বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় কেন যেন কান্না পাচ্ছে শান্তর। মায়ের মুখটাও মলিন। বড় বোন নূপুর আর মা পেছন পেছন শান্তর সঙ্গে রাস্তায় এসে দাঁড়ালেন। তিনজনের চোখেই জল টলমল করে, কেউ কারও চোখে চোখ রাখতে সাহস পাচ্ছে না। শান্ত অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে তড়িঘড়ি করে উঠে বসল। নূপুর শান্তর কাছে এসে হাতে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে বললেন, ‘পথে ক্ষুধা লাগলে কিছু খেয়ে নিস। কোনো একটা চাকরির চেষ্টা করিস।’ এবার আবার শান্তর গন্তব্য ঢাকা শহর।
কয়েক বছর আগে পড়াশোনা শেষ করে বাড়িতে চলে এসেছিল। অনার্স প্রথম বর্ষে থাকা অবস্থায় সহপাঠী ঝুমুরের সঙ্গে শান্ত প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অনার্সের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শেষে হঠাৎ ঝুমুরের বিয়ে হয়ে যায়। এ খবর শান্তকে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দেয়। দিশা হারিয়ে ফেলে। কী করবে, কী করবে না বুঝতে পারে না। দ্রুতই শান্ত অনেকটা ভেঙে পড়ে। অন্য কিছুতেই আর মন বসে না তার।
শান্তদের যৌথ পরিবার। তারা তিন ভাই, এক বোন। বাবা নেই, মা আছেন। দুই ভাই বিয়ে করেছেন। কয়েক মাস হয়ে গেল শান্ত ঢাকায় এসেছে। এখনও কাজ খুঁজে পায়নি। এক সন্ধ্যায় তার রুমমেট তাকে ভিজিটিং কার্ড দিয়ে পরের দিন একটি অফিসে যেতে বললেন। রুমমেট এতটুকু আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘তুমি যাও, চাকরিটা হবে; আমি বলে রেখেছি তোমার কথা।’ পরদিন সকালে তড়িঘড়ি করে না খেয়েই বেরিয়ে গেল শান্ত। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে তার চাকরি হলো। কয়েকদিন যেতে না যেতেই সে বুঝতে পারল এ কাজে অনেক চাপ। টার্গেট সম্পূর্ণ না হলে অনেক কথা শুনতে হয়।
একদিন ফিল্ড থেকেই দুপুরে বাসায় চলে এলো। শান্তর মনিটরিং অফিসার শান্তকে একের পর এক কল দিয়ে যাচ্ছেন। মোবাইল সাইলেন্ট করে শুয়ে আছে। ধরে কী বলবে! উত্তর জানা নেই তার। কোনো কিছুই যেন মাথায় কাজ করছে না। কি যেন চিন্তা করতে করতে পাঁচ তলা ভবনের ছাদে যায়। ছাদ থেকে নিচে তাকিয়ে দেখে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছু একটা ঝামেলা হচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষের সমাগম বাড়ছে। কেউ ঝগড়া করছে, কেউ দাঁড়িয়ে শুনছে। পাশে চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ চা-সিগারেট খাচ্ছে। ঝগড়া শেষে যার যার স্থানে চলে যায়। এসব দেখে শান্ত একটি অনুধাবন করল– এই কঠিন শহরে আসলে কেউ কারও নয়, যার যার সমস্যা তাকে সমাধান করতে হয়। এ কথা ভাবতে ভাবতে সে আবার কাজের উদ্দেশে পা বাড়ায়…। v
সুহৃদ ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটি
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল জাপানে
গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের কবলে পড়েছে জাপান। এমন পরিস্থিতিতে আগুন নেভাতে দুই হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করেছে দেশটি। সেই সঙ্গে ৪ হাজার ৬০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে দেশটির প্রধান দ্বীপ হনশুর পূর্ব উপকূলের এ ভয়াবহ দাবানলে অন্তত একজন মারা গেছেন। জাপানের অগ্নিনির্বাপণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, ওফুনাতো শহরের কাছে আগুন প্রায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে।
টোকিওসহ জাপানের ১৪টি অঞ্চলের দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন। আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনীসহ ১৬টি হেলিকপ্টার। জাপানের কর্মকর্তাদের মতে, এখন পর্যন্ত এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অন্তত তিন হাজারের বেশি মানুষ। খবর- আলজাজিরা