পরিবেশগত হুমকির বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিচারিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, শিল্প দূষণ এবং অনিয়ন্ত্রিত নগর সম্প্রসারণের ফলে সৃষ্ট অস্তিত্বগত হুমকিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর বিচারিক প্রতিক্রিয়া জরুরি।

সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে পরিবেশগত ন্যায়বিচার রক্ষা: একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিচারকদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনকে জলবায়ুগত ও মানবসৃষ্ট হুমকির হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে দেশের পরিবেশগত নিরাপত্তা হারিয়ে যাবে। যা লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা ও ভবিষ্যতকে বিপন্ন করবে।

ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিনের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এই সেমিনার আয়োজন করে।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের বিচার বিভাগ ঐতিহাসিকভাবেই পরিবেশ সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকায় ছিল। বিচারক হিসেবে আমাদের পবিত্র দায়িত্ব হলো কঠোর আইনি কাঠামো, টেকসই নীতি এবং সর্বদা বিচারিক তদারকির মাধ্যমে এই অমূল্য জীববৈচিত্র্যের ভান্ডারকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা।

ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ও ব্রাজিল উভয়ই ব্যাপক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন নেই তা নয়, বরং সমস্যা হলো আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব। বিদ্যমান পরিবেশ সংরক্ষণ আইনগুলো অনেকাংশেই ঔপনিবেশিক শোষণের মানসিকতা দ্বারা প্রভাবিত, তাই কার্যকর ও ন্যায়সংগত আইন প্রণয়ন প্রয়োজন।

সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) এবং আইনগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নদী সুরক্ষা, বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি ঐতিহাসিক রায়ের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

আসাদুজ্জামান, ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের হাইকোর্ট বিভাগের প্রধান বিচারপতি আন্তোনিও হারমান বেঞ্জামিনকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক ও প্রকাশনা তুলে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জলব য়

এছাড়াও পড়ুন:

রিফাইনারি ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে যৌথ প্রকল্প খুঁজছে দুই দেশ

সৌদি আরব সফরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মোদির বৈঠক হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ৪০ বছরে এটিই কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জেদ্দা সফর।

তাঁর এই সফরে দিল্লি ও রিয়াদের মধ্যে কমপক্ষে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হতে পারে।  ভারত ও সৌদি আরব রিফাইনারি ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে যৌথ প্রকল্প অন্বেষণ করছে বলে জানিয়েছেন মোদি। সৌদি আরব সফরের প্রথম দিনে মঙ্গলবার আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। 

মোদি বলেন, ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগসহ বিস্তৃত অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিনিময়ের সম্ভাব্যতা নিয়ে এখন কাজ চলছে।  সৌদি আরব ভারতের অন্যতম প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ।  মোদির এ সফরকে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদার করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রতিরক্ষা, বিনিয়োগ ও সংস্কৃতি খাতে সহযোগিতা বেড়েছে। খবর রয়টার্সের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