Samakal:
2025-03-03@23:25:51 GMT

কবিতা

Published: 3rd, March 2025 GMT

কবিতা

ভুলগুলো ভুল পথে 
তুহিন বিশ্বাস 

ঝরে ঝরে পড়া পাপড়িগুলো ফিরে আসুক 
জানুক বিচ্ছিন্ন সম্পর্কে রক্তক্ষরণের যন্ত্রণা  
আর শূন্যপুরে অন্তরাত্মার নষ্টকষ্ট মহাকাব্য। 

স্মৃতিরা অস্তিত্বের লড়াইয়ে বারংবার পরাস্ত
ইচ্ছেগুলো নির্বাসনে, স্বপ্নের দরজাটাও বন্ধ 
ট্রেনের অচল ইঞ্জিন, বগিগুলো নিথর নিস্তব্ধ। 

জরাজীর্ণ ডায়েরির আমি’র তুমিটা নিরুদ্দেশ 
সকল মিথ্যে অভিমান বড্ড কুৎসিত, জটিল 
ভুলগুলো ভুল পথে হেঁটে হেঁটে রক্ত ঝরায়। 

ভাঙা মনের কার্নিশে সন্দেহ ভাইরাসের রূপ
অন্ধের বাজারে আলো প্রতিষ্ঠা নিছকই স্বপ্ন 
ঝরে পড়া পাপড়িও আজ অনুতপ্ত অবেলায়। 

 

ঘেঁটুফুলের বসন্ত
নবী হোসেন নবীন

বসন্তের চিঠি নিয়ে ফোটে ঘেঁটুফুল
গাছে গাছে থোকা থোকা আমের মুকুল।
মহানন্দে অলিকুল চুমিয়া মঞ্জরি,
বাসন্তী গিতালি গায় গুঞ্জরি গুঞ্জরি।
ঘেঁটুফুলে কেউ কভু নাহি গাঁথে মালা
বুকে তার নেই তবু কোনো দুঃখ জ্বালা।
প্রাণ খোলে হেসে বলে সাদা ঘেঁটুফুল
রাঙাতে পারি না তব প্রেয়সীর চুল।
চরণের তলে যবে পেয়ে গেছি ঠাঁই
প্রফুল্ল মনে আমার কোনো দুঃখ নাই।
তোমার পথের ধারে চরণের তলে
পড়ে থাকা পাপড়ি মোর দুই পায়ে দলে।
হেসে খেলে চলে যাও করে কলরোল
প্রিয়ার খোঁপায় গুঁজে আমের মুকুল।
আমাকে পিষে যখন যাও অভিসারে
গর্বে বুক ভরে যায় তব পদভারে।

 

জীবন ও মৃত্যু
শাহরিয়ার কাসেম

বাঁশের শুকনো পাতার মচমচে শব্দে
আঁতকে উঠে আমাদের জীবন।
অন্তঃসারশূন্যতায় কেটে যায় শৈশব কৈশোর। 
দূর্বাঘাসে শিশির কণার মতো
ঝরে যায় জীবনের লালিত স্বপ্ন। 
দিগ্বিদিক ঘুরছে জীবনের আশার প্রতিচ্ছবি। গন্তব্য না পেয়ে বারবার একই পথ ধরে
ফিরে আসে পথিক। 
মৌনতা ভেঙে পাড়ি জমাই
জাগতিক কোনো প্রান্তে।

প্রকৃত পক্ষে আমরা কোথাও যাই না–
বরং চলে যাই মৃত্যুর খুব কাছাকাছি।

 

অ্যানিমেটেড জীবন
মোরশেদুল ইসলাম

এবং বসন্ত আসে, আমাদের চলে যায় রং
সোনার জীবন থামে ক্যালেন্ডারের বর্ণিল পাতা।

পৌষের পরশে যারা গিয়েছে হাইবারনেশনে
আড়মোড়া ভেঙে ইলিয়নের পাঞ্জাবি পরে,
ব্যাকুল বুনো ফুলের সুবাস দমকা হাওয়ায়
সরব উচ্ছ্বাস ভ্রমরের আদৃত গুঞ্জন;
প্রকৃতির প্রাণস্পন্দন চেয়ে চেয়ে দেখে প্রেমিক
কানায় কানায় প্রেমেভরা নদী মায়াময়।
পাখিদের পালকে সুইট সিক্সটিনের জেল্লা
কণ্ঠে সুরের মূর্ছনা আপ্লুত নিসর্গ মন,
বাদ যায় না ভার্চ্যুয়াল বলয়
স্বপ্নের মতো এসে চলে যায় স্বপ্নের ন্যায়।
ফেরারি ওল্ড হলে ক্যাডিলাক, রোলস রয়েসের
স্বপ্ন কবে কোথায় ছেড়েছে আমাদের?

