রোহিত শর্মার কি ভারতের দলে থাকা উচিত? কংগ্রেসের মুখপাত্র শামা মোহামেদ বলেছিলেন, না। তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সৌগত রায়। কিন্তু বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া এসব কথা ভালোভাবে নেননি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মাঝে ভারতের অধিনায়ককে নিয়ে এমন কথা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন দেবজিৎ।

আরও পড়ুন৬৫ বছর বয়সী স্পিনার একাই নিলেন ১০ উইকেট১৭ ঘণ্টা আগে

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। গতকাল দুবাইয়ে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারায় রোহিত শর্মার দল। এই ম্যাচে ১৫ রান করে আউট হন রোহিত। তারপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ রোহিতের সমালোচনা করে একটি পোস্ট করেন কংগ্রেস নেতা শামা, তুমুল সমালোচনার কারণে যেটি পরে মুছেও ফেলা হয়, ‘রোহিত শর্মা খেলোয়াড় হিসেবে যথেষ্ট স্থূলকায়। ওজন কমানো দরকার এবং অবশ্যই ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে আকর্ষণহীন অধিনায়ক। পূর্বসূরিদের সঙ্গে তুলনা করলে তার মধ্যে বিশ্বমানের এমন কী আছে? সে মাঝারি মানের খেলোয়াড় ও অধিনায়ক, সৌভাগ্যবশত ভারতের অধিনায়ক হয়েছে।’

শামার এই মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেস নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে জানায়, তাঁর এই মন্তব্যে দলের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটেনি এবং পোস্টটি মুছে ফেলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির নেতারা শামার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে তাক করে। বিজেপি নেতা শেহজাদ পুনাওয়ালা এক্স–এ টুইট করেন, ‘রাহুল গান্ধীর অধিনায়কত্বে যারা ৯০টি নির্বাচনে হেরেছে, তারা রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বকে আকর্ষণহীন বলছেন! তাহলে দিল্লিতে ৬টি ডাক, ৯০টি নির্বাচনে হার আকর্ষণীয় হলেও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় নয়। রোহিতের অধিনায়কত্বের ট্র্যাক রেকর্ড অসাধারণ।’

আরও পড়ুনছিলেন স্থপতি, বানাতে চেয়েছিলেন সিনেমা, এখন ক্রিকেটে ভারতের জয়ের নায়ক১৮ ঘণ্টা আগে

বিজেপি নেতা রাধিকা খেরাও ছেড়ে কথা বলেননি কংগ্রেস নেতা শামাকে। তাঁর উক্তি, ‘কী দুঃসাহস! এই একই কংগ্রেস দশকের পর দশক অ্যাথলেটদের অপমান করেছে, স্বীকৃতি দেয়নি, আর এখন ক্রিকেটের কিংবদন্তিকেও উপহাস করছে! রোহিত শর্মা বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। তোমাদের নেতা রাহুল গান্ধী তো নিজের দলেরও অধিনায়ক হতে পারেনি।’

তবে শামা মোহামেদের পক্ষেও লোকজন আছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য সৌগত রায় যেমন ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, তিনিও মনে করেন রোহিতের ভারত জাতীয় দলে থাকা উচিত নয়, ‘আমি একমত। এটা রাজনীতি নয়, ক্রিকেট। রোহিত শর্মাকে আর কত দিন ছাড় দেওয়া হবে? দুই বছরে একটি সেঞ্চুরি করে অন্য ম্যাচগুলোয় দ্রুত আউট হয়ে যাওয়াটা দলে তাঁর জায়গার পক্ষে কথা বলে না। দলে তাঁর কর্তৃত্বের জায়গাটা থাকা উচিত না। কংগ্রেস নেতা ঠিকই বলেছেন। এমনকি তার ওজন নিয়েও শঙ্কার জায়গা আছে। হ্যাঁ, তার ওজন বেশি। কিন্তু লোকে এসব পাত্তা দেয় বলে মনে হয় না।’

দল যখন আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলছে, তখন একজন দায়িত্ববান ব্যক্তির কাছ থেকে এমন তুচ্ছ কথা দুর্ভাগ্যজনক। এটা দল কিংবা খেলোয়াড়দের ওপর ব্যক্তিগতভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া

সৌগত রায় আরও বলেন, ‘আমরা যদি ফিট ও সামর্থ্যবান অধিনায়ক চাই, দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় আছেন যারা ভালো খেলছেন। ফিটনেসই প্রধান বিষয় হলে বুমরার মতো কেউ যে ফিট থাকলে দারুণ অধিনায়ক হতে পারে। এমনকি শ্রেয়াস আইয়ারেরও ভালো সম্ভাবনা আছে। কিন্তু রোহিত শর্মার দলে জায়গা থাকা অনুচিত।’

এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন ম্যাচে ২৫.

