বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি বাতিলে আলটিমেটাম
Published: 3rd, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদ্যঘোষিত নাটোর জেলা কমিটি ১২ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল না করলে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে পদবঞ্চিতসহ একটি পক্ষ। গতকাল সোমবার বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। এ সময় তারা আগের আহ্বায়ক কমিটি পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৫ জানুয়ারি ২৯৫ জনকে সদস্য করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে কেন্দ্রীয় সব কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা। কিন্তু আগের কমিটি বিলুপ্ত না করে হঠাৎ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে দুই শতাধিক সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। ছয় মাসমেয়াদি এ কমিটির বেশির ভাগ সদস্য আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন না। পরিবারতন্ত্র এবং একই ব্যক্তি একাধিক স্থানে রেখে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা সংগঠনের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নাটোর জেলার আগের কমিটির সদস্য সচিব মশিউর রহমান ফুয়াদ বলেন, ছাত্রদের ন্যায়সংগত দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে ১২ ঘণ্টার মধ্যে নবগঠিত কমিটি বাতিল করতে হবে। অন্যথায় নাটোরের রেলপথ ও সড়কপথ অবরোধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আগের কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক সরকার, সদস্য মেহেদী হাসান, মিনহাজুল আবেদীন, শাহরিয়ার তামিম, সুব্রত দেবসহ পদবঞ্চিতরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবগঠিত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ওবায়দুল্লাহ মিম বলেন, সংবাদ সম্মেলনে হাতে গোনা দুই থেকে তিনজন আন্দোলনকারী ছিলেন। তারা নতুন কমিটিতেও রয়েছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির দু’জনকেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে দেখলাম, যা দুঃখজনক। তিনি আরও বলেন, নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বা নামে কোনো প্রকার অরাজকতা কিংবা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হলে কঠোরভাবে তা প্রতিরোধ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কম ট র কম ট কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, বন্ধ মানবিক সহায়তাও
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ঘরবাড়ি ও তাঁবুর মতো আশ্রয়কেন্দ্রও ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার দেশটি। পাশাপাশি আট সপ্তাহ ধরে উপত্যকায় খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছে।
আলজাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাতের কাছে একটি তাঁবুতে তিন শিশু এবং গাজা শহরের একটি বাড়িতে এক নারী ও চার শিশু নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক এক হামলায় স্থানীয় সাংবাদিক সাঈদ আবু হাসানাইনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ২৩২ সাংবাদিক নিহত হলেন।
গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার তারেক আবু আযুম বলেন, অবরুদ্ধ উপত্যকা স্পষ্টতই ইসরায়েলি সেনা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের সাক্ষী হচ্ছে। এখানকার অক্ষত ও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীর পরিচালনাকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘ইসরায়েলের আক্রমণের কোনো বিরতি নেই, কোনো করুণা নেই, কোনো মানবতা নেই।’
প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তা অবরোধ করে রাখায় গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এটিকে জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘ফিলিস্তিনি জীবনের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসাবশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা এখন সম্ভবত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামলা শুরুর পর ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অপুষ্টির সম্মুখীন নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক ও বিপর্যয়কর ক্ষতির কথা তুলে ধরেছে। তারা অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল এবং শিশুর খাবারের অভাবের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলের গাজায় সাহায্য পাঠাতে অব্যাহত অস্বীকৃতি ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আদালতের একটি আদেশকে লঙ্ঘন করে। সেই আদেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহার রোধে জরুরি ভিত্তিতে উপত্যকায় সাহায্য পৌঁছানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) আগামী সপ্তাহে হেগে অনুষ্ঠিত গণশুনানির একটি সূচি প্রকাশ করেছে। সেখানে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ, এনজিওর কার্যকলাপকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলের আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া এ শুনানির আগে প্রায় ৪৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা লিখিত বিবৃতি জমা দিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, বুধবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫১ হাজার ৩০৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৬ জন আহত হয়েছেন।