মধু বিলানো ফুলের ওপরে বিরহ ঘোরে 
অতল মুগ্ধ এই অ্যানিমেটেড জীবন।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘প্রত্যাখ্যাত’ ইউক্রেন রক্ষায় হচ্ছে নতুন জোট

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যাখ্যাত ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ জোটে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ছাড়াও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থাকবে। পাশাপাশি তারা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করারও চেষ্টা করবে। ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ও রাশিয়ার হাত থেকে ইউক্রেনকে রক্ষায় চার দফা কর্মপরিকল্পনাও ঘোষণা করেন স্টারমার। লন্ডনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় অন্য নেতাদের সঙ্গে এক ঐতিহাসিক সম্মেলনের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। 

সম্মেলনে স্টারমার বলেন, ‘আমরা আজ ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে।’ জেলেনস্কি বলেন, তিনি ‘শক্তিশালী সমর্থন’ অনুভব করছেন। এ সম্মেলনে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের ইউরোপীয় ঐক্য দেখা গেছে, যা অনেক দিন ধরে দেখা যায়নি।’ হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাগ্বিতণ্ডার দুই দিন পর এ সম্মেলন হলো। জেলেনস্কি বলেন, ‘একটি সত্যিকার শান্তি ও নিশ্চিত নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তি খুঁজতে আমরা ইউরোপে সবাই একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।’ 

সোমবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন স্টারমার পাঁচ হাজার আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ইউক্রেনকে অতিরিক্ত দুই বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করেন। এর আগে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের মুনাফা থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ডের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। স্টারমার বলেন, ‘আমাদের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা এমন কোনো দুর্বল চুক্তি গ্রহণ করতে পারি না, যা রাশিয়া সহজেই লঙ্ঘন করতে পারে। চুক্তি হতে হবে শক্তিশালী।’ 

ইউক্রেনের সুরক্ষায় প্রস্তাবিত জোট বা ‘কোয়ালিশন অব উইলিংয়ে’ যোগ দিতে কোন কোন দেশ সম্মত হয়েছে, তা স্টারমার জানাননি। তিনি জানান, যারা অঙ্গীকার করেছেন, তারা জরুরি ভিত্তিতে কাজ করবেন। যুক্তরাজ্য তার অঙ্গীকার রক্ষা করবে। তিনি বলেন, এ সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন হবে এবং রাশিয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে মস্কোকে কোনো শর্ত নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হবে না। ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার যা ঘটেছে, সেটি কেউ দেখতে চায়নি। কিন্তু আমি মনে করি না যে, যুক্তরাষ্ট্র অবিশ্বস্ত সহযোগী।’ 

সম্মেলনে যোগ দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে আছে– ফ্রান্স, পোল্যান্ড, সুইডেন, তুরস্ক, নরওয়ে, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, ফিনল্যান্ড, ইতালি, স্পেন ও কানাডা। ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েন। তিনি বলেন, ইউরোপকে ফের অস্ত্রে সজ্জিত করার জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। একই মত দেন ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট্টেও। 

রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনে কিছু ক্ষেত্রে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। এ যুদ্ধবিরতির অনুকূলে বিমান, সাগর ও জ্বালানি স্থাপনায় আক্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে স্থলভাগে যুদ্ধ চলতে থাকবে। সোমবার ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ইমানুয়েল মাখোঁ ও তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। ফরাসি মন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারট বলেন, এ ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির ফলে এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আস্থার সঙ্গে কাজ করবেন কিনা বা চুক্তির প্রতি তাঁর অঙ্গীকার আছে কিনা। 

ইউক্রেন তার ভূমি ছাড় দেবে না: জেলেনস্কি
ওভাল অফিসে বাকবিতণ্ডার পরও যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন বলে রোববার জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে রুদ্ধদ্বার আলোচনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, কোনো চুক্তিতে ইউক্রেন তার ভূমি ছাড় দেবে না। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তিতে সম্মতির কথাও জানান জেলেনস্কি। 

পুতিনের সঙ্গে কথা হয়েছে: ট্রাম্প
চলমান প্রেক্ষাপটে আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাফাই গেয়েছেন ট্রাম্প। সোমবার সিএনএন জানায়, ট্রাম্প বলেছেন, রুশ নেতার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, তিনি (পুতিন) যুদ্ধের সমাপ্তি চান। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। আমরা আবারও কথা বলেছি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