রাজনৈতিক দল, কর্তৃত্বপরায়ণতা ও নতুন বন্দোবস্ত
Published: 3rd, March 2025 GMT
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন সমীকরণে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে। যে বিএনপি-জামায়াতকে নানা ইস্যুতে জোটবদ্ধ দেখা যেত, তা ইতোমধ্যে স্পষ্ট বিভাজিত। টানা দেড় দশক ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পতন ও পলায়নের পর তাদের শূন্যতার সুবিধা করায়ত্ত করতে সকল পক্ষ সক্রিয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি তর্কাতীতভাবেই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। তাই বিএনপিতে এখন কর্মীদের ভিড়ও বেশি। গত ১৫ বছর নির্যাতিত, নিপীড়িত, ত্যাগী বিএনপি নেতাকর্মী যেমন আছেন, তেমনি আছেন সুসময়ে ভিড় করা নব্য ‘বন্ধু’। সাত বছর পর দলটির বর্ধিত সভা নিয়ে সমকাল জানাচ্ছে, ‘বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকার পালিয়ে গেলেও এখনও রয়ে গেছে দোসররা। দোসরদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী আঁতাত করে বিএনপিকে নিয়ে নানা চক্রান্ত করছে (২৮.
এ পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার গণঅভ্যুত্থানজয়ী তরুণ ছাত্রদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করল। দিন কয়েক আগে থেকে দলটির নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন, মতপার্থক্যের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। তার আগে বুধবার গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়কদের নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ আত্মপ্রকাশ করে ব্যাপক মারামারির মধ্যে। ছাত্র সংগঠনটির নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একচেটিয়া প্রাধান্যে বিক্ষোভ করেন অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এনসিপিতে বিভিন্ন মত ও পথের শিক্ষার্থীদের সমন্বয় ঘটেছে। ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে জুলাই আন্দোলনের ১০ জন এ দলের শীর্ষ পদে আছেন। এই দলে মধ্য, ডান, বাম, শিবির, কওমিপন্থি, আদিবাসী এবং ১৫ নারী স্থান পেয়েছেন। গণঅভ্যুত্থান-উত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলটির কাছে প্রত্যাশা যেমন আছে, তেমনি বাস্তবতাকে মোকাবিলার জন্য অনেক প্রশ্নের উত্তর তাদের প্রস্তুত রাখতে হবে।
২.
দেশের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও চব্বিশ-উত্তর পটভূমিতে জাতির প্রত্যাশা অনেক বেশি। রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত হলেও দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলেই কথা হয় না। অন্তর্বর্তী সরকারও রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র স্থাপন বা সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার নিয়ে সরব সব রাজনৈতিক দল তাদের অভ্যন্তরে সংস্কার নিয়ে নিশ্চুপ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টি– সব রাজনৈতিক দলেই পার্টিপ্রধানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সম্মেলনে আমরা দেখি, সারাদেশ থেকে কাউন্সিলররা এসে দিনব্যাপী ‘আলোচনা’ করে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দলের প্রধানের হাতে ন্যস্ত করেন। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে; সেখানেও দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা সম্পর্কে কোনো প্রস্তাবনা নেই।
প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচল মানসিকতার অনুরণন আমরা শুনতে পেলাম নবগঠিত এনসিপিতেও। হ্যাঁ, নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দিয়ে দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন; এটি অবশ্যই ইতিবাচক। অন্য দুই ছাত্র উপদেষ্টার সরকারে অংশগ্রহণ ও ভবিষ্যতে এই দলে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন এখনই উঠছে। এনসিপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেতে থাকলে অবশ্যই তা গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেবে।
ছাত্র-তরুণের রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ যেভাবে কোন্দল আর বিতর্কের মধ্য দিয়ে মনোনীত হলেন, তার বদলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করা যেত না? প্রাথমিকভাবে নিবন্ধিত কর্মীরা নিজেরা ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচিত করতে পারতেন। ‘দাতব্য গৃহ হইতেই সূচিত হয়’– আপ্তবাক্যের মতো গণতন্ত্র গৃহ হতেই শুরু করা দরকার ছিল। তবে এক বছরের জন্য গঠিত বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি ভবিষ্যতে নেতাকর্মীর সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার মানসিকতায় পৌঁছুবে বলে প্রত্যাশা। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ যখন দলের কর্মীদের কাছে জবাবদিহি করেন, তখনই প্রকৃত গণতন্ত্রের চর্চা শুরু হয়; এর ধারাবাহিকতায় জনতার কাছে জবাবদিহির ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
৩.
