২৫ বছরের মহাজাগতিক রহস্যের সমাধান করলেন চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা
Published: 3rd, March 2025 GMT
মহাকাশের গভীরে এমন কিছু রহস্যময় বস্তু ঘুরে বেড়ায়, যাদের গ্রহের মতো ভর আছে, কিন্তু তারা আমাদের সৌরজগতের মতো কোনো নাক্ষত্রিক সিস্টেমে যুক্ত নয়। যাযাবরের মতো মহাকাশে ঘুরে বেড়ানোই তাদের কাজ। এদের বলা হয় প্ল্যানেটারি ম্যাস-অবজেক্ট বা পিএমও।
২০০০ সালে এদের অস্তিত্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন। তবে কীভাবে পিএমও তৈরি হয় তা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা ছিল না কারও। অবশেষে চীনের শাংহাই জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণাগারের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক গবেষক দল সমাধান করেছেন এই রহস্যের।
বৃহস্পতিবার সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, নক্ষত্র জন্মানোর সময় তাদের চারপাশের গ্যাসীয় ডিস্কের সংঘর্ষের কারণেই এসব বস্তু তৈরি হয়।
এর আগে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, পিএমও’র জন্ম নিয়ে দুটি সম্ভাব্য তত্ত্ব আছে। একটি তত্ত্ব বলছে, এগুলো নক্ষত্র তৈরিতে ব্যর্থ হয়েই এমন রূপ নিয়েছে। অর্থাৎ পিএমও হলো ব্যর্থ নক্ষত্র। অর্থাৎ ছোট গ্যাসীয় মেঘ থেকে এগুলো তৈরি হলেও নিউক্লিয়ার ফিউশন শুরু করতে পারেনি।
আরেকটি তত্ত্ব বলছে, এগুলো বৃহস্পতি বা শনির মতো গ্যাসীয় গ্রহ, যারা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে তাদের নক্ষত্রের বলয় থেকে বেরিয়ে এসেছে।
কিন্তু নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ তত্ত্বগুলো ভুল প্রমাণ করেছিল। গবেষকরা দেখেছেন, ওরিয়ন নেবুলার একটি অংশে শত শত পিএমও আছে, যা আগের তত্ত্বগুলোর অনুমানের চেয়ে অনেক বেশি। এদের ৯ শতাংশ জোড়া কিংবা ত্রয়ী বিন্যাসে থাকে। আর এগুলো ব্যর্থ নক্ষত্র বা ‘পালিয়ে আসা গ্রহ’ তত্ত্বের সঙ্গে মেলে না বলেই জানিয়েছেন শাংহাই জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণাগারের প্রধান গবেষক তেং হংপিং। তার নেতৃত্বাধীন গবেষণাদল বলছে, এমন অনেক পিএমও’র চারপাশে ২০০ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট পর্যন্ত বিস্তৃত গ্যাস ডিস্কও রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে এগুলো নক্ষত্র ছাড়াই তৈরি হয়েছে।
তেং বলেন, ওরিয়ন নীহারিকায় থাকা ট্রাপেজিয়াম গুচ্ছ হলো পিএমও তৈরির কারখানা। এখানে অনেক নক্ষত্র কাছাকাছি থাকে এবং দ্রুত ঘোরে। তাই সংঘর্ষ বেশি হয়।
চীনা গবেষক দল সুপারকম্পিউটারের সাহায্যে এই প্রক্রিয়ার একটি মডেল তৈরি করেছেন। তারা দেখেছেন, যখন দুটি নক্ষত্র নির্দিষ্ট গতিতে ও দূরত্বে পরস্পরের কাছ দিয়ে যায়, তখন তাদের চারপাশের গ্যাস ও ধূলিকণার চাকতি মাধ্যাকর্ষণের কারণে প্রসারিত হয়। এতে দীর্ঘ ও ঘন একটি কণার সেতু তৈরি হয়। এই সেতুগুলো পরে নিজের মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে ধসে পড়ে এবং স্বাধীন পিএমও তৈরি হয়।
চীন ২০২৮ সালে আর্থ ২.
তথ্য ও ছবি: চায়না ডেইলি
ঢাকা/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা তীরের বালু বিক্রি ভাঙনের শঙ্কা
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে যমুনা নদীর তীরের বালু তুলে অবাধে বিক্রি করছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এতে নদীতে পানি বাড়লে ওই সব এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসীর শঙ্কা।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কাউকে তোয়াক্কা না করে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে দিন-রাত এ বালু বিক্রি করছেন। এভাবে বালু বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন জানান, উপজেলার যমুনা তীরের রৌহা ও বাগুলি এলাকায় বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এ বালু বিক্রি করছেন লেবু শেখসহ ছয়-সাতজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করলেও যেন দেখার কেউ নেই।
এলাকার আরিফ শেখ, হেলাল উদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, বালু ব্যবসায়ীরা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পান না। অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো ও হয়রানি করা হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহিনুর শেখ বলেন, এলাকার অনেককে ম্যানেজ করে নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রশাসন এলে বালু তোলা বন্ধ রাখতে হয়। প্রশাসন অভিযানে আসার আগেই তারা অগ্রিম সংবাদ পেয়ে থাকেন। এ কারণে তাদের তেমন ঝামেলা হয় না। সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তারা কয়েকজন সাংবাদিককেও কিছু টাকা মাসোহারা দেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান আলম বলেন, অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রির বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। নদী থেকে কেউ বালু বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে চার-পাঁচবার অভিযান চালিয়ে বালু তোলার ড্রেজার ও ড্রেজারের পাইপ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাদের অভিযান চলছে।