ব্যাংকের ভেতর থেকে নারী গ্রাহকের টাকা নিয়ে পালাল ৩ ব্যক্তি
Published: 3rd, March 2025 GMT
‘আমি ব্যাংকের লোক। আপনাকে যে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো জাল। আমাকে দেন, আমি পাল্টে দিচ্ছি’—এমন কথার ফাঁদে ফেলে এক নারী গ্রাহকের কাছ থেকে ৬৮ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভবানীগঞ্জ শাখায় ভেতর এ ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম খাদিজা বেগম (৪৫)। তিনি একই উপজেলার চানপাড়া গ্রামের গৃহবধূ।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে ব্যাংকের ওই শাখায় টাকা উত্তোলনের জন্য যান খাদিজা। নিজের জমানো টাকা থেকে ৬৮ হাজার টাকা একটি চেকের মাধ্যমে তুলতে চান তিনি। এ জন্য চেকটি নারী গ্রাহকদের বুথে জমা দেন। এ সময় তাঁর পেছনে পরিপাটি অবস্থায় তিন ব্যক্তি ছিলেন। ব্যাংক থেকে টাকা বুঝে পাওয়ার পর ওই তিন ব্যক্তি তাঁর কাছাকাছি আসেন। এঁদের মধ্যে একজন নিজেকে ব্যাংকের লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান, ভুলক্রমে তাঁকে জাল টাকা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পাল্টে আসল নোট দেওয়ার আশ্বাসে টাকাগুলো ওই নারীর কাছ থেকে নেন তাঁরা। পাশের কাউন্টারে যাওয়ার কথা বলে তাঁরা কৌশলে ব্যাংকের ভেতর থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।
পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের বিষয়টি জানানো হয়। ব্যাংকের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত এবং টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। তবে তাঁদের শনাক্ত করতে না পেরে আজ বিকেলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
খাদিজা বেগম জানান, প্রতারক নিজেকে ব্যাংকের লোক পরিচয় দেওয়াতে বিশ্বাস হয়েছে। ব্যাংকের ভেতরে এ রকম হবে, তা ভাবতেও পারেননি। তিনি টাকা উদ্ধারসহ প্রতারকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, ‘সিসি ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, প্রতারকেরা আগে থেকেই ওই নারীকে অনুসরণ করেছে। সুযোগ বুঝে টাকা নিয়ে সটকে পড়েছে। তাদের পরে জানানো হয়েছে। গ্রাহককে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে।’
বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা তীরের বালু বিক্রি ভাঙনের শঙ্কা
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে যমুনা নদীর তীরের বালু তুলে অবাধে বিক্রি করছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এতে নদীতে পানি বাড়লে ওই সব এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসীর শঙ্কা।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কাউকে তোয়াক্কা না করে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে দিন-রাত এ বালু বিক্রি করছেন। এভাবে বালু বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন জানান, উপজেলার যমুনা তীরের রৌহা ও বাগুলি এলাকায় বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এ বালু বিক্রি করছেন লেবু শেখসহ ছয়-সাতজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করলেও যেন দেখার কেউ নেই।
এলাকার আরিফ শেখ, হেলাল উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, বালু ব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পান না। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো ও হয়রানি করা হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহিনুর শেখ বলেন, এলাকার অনেককে ম্যানেজ করে নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন এলে বালু তোলা বন্ধ রাখতে হয়। প্রশাসন অভিযানে আসার আগেই তারা অগ্রিম সংবাদ পেয়ে থাকেন। এ কারণে তাদের তেমন ঝামেলা হয় না। সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তারা কয়েকজন সাংবাদিককেও কিছু টাকা মাসোহারা দেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান আলম বলেন, অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রির বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। নদী থেকে কেউ বালু বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে চার-পাঁচবার অভিযান চালিয়ে বালু তোলার ড্রেজার ও ড্রেজারের পাইপ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাদের অভিযান চলছে।