‘দায়িত্ববোধ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলাম’
Published: 3rd, March 2025 GMT
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ভাটারা থানার এএসআই মেজবাহ উদ্দিন। ২৬ বছরের চাকরি জীবনে কুখ্যাত খুনি, চিহ্নিত মাদক কারবারিসহ অনেক অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেছেন তিনি। সাহসিকতার জন্য এসপিদের কাছ থেকে ৬২ বার পুরস্কৃত হয়েছেন। সম্প্রতি তাঁর সাফল্যের পালকে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)। ২০২৫ সালে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এএসআই মেজবাহকে এ পদক দেওয়া হয়। গত রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মেজবাহ উদ্দিন জানান, সাহসিকতার জন্য এর আগেও তিনি এসপিদের কাছে পুরস্কৃত হয়েছেন। তবে এবারের কাজের অভিজ্ঞতা ছিল একেবারে ভিন্ন। দায়িত্ববোধ থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্প্রতি চিহ্নিত ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজ মোবারক হোসেন নাফিজের পিছু নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন তিনি। নাফিজ ভাটারা থানার একটি ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। মূলত এ কাজের জন্যই তাঁকে বিপিএম দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ভাটারার জে-ব্লক এলাকায় ছুরিকাঘাতে আহত হওয়া সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফিজকে গ্রেপ্তার করেছিলেন মেজবাহ উদ্দিন। পদক পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মেজবাহ বলেন, ‘এটা আমার একার অর্জন না। ডিসি স্যার থেকে শুরু করে থানার ওসি পর্যন্ত সবার অর্জন এটা। স্যারদের উৎসাহে এমন কাজ করার সাহস পেয়েছি। সোমবার বেলা ৩টায় বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার থানার গ্রুপে পদকের কাগজ দিলে থানার অফিসার থেকে শুরু করে সবাই অভিনন্দন জানিয়েছে। আমার জন্য বাহিনী গর্বিত। বাকি চাকরি জীবন এভাবেই অপরাধীদের আতঙ্ক এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।’
একটি সূত্র জানায়, এখন থেকে পুলিশ সদস্যদের সাহসিকতা ও ভালো কাজের জন্য সারা বছর বিপিএম ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) দেওয়া হবে।
ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, এএসআই মেজবাহর সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুলিশ সদরদপ্তরের সুপারিশে তাঁকে বিপিএম পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী ওই সময়ই মেজবাহ অন্য পুলিশ সদস্যদের জন্য অনুকরণীয় উল্লেখ করে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আগে স্থানীয় নির্বাচন চান চরমোনাই পীর ও ভিপি নূর
জাতীয় সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদ। বুধবার রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে দল দুটির বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন, গণহত্যায় জড়িতদের বিচার, আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতেও ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন দল দুটির নেতারা।
ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ একমত হয়েছে।
রেজাউল করীম বলেন, গত ৫৩ বছরে পেশিশক্তি প্রয়োগ করে নির্বাচনের মাধ্যমে অযোগ্য লোকজন ক্ষমতায় বসে দেশকে অশান্ত করেছিল। সে জন্য আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনে একমত হয়েছি।
ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক বলেন, কিছু মৌলিক সংস্কার না হলে দেশে আবার স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট শাসন তৈরি হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নির্মম গণহত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইছি। তাদের রাজনীতির সুযোগ পাওয়া উচিত নয়।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ অনেক আগে থেকেই একমত বলে জানিয়েছেন নূর। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে স্থানীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে যারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও নির্বাচন বাতিল করা দরকার। গত আট মাসে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি না থাকায় সেবা পেতে মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। কিছু মানুষ জোর করে আধিপত্য বিস্তার করছে। সে জন্য স্থানীয় নির্বাচন কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন। আবার জাতীয় ঐকমত্যেরও প্রয়োজন। অন্তত তার আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে। বাংলাদেশ এমন রাষ্ট্র হবে, যেখানে ইসলামী আদর্শবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করা হবে না।
বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমাদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা ছিলেন। এছাড়া গণঅধিকারের মুখপাত্র ফারুক হাসান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।