জামালপুরে বাস সেবা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধীদের মহাসড়ক অবরোধ
Published: 3rd, March 2025 GMT
জামালপুরের প্রতিনিয়ত রাজীব পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রতিবাদ ও বাস সার্ভিস সংস্কারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী শহরের বাইপাস এলাকায় জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশের আশ্বাসে বেলা ৩টা ২০ মিনিটে আজকের মতো অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাইপাস এলাকার বিসিক শিল্পনগরীর সামনে জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কে একদল শিক্ষার্থী রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের সামনেই রাস্তায় আড়াআড়িভাবে দুটি মোটরসাইকেল রাখা। তাঁদের পেছনে বসার বেঞ্চ রাখা। এতেই সড়কের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন যানবাহন আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাজীব পরিবহনের বাস জামালপুর-ঢাকা যাতায়াত করে। ওই পরিবহনটি বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট। তারা উন্নত মানের সেবার কথা বললেও ন্যূনতম সেবাও যাত্রীরা পান না। এই পরিবহনের বাস লক্কড়ঝক্কড়, বাসের সিট ভালো না, অনেক বাসের জানালা ভাঙা, চালকদের লাইসেন্স নেই, অদক্ষ চালক, চালক-হেলপারসহ শ্রমিকদের ব্যবহার খুব খারাপ। বাসগুলো জামালপুর শহর থেকে মুক্তগাছা পর্যন্ত বেপরোয়া চলাচল করে। এর পর থেকে বাসগুলো কচ্ছপগতি চলাচল করে। যেখানেই যাত্রীরা হাত উঠাবে, ওই বাস সেখানেই থেমে যাবে। মাত্র চার ঘণ্টার পথ এই বাসে লাগে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। জামালপুরবাসীর গলার কাঁটা এই বাস সার্ভিসটি। কোনো ধরনের সেবা না থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া ঠিকই নিয়ে থাকে। কারণ, তারা একক বাস সার্ভিস। এই সিন্ডিকেটের কারণে বড় বড় বাস কোম্পানি জামালপুরে চলতে পারে না।
সড়ক অবরোধের সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আফরিন জান্নাত ও মুকুল হোসাইন এবং সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল আবিদ।
বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই পরিবহনের চালক ও শ্রমিকদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বাস সার্ভিসের সংস্কার করতে হবে। প্রত্যেক যাত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। বাসের ভাড়া কমাতে হবে। লক্কড়ঝক্কড় বাস বাতিল করে ভালো বাস দিতে হবে। এসব দাবি মানা না হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো.
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার জয়রামপুর এলাকায় জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজীব পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এতে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ পর বহন র র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ফের অশান্ত মণিপুর
ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। মন্দির লক্ষ্য করে পাহাড় থেকে গুলি চালিয়েছে কুকি জঙ্গিরা। গতকাল শুক্রবার মেইতেইদের পবিত্র স্থান ‘কংবা মারু’তে গিয়েছিলেন একদল ভক্ত। তখন এ গুলির ঘটনা ঘটে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
এর আগে দিন বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে স্বেচ্ছায় ২৪৬টি অস্ত্র সমর্পণ করেছিল মণিপুরের সশস্ত্র মেইতেই গোষ্ঠী। এর একদিনের মাথায় গুলির এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সুরক্ষায় মেইতেইদের পবিত্র স্থানে গিয়েছিলেন একদল ভক্ত। তখন নিকটবর্তী পাহাড় থেকে তাদের লক্ষ্য করে মোট সাত রাউন্ড গুলি চালানো হয়। এরপর থেকে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
গুলির ঘটনার পর আশপাশের গ্রাম থেকে বাসিন্দারা রাস্তায় বেরিয়ে এসে প্রতিবাদ জানান। বেশ কিছুক্ষণ তারা সড়ক অবরোধ করেন। শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাহাড়ে থাকা বাঙ্কারগুলো ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে মণিপুরে লুট করা ও অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র সমর্পণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৬ মার্চ বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
উল্লেখ্য, মণিপুরে ২০২৩ সালের মে মাস থেকে চলে ধারাবাহিক সংঘাত। রাজ্যের আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশের অস্ত্রাগার লুট করে প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। তখন থেকে উগ্রপন্থিদের হামলার শিকার হন অনেকে। হামলায় এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছ। এমনকি ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি মন্দিরেও।