জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে আমাদের সব কটি অফিস সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের নেতা-কর্মীদের ঘর থেকে তুলে নিয়ে গুম, খুন, নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের নেতাদের বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের প্রতি প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই। তবে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনা দরকার।’

আজ সোমবার দুপুরে খুলনা নগরের খানজাহান আলী সড়কের তারের পুকুর এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরী কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ এই কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছিল।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী সংগঠন। জামায়াত দেশকে একটি মডেল রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এ মহতী কাজ সম্পাদনের জন্য একদল আদর্শ ও চরিত্রবান লোক তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও মহানগরীর আমির মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েবে আমির নজিবুর রহমান, সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন, সহকারী সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন, সেক্রেটারি রাকিব হাসান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত নারী বিষয়ক সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিলের দা‌বি

অগ্রহণযোগ্য ও বিতর্কিত নারী বিষয়ক সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করার দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

রবিবার (১৫ এপ্রিল) এক বিবৃ‌তি‌তে দল‌টির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা পবিত্র কুরআনের বিধানের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের অস্তিত্বের ওপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য, পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।”

তিনি অবিলম্বে অগ্রহণযোগ্য ও বিতর্কিত নারীবিষয়ক সুপারিশমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন,  “নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, তা ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল নয়। কমিশনের সুপারিশমালার ২৫ পৃষ্ঠায় মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে নারী-পুরুষকে সমান সম্পত্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।”

“আমরা মনে করি, বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন মূলত আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত উত্তরাধিকার বিধান দ্বারা রচিত। এটিকে বাতিল করার অর্থ সরাসরি কুরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। এটি শুধু শরীয়তের অবমাননাই নয়, বরং মুসলিম পরিচয়ের মূলে কুঠারাঘাত।”

তিনি বলেন, “পবিত্র কুরআনে যিনাকে মহাপাপ ও ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ প্রদত্ত সুপারিশমালায় যিনাকে উৎসাহিত এবং বিবাহকে নিরুৎসাহিত করে সরাসরি পবিত্র কুরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

আমরা মনে করি এই ধরনের প্রস্তাবনা সমাজে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। সমাজকে অস্থিতিশীল করার সর্বনাশা চক্রান্তে কারা কলকাঠি নাড়ছে এবং মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন নিয়ে কারা ছিনিমিনি খেলছে জাতির সামনে অতি দ্রুত তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।”

“কমিশনের সুপারিশমালার ৯ম পৃষ্ঠায় সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে; যা বাস্তবায়ন করা হলে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাইকে ধর্মীয় পারিবারিক বিধান থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি ধর্মহীন কাঠামোয় আসতে বাধ্য করা হবে।” 

এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন ব‌লে ম‌নে ক‌রেন তি‌নি।

জামায়াত সে‌ক্রেটা‌রী ব‌লেন, “ক‌মিশ‌নের প্রস্তাবনা ৯ম পৃষ্ঠায় আরও বলা হয়েছে, জাতিসংঘ প্রণীত CEDAW সনদের অধীনে বিবাহ ও পারিবারিক ক্ষেত্রে আইনের বাস্তবায়ন করা দরকার। CEDAW-এর অনেক শর্ত সরাসরি ইসলামবিরোধী; যেখানে বিয়েকে শুধু একটি সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখা হয় এবং ইসলামী নিকাহ ও অভিভাবকত্বের মতো মৌলিক ধারণাগুলোর বিরোধিতা করা হয়।” 

তিনি আরও বলেন, “উক্ত সুপারিশমালার ৯ম পৃষ্ঠার আরেক জায়গায়, নারী-পুরুষের পারিবারিক ভূমিকাকে অভিন্নভাবে দেখার প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের ইসলামিক স্কলাররা মনে করেন, ইসলাম নারী-পুরুষের মর্যাদা সমান মনে করলেও, তাদের ভূমিকায় প্রাকৃতিক পার্থক্যকে স্বীকার করে। তাই ‘নারী-পুরুষের পারিবারিক ভূমিকাকে অভিন্নভাবে দেখার’ প্রস্তাবটি ইসলামী সমাজব্যবস্থাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।”

এমতাবস্থায় দেশের বিজ্ঞ আলেম সমাজসহ আমরা মনে করি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উপরোক্ত বিষয়াদি সুবিবেচনায় নিয়ে জনগণের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন এবং দেশের সকল ধর্মের নাগরিকদের ধর্মীয় বিধান সমুন্নত রেখে এ অগ্রহণযোগ্য ও বিতর্কিত সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করবেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিতর্কিত নারী বিষয়ক সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিলের দা‌বি