ছাত্র-তরুণরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বারবারই বলে আসছেন। এনসিপির ঘোষণাপত্রেও তা উঠে এসেছে। সংক্ষেপে এই জাতির ইতিহাস তুলে ঘোষণাপত্রে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জনগণ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় নাগরিক পার্টির ঘোষণা...। এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল।’
এনসিপির আত্মপ্রকাশ অবশ্যই প্রত্যাশাজাগানিয়া। যে অনড় এককেন্দ্রিক কর্তৃত্ববাদী বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিল এ দেশের প্রচল রাজনৈতিক দল ও সংস্কৃতি, তার দিকে চোখে চোখ রেখে কথা বলবার স্পর্ধা নিঃসন্দেহে গণঅভ্যুত্থানজয়ী তারুণ্যের রয়েছে। এর প্রয়োজনীয়তাও অনস্বীকার্য। তবে কোন প্রক্রিয়ায় গড্ডলিকা প্রবাহের বিপরীতে হাঁটবে এই রাজনৈতিক দল– তা তাদেরকেই সন্ধান করে বের করতে হবে। এনসিপির গঠনতন্ত্র দেখবার সুযোগ এখনও হয়নি। তবে ঘোষণাপত্রে গতানুগতিক প্রতিশ্রুতিই দেখা গেছে। কোন প্রক্রিয়ায় দেশের পেশাজীবী, অভিজ্ঞ মানুষ এই রাজনৈতিক দলে অংশী হবেন, তা বোঝা যায়নি; নাকি এই দলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় বা মাদ্রাসার তরুণরাই কাজ করবার সুযোগ পাবেন? কেবল ২৫ থেকে ৩০ বছরের তরুণদের তারুণ্য সমাজ-রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে না; এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের সরাসরি অংশগ্রহণ ও মিথস্ক্রিয়া। বিষয়টির অনুপস্থিতি তারা কোন প্রক্রিয়ায় পূরণ করবেন, এটা দেখবার বিষয় বটে।
বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের ডাক দিয়ে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনের ফলাফল এনসিপি। প্রত্যেক মানুষের জন্য প্রাপ্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিতসহ দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবার উপায় উদ্ভাবন তাদের কাছে ন্যূনতম প্রত্যাশা। এসব প্রসঙ্গে সমাধানের পথ বাতলে দেবার মতো উপযুক্ত মানুষদের সঙ্গে তরুণদের যূথবদ্ধতার বিকল্প নেই।
এনসিপির জাঁকজমকপূর্ণ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান নিয়ে বলা হচ্ছে, তরুণরা এত টাকা পেল কোথায়? সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় যানবাহনসহ নানা কথাও আলোচনায় আছে। বড় দলগুলো যখন সভা করে তখন তাদের আর্থিক সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন যারা করেন না, তারাই এখন তরুণদের রাজনৈতিক দলের সভার আর্থিক উৎস নিয়ে সরব! বিএনপি গত সপ্তাহেই বড় বর্ধিত সভা করল ঢাকাতে! যে প্রক্রিয়ায় অন্য দলগুলো সভা করে, সেই প্রক্রিয়াতেই তরুণদের দলের সভাও হয়েছে। তবে গণচাঁদা বা অন্যান্য চাঁদার বিষয়টি তরুণরা স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করে দিলে, তারাই এক ধাপ এগিয়ে থাকবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিলেও তা জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। রাখঢাক না করে সততার সঙ্গে সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলবার চিরকালীন তারুণ্যের স্পর্ধা আমরা নতুন রাজনৈতিক দলে দেখতে চাই।
এসবের সঙ্গে জরুরি দলের স্পষ্ট দার্শনিক অবস্থান। ডান-বাম, মধ্য, মাদ্রাসাপন্থি, উদার মানবতাবাদী ইত্যাদির সংমিশ্রণে ‘আমরা ভারত বা পাকিস্তানপন্থি নই, আমরা বাংলাদেশপন্থি’ বলাই যথেষ্ট নয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ইতিহাস ও সমাজ– প্রতিটি পর্যায়ে নিজেদের মনোভঙ্গির সুস্পষ্ট অবস্থান দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সহায়ক হবে। মানুষের আস্থা অর্জনে দার্শনিক অভিপ্রায়ের স্পষ্টতা জরুরি।
মাহবুব আজীজ: উপসম্পাদক, সমকাল; সাহিত্যিক
mahbubaziz01@gmail.com
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত গণঅভ য ত থ ন র র জন ত ক গণতন ত র এনস প র ন ত কর ত কর ম র জন য দলগ ল দলট র সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি–জামায়াতের বাইরে অভ্যুত্থানের পক্ষের দলগুলোর নির্বাচনী জোট করা ছাড়া পথ কী
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে সব পর্যায়ে রাষ্ট্র সংস্কারের দমকা হওয়া উঠেছিল। কিন্তু নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের পালে হঠাৎ করে হাওয়া কমে গেছে বলেই মনে হচ্ছে।
দ্বিদলীয় গণতন্ত্রে এক দল পলাতক হলে অন্য দল যে খোলা মাঠে গোল দিতে নির্বাচন চাইবে, সেটা স্বাভাবিক। অন্যদিকে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রাণভোমরা। তাই নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করাতে গণতন্ত্রকামী অন্য দলগুলোও তাদের নির্বাচনী হিসাব মেলাতে বাধ্য হওয়ার কথা। এমনকি নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করা দলও তাদের বৈধতা প্রমাণ করতে নির্বাচনের রাজনীতির দিকেই ঝুঁকবে।
কিন্তু একদলীয় নির্বাচনী ভাগ্যচক্রে অন্য দলগুলো কী পরিণতি আশা করতে পারে?
