তি জানান।
ম্যাচ শেষে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য কোচ তালহা জুবায়ের, ম্যানেজার দেব চৌধুরী ও অধিনায়ক ইরফান শুক্কুরকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি অধিনায়ক শুক্কুরকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ৩ ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।
তবে হট্টগোলের মধ্যেও জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। রূপগঞ্জ টাইগার্সের ২১৬ রানের লক্ষ্য তারা ৩ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায়। দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন শামিম পাটোয়ারি, যিনি ৯৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জেতান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড প এল ইরফ ন শ ক ক র
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক এমন শিশুবান্ধব
শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাঠ শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় বা ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মাধ্যমে। নীতিনির্ধারণসহ আমাদের দেশে প্রাইমারি শিক্ষার ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি আছে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে শিশুবান্ধব করে তোলার কথা, তা কি আমরা করতে পেরেছি? নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবায়নের চিত্র অনেক সীমিত বলতেই হয়। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমাদের দেখাল স্কুলকে কীভাবে শিশুবান্ধব করে তুলতে হয়। বিষয়টি সত্যিই দারুণ আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণামূলক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, এক যুগ আগে সরকারের বিদ্যালয়হীন গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চিরিরবন্দর উপজেলার কুশলপুর গ্রামের সুব্রত খাজাঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রকল্পের শর্তানুসারে গ্রামের দুই ব্যক্তি জমি দান করেন। তাঁদের পরিবারের সদস্য প্রয়াত শিক্ষকের নামে এ স্কুলের নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার ১০ বছরের মধ্যে প্রান্তিক অঞ্চলের এই স্কুল গত বছর বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে।
ভালো ফলের কৃতিত্ব থেকেও স্কুলটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে এর প্রকৃতিবান্ধব ও শিশুবান্ধব পরিবেশ নিয়ে। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই ইট বিছানো পথের দুই পাশে ঝাউগাছের সারি। সীমানাপ্রাচীরের সঙ্গে চারপাশে নানা রঙের ফুলের গাছ। বিদ্যালয়ের প্রাচীর, ভবনের দেয়াল, এমনকি ভবনের ছাদেও আঁকা হয়েছে বিভিন্ন ফুল, ফল, পশুপাখি, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সৌরজগৎ ও মানচিত্রের ছবি। প্রতিটি ছবির পাশে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুর নাম লেখা হয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে। শিক্ষার্থী-উপযোগী এমন পরিবেশ দেখতে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকেও আসছেন শিক্ষক-অভিভাবকেরা।
স্কুলটিতে আছে শহীদ মিনার, অভিভাবক বিশ্রামাগার, লাইব্রেরি কর্নার, সততা স্টোর, ছাদবাগান, ভবনের ছাদে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চ, ওয়াশ ব্লক, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ। শুধু তা-ই নয়, সপ্তাহে এক দিন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে স্কুলের পোশাকও দেওয়া হয়। সরকারি বেতনভুক্ত পাঁচজন শিক্ষকের পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চারজন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগে অর্থের জোগানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা ও আন্তরিকতা স্কুলটির এমন পরিবেশ তৈরিতে এবং সাফল্য অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা এবং শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তার উদাহরণই তৈরি করল এ বিদ্যালয়। আমরা আশা করব দেশের অন্য স্কুলগুলোর পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকেরা এ থেকে অনুপ্রাণিত হবেন। একটি প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কীভাবে শিশুবান্ধব করে গড়ে তোলা যায়, সেদিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন।