Samakal:
2025-03-03@22:36:11 GMT

ফের ফুটপাত বাণিজ্যে চসিক

Published: 3rd, March 2025 GMT

ফের ফুটপাত বাণিজ্যে চসিক

দখলমুক্ত ফুটপাত নাগরিকের অধিকার। আইন অনুযায়ী এই অধিকার রক্ষার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। অথচ চট্টগ্রামে ফুটপাত বাণিজ্যে লিপ্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে দেওয়া ইজারায় ফুটপাত, নালা ও উদ্যানে অন্তত গড়ে উঠেছে তিন শতাধিক দোকান। এগুলো উচ্ছেদে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ফুটপাত, জলাশয় ও উন্মুক্ত স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে আবারও টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়েছে। এতে ৪ শতাধিক আবেদন পত্র জমা পড়েছে। আবেদনের অধিকাংশই বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে অতীতের মতো ফুটপাত, নালা, উদ্যানে দোকান নির্মাণ ও বিলবোর্ড ব্যবসার হিড়িক পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের দাবি, সৌন্দর্যবর্ধনে যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে শুধু কাজ দেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চসিক এলাকায় বিভিন্ন সড়ক বিভাজক, ফুটপাত, ফুটওভার, ফ্লাইওভারের ওপর ও নিচের অংশ, পরিত্যক্ত খালি স্থান, উন্মুক্ত স্থান, জলাশয়ে সৌন্দর্যবর্ধন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রস্তাব আহ্বান করা হয়।

দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডকে ক্লিন, গ্রিন ও স্বাস্থ্যকর সিটির আওতায় আনতে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মেয়র। দরপত্রে ৯টি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে– সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে চসিক অর্থায়ন করবে না। সৌন্দর্যবর্ধনের বিনিময়ে বিজ্ঞাপনী ফলক স্থাপন করতে পারবে ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান। তা ছাড়া দৃষ্টিনন্দন, পরিবেশবান্ধব ও দেশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রস্তাবকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২টি ওয়ার্ডে চার শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। চট্টগ্রাম নগরের সড়ক বিভাজকে (মিড আইল্যান্ড) সৌন্দর্যবর্ধন ও ফুটপাতে যাত্রীছাউনি নির্মাণে অনুমোদন চেয়েছে জে এম পাবলিসিটি। বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানটির মালিক চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তীর স্ত্রী নিহার সুলতানা। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও চসিকে বিলবোর্ড বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
টাইগার পাস এলাকার এক যুবদল নেতা বলেন, এর আগে দরপত্র কেনার অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। তার পরও দুটি এলাকায় কাজ পাওয়ার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। তাঁর জানা মতে, অধিকাংশ আবেদনই করেছেন বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা।

এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়নের জন্য নগরের ৪১টি এলাকা ইজারা দিয়েছিলেন সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। কাজ পাওয়াদের অধিকাংশ ছিলেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতা, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও সাংবাদিকের প্রতিষ্ঠান। এর পর ছয় মাস সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করা আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম সুজনের সময় নগরের ১২টি জায়গা ইজারা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়টিই পেয়েছিলেন প্রশাসকের ঘনিষ্ঠ দলীয় লোকজন ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরে মেয়র রেজাউল করিমের সময়ও ফুটপাত ইজারা দেওয়া হয়। তবে দরপত্র ছাড়াই এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
চসিকের সৌন্দর্যবর্ধন কাজ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কেন দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনের লোকবল নেই। রক্ষণাবেক্ষণের সামর্থ্যও নেই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিলে তারা রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। তবে দলীয় বিবেচনায় কেউ কাজ পাবে না বলে তিনি দাবি করেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তা বা ফুটপাত বন্ধ করে কোনো কিছু অনুমোদন দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে কমিটি গঠন করা হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দরপত র র জন য নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার বাস্তবায়নে প্রকল্প, ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি টাকা

ঢাকা ওয়াসায় ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের ফেজ-৩’ এর আওতায় সায়দাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ফেজ-৩) প্রকল্পের সংগ্রহ- কম্পোনেন্ট ১- ইনটেক, কাঁচা জল পাম্পিং স্টেশন (আরডব্লিউপিএস) এবং কাঁচা জলের পাইপলাইন (আরডব্লিউপি) কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪২১ টাকা।

সূত্র জানায়, ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক ঢাকা শহরে বসবাসকারী প্রায় দুই কোটি জনসাধারণের জন্য পানি সরবরাহ সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে মোট পানি সরবরাহের প্রায় ৭০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে এবং প্রায় ৩০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহারের ফলে পানির স্তর প্রতিবছর প্রায় ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে; যা টেকসই উন্নয়নের সাথে সাংঘর্ষিক। 