ভোটের হিসাবে বিএনপির পর দ্বিতীয় শক্তিশালী দল জামায়াত কোনো নির্বাচনেই পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। তাই তাদের পক্ষে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫টি আসন পেতেই হিমশিম খাওয়ার কথা। দ্বিতীয়-তৃতীয় সারির দলগুলো এক নেতা, এক দল; তাই তারা সম্মিলিতভাবে ১০টির বেশি আসনে দাঁড়াতে পারবে বলে মনে হয় না। কিন্তু তাদের আসনে বিএনপি যদি প্রার্থী দেয়? তাহলে বোধ হয় তারা নিজেরাই বিশ্বাস করে না যে তারা ১০ ভাগ ভোট পেতে পারে। জিতে আসা তো অনেক দূর।
বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে এই জোটই সংসদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায়ও আওয়াজ তুলতে পারবে। সেটা একদিকে আওয়ামীতন্ত্রে ফেরার ঝুঁকি কমাবে, আবার অন্যদিকে গণতন্ত্রের আওয়াজ জারি রাখলে পাঁচ বছর পরের যে সংসদ, সেখানে ক্ষমতা নির্ধারণ তাদের হাতেই থাকবে।ছাত্রদের নতুন দলে হাতে গোনা কয়েকজনের জাতীয় পরিচিতি থাকলেও এলাকার রাজনীতি তাঁরা করেননি। তাই রাষ্ট্রীয় সমর্থনবিহীন নির্বাচনী পাশা খেলায় তাঁরা নিজ নিজ আসনে কতটা কী করতে পারবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে বিএনপি বুঝতে পারছে যে একদলীয় নির্বাচনে ২৯০ সিট জিতে আসা তাদের জন্য বিপজ্জনক। বিরোধী দল না রাখার শেখ সাহেবের ’৭৩ সালের ভুল তাদের স্মরণে আছে নিশ্চয়ই। সে জন্য তারা তাদের মিত্রদের কাছে ১০০ সিট ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এই সুযোগে মিত্র দলগুলো এখনই সংসদের সবুজ চেয়ারে বসার স্বপ্নের ডানায় উড়াল দিয়ে ফেলেছে।
এই স্বপ্নের যাত্রায় গণতন্ত্রের পক্ষের যে দলগুলো আওয়ামী জুলুমের সময় রাস্তায় ছিল, তারাও কি বুঝতে পারছে যে একবার বিএনপির আশীর্বাদের চাদরে ঢুকে গেলে তাদের ইনু-মেনন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না? আর ইনু-মেননরা যেহেতু রাস্তার রাজনীতি বিসর্জন দিয়েই যেহেতু সংসদে বসার দাসখত দেন, সামনের বিএনপির সময়েও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো এই কায়দায় রাস্তায় নামতে না পারার ঝুঁকিতে পরতে পারে।
আর রাস্তা ফাঁকা থাকলে মানুষ তো আর বসে থাকবে না। তখন হয়তো তারা তাদের স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে ডেকে আনবে!
এমন একই পটভূমিতে ইতিহাস যাতে গুম-খুনের আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার বাঁক নিতে বাধ্য না হয়, সে জন্য বিএনপির বাইরে অভ্যুত্থানের পক্ষের নতুন-পুরোনো সব দল মিলে একটা নির্বাচনী জোট গড়ে তোলা ছাড়া কোনো সমাধান নেই।
বাংলাদেশের মানুষের অভিজ্ঞতা বলে যে বিএনপি আসলে আওয়ামী লীগেরই অন্য পিঠ। তাই মানুষের পক্ষের নির্বাচনী জোট সামনে এলে আগামী নির্বাচনে চমক দেখানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সেই নির্বাচনে যদি তারা পঞ্চাশের কম আসনও পায়, তারাই হবে প্রধান বিরোধী জোট। সেই সংসদে বিএনপি জোর জুলুম করতে চাইলে হয়ে সংসদে তারা জোরালো কণ্ঠে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে।
বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে এই জোটই সংসদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায়ও আওয়াজ তুলতে পারবে। সেটা একদিকে আওয়ামীতন্ত্রে ফেরার ঝুঁকি কমাবে, আবার অন্যদিকে গণতন্ত্রের আওয়াজ জারি রাখলে পাঁচ বছর পরের যে সংসদ, সেখানে ক্ষমতা নির্ধারণ তাদের হাতেই থাকবে।
সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মী
[email protected]