অটোরিকশার জন্য কেউ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারেন না। সড়কে দ্রুতগতিতে চলাচল করায় প্রায়ই তারা গায়ের ওপর উঠিয়ে দেয়। অনেক সময় অঙ্গহানির ঘটনাও ঘটে। বর্তমানে যাত্রীর চেয়ে সড়কে অটোরিকশার সংখ্যা অনেক বেশি। আবার এসব যানবাহন ঘিরে অনেক জায়গায় চলে চাঁদাবাজি। কথাগুলো কুমিল্লার মুরাদনগর বাজারের ব্যবসায়ী আবু কাউছারের।
উপজেলার সব সড়ক এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দখলে। প্রধান সড়ক ছাপিয়ে গ্রামের অলিগলিতে বেপরোয়াভাবে চলছে এসব যানবাহন। দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব যানবাহনের সংখ্যাও বাড়ছে। এতে প্রায়ই যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষের। অভিযোগ উঠেছে, নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে চালকরা বেপরোয়া গতিতে চালানোয় ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অনভিজ্ঞ ও কিশোরের হাতে অটোরিকশা চালানোয় দুর্ঘটনা বাড়ছে। বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের কারণে ঝুঁকি আরও বেড়েছে। এ ভোগান্তি ও দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে এবং সড়কে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন উপজেলার বাসিন্দারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কে বেপরোয়াভাবে অটোরিকশা চলছে। কে কার আগে যাবে, চলছে সেই প্রতিযোগিতা। বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের মধ্যে এ প্রতিযোগিতা বেশি। তা ছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো রাস্তায় যত্রতত্র রাখার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এসব রিকশায় লাগানো হয়েছে হাইড্রোলিক হর্ন ও এলইডি লাইট। এর ফলে হচ্ছে শব্দ দূষণ। এলইডি লাইটের কারণে রাতে চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে।
চালক আনোয়ারের ভাষ্য, সারাদিন অটোরিকশা চালিয়ে ৬-৭শ টাকা থাকে। এ টাকা দিয়েই সংসার চলে। নির্ধারিত জায়গায় অটোস্ট্যান্ড থাকলে সবার জন্য ভালো। যাত্রী ও চালকদের আইন মানা উচিত।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয় জানিয়ে স্কুল শিক্ষার্থী সাফায়াত ইসলাম বলছিল, ‘অনেক সময় আমাদের শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে দেয়। অটোরিকশার সঙ্গে লেগে আমাদের অনেকের স্কুল ড্রেস ছিঁড়ে গেছে।’ পথচারী জোনায়েদ বক্তার ভাষ্য, ব্যাটারিচালিত এসব অটোরিকশার কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ সড়কে চলাচল করতে ভয় পায়। প্রতিদিনই মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের কাছে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা সদরের স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেন বলেন, ভোর থেকে গভীর রাত অবধি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপজেলা সদরের ব্যস্ততম সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এরা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া। অবৈধ ইজিবাইক ও রিকশা এখন উপজেলার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চেষ্টা করেও জনবলের অভাবে এসব যানবাহন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, এলাকায় পাঁচ হাজারের বেশি অটোরিকশা রয়েছে।
যদিও মুরাদনগরে ১০ হাজারের বেশি অটোরিকশা রয়েছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, পৌরসভা না থাকায় অটোরিকশাগুলো ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ন্যস্ত করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করা হবে। এতে জনগণের ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন ব যবস থ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিম্নমানের ইট অপসারণ

মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুঞ্জর গ্রামে সড়কের কাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের ইট ও খোয়া অপসারণ করা হয়েছে। গত শুক্রবার ইউএনও আবদুর রহমান ও উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ পরিদর্শনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অনুপযোগী ইটের খোয়া সরিয়ে শনিবার সকাল থেকে গুণগত মানের ইট দিয়ে ওই সড়কের নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করেন। মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার সড়কের কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলী ওই সড়ক পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। পরে ঠিকাদারকে সড়ক নির্মাণকাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের সামগ্রী সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ মোতাবেক ঠিকাদার শুক্রবার নিম্নমানের ইট ও খোয়া সরিয়ে শনিবার থেকে ভালো মানের ইট ও খোয়া দিয়ে পুনরায় সড়কের কাজ শুরু করেন।
উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ জানান, সড়ক নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে ঠিকাদার কাজে অনিয়ম করেছিলেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মুরাদনগর ইউএনও আবদুর রহমান বলেন, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার উন্নয়ন কাজে এভাবে নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আর্থিক সাক্ষরতায় বাংলাদেশ কতদূর এগোল
  • নিম্নমানের ইট অপসারণ