কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর পাওয়া গেছে শিহাব (৯) নামের এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ। সোমবার বিকেলে উপজেলার চরসাদিপুর ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত কারখানার আঙিনায় পাওয়া যায় শিশুটির লাশ। সেটি বালুর বস্তার নিচে পড়ে ছিল। তিন দিন আগে অভিমানে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় শিহাব।

স্বজনের বরাতে পুলিশ জানায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি শিহাব নানার পকেট থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে ২০০ টাকা খরচ করে ফেলে। পরদিন সকালে এ জন্য তার ওপর রাগারাগি করেন মা ও নানা। এর পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শিহাব। শনিবার থেকে তাকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।

মৃত শিহাব পাবনা সদরের চর বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের রতন শেখের ছেলে। সে থাকত ঘোষপুরে নানা আকাত উল্লাহর বাড়িতে। দিনমজুর রতনের তিন ছেলে সিয়াম (১২), শিহাব (৯) ও সিজান (৭)। সংসারে অভাব থাকায় মেজো ছেলে শিহাব নানাবাড়িতে থাকত। কখনও ইটভাটায়, কখনও বা গরুর রাখাল হিসেবে কাজ করত সে।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঘোষপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার আমিরুল মোল্লার পরিত্যক্ত কারখানার আঙিনায় খেলা করছিল স্থানীয় কয়েকজন শিশু। পাশে কয়েকটি বস্তা ভরা বালু ত্রিপলে ঢাকা ছিল। এ সময় শিশুরা দুর্গন্ধ পেয়ে ত্রিপল ধরে টান দিয়ে বস্তার নিচে লাশ দেখতে পায়। পরে স্বজনরা খবর পেয়ে সেটি শিহাবের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করেন।

চরসাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম আজমের ধারণা, শিহাব বাড়ি থেকে পালিয়ে ত্রিপলের নিচে লুকিয়ে ছিল। দুর্ঘটনাবশত বালুর বস্তার নিচে চাপা পড়ে সে মারা গেছে।

শিশুর বাবা রতন শেখ বলেন, অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল ছেলে। কীভাবে মারা গেছে, জানি না। তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, শিশুটি কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিল। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম

নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক নাঈম। তবে এখন অভিনয়ে নেই। নানা ইস্যুতে আছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় ‘চাচা, হেনা কোথায়?’  সংলাপটি কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ সংলাপকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। সংলাপ ও সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন

কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। নিজের মানসম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। সবাই আমাকে এবং আমার পরিবারকে ভালোবাসে। এ ভালোবাসা নিয়েই জীবন চলে যাচ্ছে। 

হঠাৎ করে ভাইরাল হলো ‘‘চাচা, হেনা কোথায়?’ সংলাপটি, এটার সঙ্গে তো আপনিও আলোচনায় এলেন...
দেখুন, ফিল্ম অনেক বড় বিষয়। প্রায় তিন দশক আগেও একটি সিনেমার ডায়ালগ নিয়ে মানুষ এখনও আলোচনা করছে। ‘চাচা, হেনা কোথায়? তার একটি দৃষ্টান্ত। গত এক মাস হলো আমি শুধু দেখছি, কীভাবে এটা পুরো দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। এটার দ্বারা প্রমাণ হয়, ভালো সিনেমা, ভালো সংলাপ ও ভালো শিল্পী কতটা দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকেন। বিশেষ করে ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী বাপ্পারাজ-শাবনাজসহ পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানাই। শাবনাজ যেহেতু এখন আমার জীবনসঙ্গী। সেই সূত্র ধরেই হয়তো আলোচনায়।

বাপ্পারাজ-শাবনাজ জুটি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এটা তো পুরো দেশের মানুষের জানা। বাপ্পারাজের মতো অভিনেতা পাওয়া কঠিন। আমার স্ত্রী হিসেবে বলব না, ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমাসহ সব সময়ই ও ভালো অভিনয় করেছে। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। তারা দু’জনই এককথায় অসাধারণ অভিনয়শিল্পী। 

