সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদা না পেয়ে হামলা ও লুটপাট, আহত ১২
Published: 3rd, March 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গ্যাস সিলিণ্ডার ব্যবসায়ী কাউসার, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আলিফ লায়লা ও তার পরিবারের সদস্যসহ অন্তত ১২ জনকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নামধারী কাজী ইসলাম বাহিনীর বিরুদ্ধে।
দোকানে হামলা চালিয়ে লুট করা হয়েছে নগত ৩ লাখ টাকা ও গ্যাস সিলিণ্ডারের বোতলসহ প্রায় ১৩ লাখ টাকার মালামাল। রবিবার (২ মার্চ) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সানারপাড় বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় ৩ দফা এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আইনজীবী আলিফ লায়লা বাদী হয়ে কাজী ইসলামকে প্রধান করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আহতরা হলো, দোকান মালিক কাউসার (৩৩), তার বড় ভাই আনিসুর রহমান(৫২), সেজু ভাই ফেরদৌস(৪৫), মো.
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত কাজী ইসলামের নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ একটি দল রোববার সকালে সানারপাড় বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় বাদীর ছোট ভাই মো. কাউসারের গ্যাস সিলিণ্ডার দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় কাউসার ও তার ভাতিজা আশিককে মারধর করে।
বিকেলের মধ্যে দাবিকৃত চাঁদা না দিলে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে বিকেলে আবার দোকানে গিয়ে চাঁদা না পেয়ে কাউসারকে মারধর শুরু করে। এ খবর পেয়ে কাউসারের বড় ভাই আনিসুর রহমান, সেজু ভাই ফেরদৌস, মো. হিজবুল্লাহ, বোন আলিফ লায়লা ও ভাতিজা নিবির ছুটে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধরক মারধর করে।
ইফতারের পর আবার কাজী ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্র দা, ছুরি, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে কাউসারের দোকানে হামলা চালিয়ে নগত ৩ লাখ টাকা ও গ্যাস সিলিণ্ডারের বোতলসহ প্রায় ১৩ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে। পরে হামলা চালায় ভূক্তভোগীদের বাড়িতে। তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ২ জন গুরুতরসহ ১২ জনকে আহত করে। এসময় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তখন এলাকার লোকজন ছুটে আসলে হামলাকারীরা চলে যায়।
জানতে চাইলে কাজী ইসলাম বলেন, মসজিদের জায়াগা জবরদস্তি করে তারা দোকান নির্মাণ করেছে। আমি মসজিদ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা। মসজিদ কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে আমরা সে দোকানটি ভেঙ্গে দেই। চাঁদা চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে-তালাকের তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক: হাইকোর্ট
বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
আদালত বলেছেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে, যাতে প্রতিটি তথ্য সরকারি ব্যবস্থায় সুরক্ষিত থাকে; ডেটাবেজ সম্পূর্ণ কার্যকর ও ব্যবহারযোগ্য হয় এবং নাগরিকেরা বিশেষ করে নারীরা সহজেই তথ্য যাচাই করতে ও ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশনে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে এইড ফর ম্যান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এবং তিন ব্যক্তি ২০২১ সালের ৪ মার্চ রিট করেন।
রিট আবেদনের ভাষ্য, বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তথা ডিজিটালাইজ রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। স্বামী বা স্ত্রী বিয়ের তথ্য গোপন করে অনেক ক্ষেত্রে আবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ডিজিটাল আর্কাইভের অনুপস্থিতিতে অনেক সময় সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা দেখা যায়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বিয়ে ও তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশনের জন্য কেন্দ্রীয় একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট বিয়ে ও তালাকের সব তথ্য পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশে পরিবারের নিরাপত্তা, নারীর সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, আইনগত স্বচ্ছতা এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিয়ে–তালাকসংক্রান্ত প্রতারণা বন্ধে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল নিবন্ধন চালু হলে গোপন বিয়ে, একাধিক বিয়ে লুকানো, পূর্ববর্তী তথ্য গোপন, তালাক প্রমাণের জটিলতা—এসব সমস্যা ব্যাপকভাবে কমবে।