কোহলি ‘ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর’
Published: 4th, March 2025 GMT
দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কাল ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩০০তম ম্যাচ খেলেন বিরাট কোহলি। ওয়ানডেতে মাত্র ২২ জন খেলোয়াড় এই মাইলফলকের দেখা পেয়েছেন। তবে কোহলি এক জায়গায় আলাদা। বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে ওয়ানডেতে কোহলির চেয়ে বেশি ম্যাচ আর কেউ খেলেননি। টি-টোয়েন্টির এ রমরমা সময়ে বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলায় সবার একটু অনাগ্রহ থাকলেও কোহলি একদম ব্যতিক্রম। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলেও অন্য দুই সংস্করণে চুটিয়ে খেলছেন ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। কারণটা বলেছেন ভারতেরই কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। প্রতিনিয়ত উন্নতির ইচ্ছা, মাঠ ও মাঠের বাইরে ক্রিকেটের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার জন্যই কোহলি আলাদা, মনে করেন গাভাস্কার।
কোহলির ৩০০তম ওয়ানডের মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে স্টার স্পোর্টসে তাঁর প্রশংসা করে গাভাস্কার আরও একটি কথা বলেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর (আচার্য)’ হলেন কোহলি।
আরও পড়ুনমুশফিক–মাহমুদউল্লাহ কি আরও খেলবেন—জানতে চাইবে বিসিবি১৪ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছর হয়ে গেল কোহলির। দীর্ঘদিন ধরে কোহলির দাপিয়ে খেলা এবং নিজেকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার পেছনে রহস্য কী—জানতে চাওয়া হয়েছিল গাভাস্কারের কাছে।
টেস্টে প্রথম ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া গাভাস্কারের উত্তর, ‘আমার মনে হয়, গতকালের চেয়ে আজ আরও ভালো হব, এই ইচ্ছাটাই মূল কারণ। নিজের অর্জন নিয়ে সে কখনোই সন্তুষ্ট হয় না এবং সব সময় আরও বেশি কিছু করতে চায়। ভারতের হয়ে খেলায় তাঁর মধ্যে যে গর্ব শোভা পায়, সেটা সম্মানজনক। লাখো ক্রিকেটার আছেন, ভারতের হয়ে খেলা যাদের স্বপ্ন। সেটা হোক টেস্ট ম্যাচ, ৫০ ওভার ম্যাচ কিংবা টি-টোয়েন্টি। নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করা প্রতিটি খুদে ক্রিকেটারেই স্বপ্ন ও লক্ষ্য। এই লক্ষ্যকে জিইয়ে রাখাই কোহলির সব ম্যাচে ভালো করতে চাওয়ার চাবিকাঠি।’
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাস্কার।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক হল র
এছাড়াও পড়ুন:
২০ লাখ পাউন্ড লভ্যাংশ বিতরণের মাইলফলক অর্জন এসবিইউকের
২০ লাখ পাউন্ড লভ্যাংশ বিতরণের মাইলফলক স্পর্শ করল সোনালী বাংলাদেশ ইউকে লিমিটেড (এসবিইউকে)। বাংলাদেশের শেয়ারহোল্ডার অর্থ মন্ত্রণালয় ও সোনালী ব্যাংক পিএলসিকে এই লভ্যাংশ যথাক্রমে ৫১ ও ৪৯ শতাংশ বিতরণ করেছে অ-ব্যাংক আর্থিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এসবিইউকের এমন উন্নতি প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক স্থিতিশীলতা, কৌশলগত পুনর্বিন্যাস, বাংলাদেশের প্রতি আস্থার প্রমাণ ও নিয়মিত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মুবারেকের সঙ্গে বৈঠক করেন এসবিইউকের চেয়ারপারসন মো, আশাদুল ইসলাম ও সোনালী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারপারসন মো. মুসলিম চৌধুরী। বৈঠকে সচিব নাজমাকে লভ্যাংশ অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। এছাড়া এসবিইউকের প্রতিনিধিরা ব্যাংকিং লাইসেন্স হারানোসহ অতীতের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তারা ব্যাংক হিসেবে এসবিইউকের ঐতিহাসিক অধিকার পুনরুদ্ধার নিয়ে আলাপ করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংক পিএলসির সিইও ও এমডি মো. শওকত আলী খান, এসবিইউকের সিইও মাসুম বিল্লাহ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও যুগ্ম সচিব শেখ ফরিদ।
