টেস্ট ক্রিকেটারদের যৌক্তিক বেতন বৃদ্ধি করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে। বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল সে প্রস্তাব পাস হয়েছে। মূলত টেস্ট ক্রিকেটারদের ফোকাস ধরে রাখতে এ সিদ্ধান্ত বিসিবির। শুধু বেতন নয়, উল্লেখ করার মতো ম্যাচ ফিও বাড়ছে। ছয় থেকে বাড়িয়ে আট লাখে উন্নীত করা হচ্ছে টেস্টের ম্যাচ ফি। ওয়ানডে চার এবং টি২০তে আড়াই লাখ টাকা ম্যাচ ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ দুই সংস্করণের ম্যাচ ফি ছিল তিন ও দুই লাখ টাকা করে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই বছর সাইকেলে ১৬টি করে টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। মুমিনুল হকরা সব ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ম্যাচ ফি পাবেন। মাসিক বেতন তো থাকছেই। মুমিনুল হক, সাদমান ইসলাম অনিক বা খালেদ আহমেদরা শুধু টেস্ট খেলেও বছরে কোটি টাকা উপার্জন করতে পারবেন বিসিবি থেকে। তিন সংস্করণ খেলা ক্রিকেটারদের পোয়াবারো। ম্যাচ ফি, বেতন, বোনাস মিলে বছরে ৩ কোটি টাকা উপার্জন করতে পারবেন মেহেদী হাসান মিরাজরা।
কেন্দ্রীয় চুক্তিও অনুমোদন করা হয়েছে সভায়। এক-দু’জনকে চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হবে। সৌম্য সরকার চুক্তিতে ফিরছেন। সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহানরা চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন।
গতকালের সভায় জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের চুক্তি নবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানান, ফিল সিমন্সসহ দেশি-বিদেশি কোচদের দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তি নবায়ন করতে বলা হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালে প্রধান কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে চুক্তি নিয়ে কথা বলেছেন ফাহিম। এবার অফিসিয়াল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা এবং কাজের পরিধি আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে চুক্তি নবায়ন করতে। ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেওয়া হবে নতুন চুক্তি। সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকেও ২০২৭ সাল পর্যন্ত সেটআপে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফাহিম জানান, দু’জন উঁচু মানের বিদেশি ফিল্ডিং কোচ নিয়োগ দেবেন তারা জাতীয় দল ও এইচপির জন্য। পাইপলাইন থেকে জাতীয় দলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে কোচিং স্টাফকে। পূর্বাচল শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু জানান, পূর্বাচলের স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের দাপট কমাতেই আইসিসির এমন নিয়ম—অভিযোগ অশ্বিনের
এ আলোচনা আগেও হয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই প্রান্ত থেকে দুটি নতুন বল ব্যবহার ব্যাটসম্যানদের জন্য খেলাটা অনেক সহজ করে দিয়েছে, এমন মত দিয়েছেন অনেক বোলার।
গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়া ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন সেই প্রসঙ্গ তুললেন আবারও। তবে এর সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন নতুন অভিযোগও। এই স্পিনার অভিযোগ করেছেন, আইসিসি এই নিয়ম করেছিল ভারতের স্পিনারদের দাপট কমাতে।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অশ্বিন দাবি করেন, ‘২০১৩-১৪ সাল পর্যন্ত (আসলে ২০১১ সাল পর্যন্ত) ওয়ানডেতে একটি বল ব্যবহার হতো। এরপর এক দিনের ক্রিকেটে নতুন নিয়ম চালু হয়, যেখানে পাঁচজন ফিল্ডার বৃত্তের মধ্যে থাকবে ও দুটি নতুন বলের ব্যবহার শুরু হয়। ভারতের স্পিনারদের দাপট কমাতে আইসিসি নতুন নিয়ম চালু করেছে। এটা আমার মত। আমি মনে করি, এটি খেলায় প্রভাব ফেলেছে। রিভার্স সুইং হারিয়ে গেছে। ফিঙ্গার স্পিনারদের ভূমিকা কমে গেছে।’
খেলা এত ধীরগতিতে চলছে, যেন এটি শুধু টেনে নেওয়া হচ্ছে। আজকালকার ক্রিকেটে ৫০ ওভারের সংস্করণের জন্য সত্যিই কোনো জায়গা আছে কি না, তা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন এসেছেরবিচন্দ্রন অশ্বিন৫০ ওভার ক্রিকেটে দুই বল ব্যবহারের শুরু থেকেই এটির বিপক্ষে ছিল ভারত। অশ্বিন আবার এই প্রসঙ্গ টেনেছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে। ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেছেন ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার।
এই অফ স্পিনার বলেছেন, ‘আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে আমি এক দিনের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছিলাম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দর্শকদের আকর্ষণ করে, এবং এর জনপ্রিয়তা বেশি। কারণ, ম্যাচ মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। আমি মনে করি, আফগানিস্তানের মতো দলের প্রথম শ্রেণির কাঠামো উন্নত হলে টেস্ট ক্রিকেটের চাহিদাও বাড়বে। কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটে কোনো প্রতিযোগিতা নেই।’
আরও পড়ুনতোমাদের বেতন হয় ভারতের কারণে—সমালোচকদের পাল্টা তোপ গাভাস্কারের৩ ঘণ্টা আগে২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই টুর্নামেন্ট নিয়ে আইসিসিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন অশ্বিন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ আইসিসির জন্য সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। এটি নিয়ে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, খেলা এত ধীরগতিতে চলছে, যেন এটি শুধু টেনে নেওয়া হচ্ছে। আজকালকার ক্রিকেটে ৫০ ওভারের সংস্করণের জন্য সত্যিই কোনো জায়গা আছে কি না, তা নিয়ে আমার মনে প্রশ্ন এসেছে।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি একঘেয়ে লাগছে অশ্বিনের