২০৩০ সালের মধ্যে ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে পানি সরবরাহের পরিমাণ ৭০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-১ ও ফেজ-২, পদ্মা পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়বানাধীন রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, ঢাকা মহানগরীতে বসবাসকারী জনসাধারণের জন্য একটি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প (ফেজ-৩)’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই প্রকল্পের প্যাকেজ-১ এর আওতায় ইনটেক, দৈনিক ৯৫.০০ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পিং স্টেশন এবং ২৭ কি. মি. দীর্ঘ ২টি অপরিশোধিত পানির পরিচালন লাইন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া, প্যাকেজ-২ এর আওতায় দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন পানি শোধনাগার ও স্লাজ শোধনাগার এবং প্যাকেজ-৩ এর আওতায় ৩৫০ মিমি হতে ২০০০ মিমি ব্যাসের প্রায় ৫৪ কিলোমিটার পরিশোধিত পানির বিতরণ নেটওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পের মূল ডিপিপি'তে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৫৯৭.৩৬০৫ কোটি এবং ১ম সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৭৫১৮.০২৭৫ কোটি টাকা; যার মধ্যে জিওবি খাতে ২৬২৫.২৩ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য খাতে ৪৮৬২.৭৯ কোটি টাকা ও ঢাকা ওয়াসার নিজস্ব তহবিল খাতে ৩০.০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কর্তৃক ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকল্পটির অনুমোদন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর তারিখে প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর তারিখে প্রকল্পটির ১ম সংশোধনী একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর তারিখে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রকল্পটির প্রশাসনিক আদেশ জারী করা হয়।

প্রকল্পের অর্থায়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ও ফ্রেন্স উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এজেন্সিজ ফ্রান্সাইজ ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি) এর সঙ্গে ২০১৮ তারিখে ১৬ মে তারিখে ১১৫ মিলিয়ন ইউরোর, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এর সঙ্গে ২০১৮ সালের ৪ জুন তারিখে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর, জার্মান উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা কেআইডব্লিউ এর সঙ্গে ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর তারিখে ৯০ মিলিয়ন ইউরোর ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর পাশাপাশি ডানিডা সাসটেইনাবল ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার ফ্যাইন্যান্স (ডিএসআইএফ) এর সঙ্গে ২০১৯ ০৩ অক্টোবর তারিখে ১৮৮ মিলিয়ন ইউরোর জি টু জি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ঋণচুক্তিগুলোর অতিরিক্ত আরও ২০০ মিলিয়ন ইউরো এএফডি থেকে, ৯০ মিলিয়ন ইউরো ইবিআই থেকে, ৭০ মিলিয়ন ইউরো কেএফডব্লিউ থেকে এবং ১১২ মিলিয়ন ইউরো ডিএসআইপি থেকে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে, প্যাকেজ-১ এর ব্যয়ভার এএফডি,ইবিআই, কেআইডব্লি  প্রদত্ত ঋণ সহায়তা থেকে নির্বাহ করা হবে।

ঋণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এএফডি’র প্রকিউরমেন্ট গাইড লাইন প্যাকেজ-১ এর ঠিকাদার নিয়োগের জন্য প্রণীত প্রিকোয়ালিফিকেশন ডকুমেন্টের উপর এএফডি’র অনাপত্তি ভিত্তিতে ২০২২ সালের ১৮ মার্চ তারিখে প্রিকোলিফিকেশন বিড আহবান করা হয়। দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ, মুল্যায়ন ও বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মুট ম্যাকডোনাল্ড লিমিটেডকে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট (পিএমসি) হিসেবে নিয়োগ করা হয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়)।

বর্ণিত প্যাকেজের প্রিকোয়ালিফিকেশন বিডের  বিপরীতে মোট ১৭ টি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলের শেষ সময় ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। এ সময়ের মধ্যে ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিকোয়ালিফিকেশন বিড দাখিল করে। এরমধ্যে ৩টি প্রতিষ্ঠান নন-রেসপন্সিভ হয়। বাকি ৩টি প্রতিষ্ঠানকে রেসপন্সিভ ঘোষণা করা হয়।

প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধাপ সম্পন্ন করে সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে যৌথভাবে সিএমইসি-ওয়াইআরইসি-এসএমইডিআইকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। প্রকল্পে ভ্যাট ও এআইটিসহ মোট ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪২১ টাকা।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার বাস্তবায়নে প্রকল্প, ব্যয় হবে ৫০৩৩ কোটি টাকা
  • বর্ধিত সভায় উপস্থিত না হয়ে ‘দরপত্র জমা দিতে’ যাওয়া শ্রীপুর বিএনপির সভাপতিকে শোকজ