৩৩ গড়ে মোট ৭৬ রান করেছেন রোহিত। সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস।

বিসিসিআই অবশ্য তাঁদের অধিনায়ককে নিয়ে এমন মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব দেবজিৎ শামার মন্তব্য নিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে এ নিয়ে বলেছেন, ‘দল যখন আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলছে, তখন একজন দায়িত্ববান ব্যক্তির কাছ থেকে এমন তুচ্ছ কথা দুর্ভাগ্যজনক। এটা দল কিংবা খেলোয়াড়দের ওপর ব্যক্তিগতভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সবাই নিজেদের সেরাটা নিংড়ে দিচ্ছে এবং ফলও দেখা যাচ্ছে। আশা করি ব্যক্তিগত প্রচারের লক্ষ্যে লোকে এসব অবমাননাকর মন্তব্য পরিহার করবেন।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দুবাইয়ে আগামীকাল প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ও তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশির ভাগ মার্কিনের মনোভাব নেতিবাচক: সিএনএনের জরিপ

নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর গত কয়েক সপ্তাহে তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং যেভাবে দেশ পরিচালনা করেছেন, তাতে তাঁর প্রতি আমেরিকানদের নেতিবাচক মনোভাব আরও বেড়েছে।

সিএনএনের এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। এসএসআরএস দেশজুড়ে এই জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপে তিনটি বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয়। সেগুলো হলো ট্রাম্পের সঙ্গে কতটা একমত, ট্রাম্প যেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন সেগুলো সঠিক কি না এবং তাঁর নীতি দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারছে কি না।

জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কার্যক্রমের সঙ্গে একমত নন, ৪৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে করা সিএনএনের আরেকটি জরিপে প্রায় একই ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল। গত শুক্রবারের আগে সিএনএনের এবারের জরিপ শেষ হয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তীব্র বাগ্‌বিতণ্ডায় হয়, ভেস্তে যায় বৈঠক। তবে সিএনএনের এই জরিপে ওই বৈঠকের আগেই শেষ হওয়ায় এতে বৈঠকের কোনো প্রভাব পড়েনি।

জরিপে দেখা গেছে, রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্প এখনো দারুণ জনপ্রিয়। ট্রাম্প যেভাবে দেশ পরিচালনা করছেন, তার সঙ্গে ৯০ শতাংশ রিপাবলিকান একমত পোষণ করেছেন। যদিও ট্রাম্প এখনো একই রকমভাবে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অজনপ্রিয়। ৯০ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ট্রাম্পের দেশ পরিচালনার সঙ্গে একমত হতে পারেননি।

আরও পড়ুনট্রাম্প ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন, প্রথম দিনেই সই করবেন রেকর্ডসংখ্যক নির্বাহী আদেশে১৯ জানুয়ারি ২০২৫

অন্যদিকে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের ৬ জন ট্রাম্পের সঙ্গে একমত নন। তাঁদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ অসম্মত এবং ৪১ শতাংশ সম্মতি প্রকাশ করেছেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। জরিপে বেশির ভাগ মানুষ ট্রাম্পের নীতি ও দেশ পরিচালনার সঙ্গে সম্মত না হলেও প্রথম মেয়াদের তুলনায় ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে।

আরও পড়ুন‘সুবর্ণ যুগের’ প্রতিশ্রুতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের২০ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনক্ষমতা গ্রহণের পর ৭৯টি নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের ৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প ও তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশির ভাগ মার্কিনের মনোভাব নেতিবাচক: সিএনএনের জরিপ
  • লন্ডন সম্মেলন কি ট্রাম্পের মন জোগাতে পারবে
  • যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ইউরোপ
  • তামিমের সহায়তায় অবশেষে দল পেলেন লিটন
  • বাসরঘর থেকে আটক যুবক, ধর্ষণ মামলা