টিসিবির কার্ড বিতরণ নিয়ে সন্দেহ, ঘেরাও-অবরোধ
Published: 3rd, March 2025 GMT
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে যশোরের মনিরামপুরে সড়ক অবরোধ ও ঘেরাও করেছে হাজারো জনতা। গতকাল সোমবার দুপুরে পৌর ভবনের সামনে এ বিক্ষোভ হয়। এ সময় বক্তারা অনিয়মের জন্য পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ইউএনও নিশাত তামান্নাকে দায়ী করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁকে প্রত্যাহারের দাবি তোলেন। পরবর্তী সময়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় সোমবার কোনো পণ্য বিক্রি করতে পারেনি টিসিবি। এ নিয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দেয়।
পৌরসভা সূত্র জানায়, মনিরামপুর পৌর এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য তিনজন ডিলারকে ২ হাজার ৭৭২টি কার্ড বরাদ্দ করা হয়। সোমবার সকাল থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় প্রতি কার্ডের বিপরীতে ৫৪০ টাকার বিনিময়ে পাঁচ কেজি চাল, এক কেজি চিনি, দুই লিটার তেল ও দুই কেজি ডাল বিক্রির কথা ছিল। ভোর থেকেই নির্ধারিত জায়গাগুলোতে পণ্য নেওয়ার জন্য বাড়তি মানুষের ভিড় হয়। যে কারণে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা পণ্যসামগ্রী বিক্রি বন্ধ করে দেন। এ সময় মানুষের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়।
পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মফিজুর রহমানসহ কয়েকজন জানিয়েছেন, ইতোপূর্বে এখানে কার্ড বরাদ্দ হয়েছিল ৩ হাজার ৩০০টি। এবার বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮২২টি কার্ড। এ কারণে কার্ড না পাওয়া মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। হাজারো নারী-পুরুষ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভা ভবন ঘেরাও করেন। পরে তারা যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা এ ঘটনার জন্য দোষারোপ করেন পৌর প্রশাসক ও ইউএনও নিশাত তামান্নাকে। তাঁর প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় বিক্ষোভে।
সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান ইউএনওকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। সেখানে আরও বক্তব্য দেন পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্বাস উদ্দিনসহ অন্যরা। সড়ক অবরোধের কারণে দু’পাশে যানজট
দেখা দেয়। পরে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুম, থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ইউএনও নিশাত তামান্না এ বিষয়ে বলেন, ২ হাজার ৬৭৬টি টিসিবির কার্ড পাওয়া গেছে। এটি বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮২২ জনের মধ্যে। অবশিষ্ট কার্ড বিতরণ না করায় ভুক্তভোগীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শিগগিরই যাচাই-বাছাই শেষে বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স মব র র জন য অবর ধ প রসভ ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।
বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগেবক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।