এসবিইউকের নেতৃত্ব সোনালী ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে এই বৈঠকটি এসবিইউকে এবং বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এসবিইউকের চেয়ারপারসন মো. আসাদুল ইসলাম। এ সময় তারা এসবিইউকের কৌশলগত দৃষ্টি এবং যুক্তরাজ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের আর্থিক চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে পূর্ণসেবা ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় এসবিইউকে। প্রতিষ্ঠার পর ব্যাংকটি থেকে খুচরা বা ডিটেইল ব্যাংকিং, বাণিজ্যিক আর্থিক সেবা এবং প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধা দেওয়া হতো। তবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ওঅপারেশনাল আনয়মের কারণে ১৯৯৯ সালে বিদেশি শাখার লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ফলে এটি সোনালী ট্রেড অ্যান্ড ফাইন্যান্স ইউকে লিমিটেড হিসেবে পুনর্গঠিত হয়।
২০০০১ সালে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড একটি নতুন ব্যাংকিং লাইসেন্সের অধীনে কাজ শুরু করে। যেটি ইস্যু করে ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অথোরিটি (এফএসএ)। এরপর ব্যাপক রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় এসবিইউকে। ফ্রেমওয়ার্কে ত্রুটির কারণে ২০১৬ সালে ব্যাংকটিকে ৩ দশমিক ২৫ মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করে ফাইন্যান্সিয়াল কন্ডাক্ট অথোরিটি অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল)। পরবর্তীতে নতুন জমা গ্রহণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা ও এএমএলের ওয়াচলিষ্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর ব্যাপক পুনরুদ্ধার উদ্যোগের মধ্যে ৩৩ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন পাউন্ড মূলধন প্রবাহিত হওয়ায় ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি ওয়াচলিস্ট থেকে বের হয়।
তবে চলমান রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে প্রুডেনশিয়াল রেগুলেশন অথোরিটির (পিআরএ) মাধ্যমে সোনালী বাংলাদেশ ইউকে লিমিটেডের ব্যাংকিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এই রেগুলেটরি জটিলতার মধ্যেও, এসবিইউকে ‘প্রজেক্ট ফিনিক্স’ এর অধীনে একটি কৌশলগত রূপান্তরে যাত্রা শুরু করে। ফলে ট্রেড ফাইন্যান্স ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসেবার দিকে মনোনিবেশ করে। ফলে এটি একটি নন-ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইনষ্টিটিউশনে (এনবিএফআই) পরিণত হয়। এই পরিবর্তনটি ২০২২ সালের আগষ্টে ব্যাংকিং অনুমোদন বাতিলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত হয় এবং পরবর্তীতে এটি সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশ ইউকে লিমিটেড নামে রূপান্তরিত হয়।
রূপান্তরের পর থেকে এসবিইউকে অসাধারণ আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে প্রি-ট্যাক্স মুনাফা হিসেবে ১ দশমিক ৫ পাউন্ড মিলিয়ন রিপোর্ট করে, যা ২০২৩ সালে ৮ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে। এটি তার কৌশলগত পুনর্গঠন, ব্যয়-কার্যকরী ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রমাণ। ২০২৩ সালে ট্রেড ফাইন্যান্স থেকে আয় প্রতি মাসে ১ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়, যা প্রতিষ্ঠানটিকে মোট ১ হাজার ১৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করতে সহায়তা করেছে। এটি বছরে ১০৬ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিফলন।
এছাড়াও অপারেটিং খরচ ২০২৩ সালে কৌশলগতভাবে ৩৭৭ মিলিয়ন পাউন্ডে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা পূর্বাভাসকৃত বাজেটের তুলনায় ৪ শতাংশ কম এবং বছরে ৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই আর্থিক উন্নতির কারণে এসবিইউকে তার শেয়ারহোল্ডারদের ২ মিলিয়ন পাউন্ড ডিভিডেন্ড দিতে সক্ষম হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে স্টেকহোল্ডারদের জন্য টেকশই মান দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে করেছে শক্তিশালী।