দর্শক তো এখনও আপনাকে অভিনয়ে চায়। অভিনয়ে ফেরার কোনো পরিকল্পনা আছে?
সেটা নির্ভর করবে নির্মাতা ও প্রযোজকের ওপর। তারা যদি আমার ইমেজ, স্টাইল ও প্রেজেন্টেশন নিয়ে ভেবে গল্প বানান আর আমার যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই করব। একটা সময় আমি সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে গেছি। তবে আমি কখনও বলিনি যে, আমি অভিনয় করব না কিংবা সিনেমা নির্মাণ করব না। এখনও আমার ইচ্ছে করে ভালো গল্প নিয়ে একটা সিনেমা বানাব। সিনেমা তো আমার ভেতরে। আমি তো কাজ করতে চাই। ক্যামেরার পেছনে বা সামনে; একটা সময় অবশ্যই আমি করব। তবে সময়টা বলতে পারছি না। 

আমাদের সিনেমা শিল্পকে এগিয়ে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কী? 
অনেক ধরনের মানুষ নিয়ে একটা সিনেমা বানাতে হয়। এখানে নির্মাতা, শিল্পী, টেকনিশিয়ানসহ অনেক বিষয় মাথায় রেখে চিন্তা করতে হয়। একটা  ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে কীভাবে; এটা নিয়ে আমার একটা চিন্তা থাকতে পারে। আমার একার উদ্যোগ বা চিন্তা দিয়ে হবে না। এ ক্ষেত্রে সবার সমান প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তা হলে একটা ইন্ডাস্ট্রি আপনা আপনিই এগিয়ে যাবে।

আপনি তো সাংস্কৃতিক পরিবারের ছেলে...
হ্যাঁ, আমি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর প্রপৌত্র। এজন্য আমি গর্ববোধ করি। উপমহাদেশে ১৯৩৮ সালে কিন্তু ঢাকার নবাব পরিবার থেকেই প্রথম সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। তখন আমাদের পরিবার থেকেই ছিল নির্মাতা, নায়ক ও ক্যামেরাম্যান। অর্থাৎ আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি, এটা ছিল একটা সাংস্কৃতিকমনা পরিবার।

সিনেমা হল সংকট নিয়ে কী বলবেন?
আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে তো দর্শক সিনেমা হলে আসবে। ভালো সিনেমা না বানিয়ে দর্শকদের বলব আপনারা হলে আসছেন না কেন? এটা তো ঠিক না। আগে আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে দর্শক সিনেমা হলে আসবে। হল এমনিতে বাড়বে। এখানে সবার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। কারও একার প্রচেষ্টায় হবে না।

সিনেমার স্বর্ণযুগ কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব। ‘না’ বলে আমার কাছে কথা নেই। তবে টাইম লাগে। সবাই মিলে একযোগ হয়ে যদি একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাতে পারি, তাহলে সব সম্ভব।

ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন কিন্তু আপনি গ্রামে চলে গেলেন কেন?
ঢাকায় আমার দাদার বাড়ি আর টাঙ্গাইল নানার বাড়ি। ছোটবেলা থেকে নানার বাড়িতেই আমি বড় হয়েছি। গ্রামের মাটির সঙ্গে তো প্রতিটা মানুষ জড়িত। আমরা বিভিন্ন বিভাগের মানুষ। কর্মজীবনে আমাদের ঢাকায় থাকতে হয়। ঈদের ছুটিতে আমরা কীভাবে বাড়ি চলে যায়! তো কোনো সময় আমি চিন্তাও করিনি যে বিদেশে স্থায়ী হবো। সব সময় ভেবেছি, এ দেশেতে আমার জন্ম, এ দেশের মাটিতে যেন আমার মৃত্যু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘুমের ভেতর পায়ে অস্থিরতা
  • স্ত্রী-শ্যালিকাকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বর্ণালংকার-ফোন নিয়ে লাপাত্তা সামিউল
  • কেন মেয়ের সব ছবি মুছে ফেললেন আলিয়া
  • ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে পারেন ট্রাম্প
  • কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম
  • ‘যদি’ ‘কিন্তু’ ‘অথবা’ ছাড়াই ভুল সংশোধন করে নেব: হাসনাত আবদুল্লাহ