৭০০ কোটি টাকার সাবঅর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ক্যাপিটাল বেস বাড়াল ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাসেল-৩ গাইডলাইন অনুযায়ী এই বন্ড ইস্যু সম্পন্ন হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের ব্যালেন্স শিটে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করায় এই বন্ডটি ব্যাংকটির ক্যাপিটাল অ্যাডিকুয়েসি রিকয়্যারমেন্ট পূরণে সহায়তা করবে। এই অতিরিক্ত মূলধন ব্যাংকের ব্যালেন্স শিটকে পূর্বের তুলনায় আরো দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি করতে অবদান রাখবে। ব্যাংকটির এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটের উন্নয়নেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই বন্ডে বিনিয়োগের জন্য গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। সর্বমোট ৬৬৩ স্বতন্ত্র বিনিয়োগকারী এই দীর্ঘমেয়াদি সাবঅর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগ করেছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন ৫৬৭ জন ব্যক্তি। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি থেকে সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত এবং দেশের অন্যতম শক্তিশালী ব্যাংকের ইস্যু করা বন্ড হওয়ায় এই বন্ডে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

বন্ডের সাবসক্রিপশন সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “অর্থের নিরাপদ ও সুরক্ষিত আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক বছরের পর বছর ধরে গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জন করে চলছে। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সাবঅর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগ এই আস্থারই প্রতিফলন। এজন্য আমরা বিনিয়োগকারী, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, আমাদের সহকর্মী এবং এই সফলতার সাথে জড়িত সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রতি ধন্যবাদ জানাই।”

এই বন্ডের প্রধান আয়োজক হিসেবে কাজ করেছে ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। এছাড়াও ব্যাংকটির ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক, এসএমই এমএফআই টিম এবং কর্পোরেট ব্যাংকিং টিম দ্রুততম সময়ে পূর্ণাঙ্গ সাবসক্রিপশন সম্পন্ন করতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই বন্ডটি বিনিয়োগকারীদের একটি দীর্ঘমেয়াদি বন্ড মার্কেট তৈরিতে সহায়তা করবে বলে বিশ্বাস করে ব্যাংকটি।

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭% শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন, যাকে ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতদিন দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল।

বাংলাদেশের প্রধান দুই রপ্তানি বাজারের একটি যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের একটি বড় অংশ রপ্তানি হয় দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রে বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি হয় প্রায় ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলার, যা প্রধানত তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তান ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন (৭৩৪ কোটি) ডলারে।

নতুন করে উচ্চ মাত্রায় এই শুল্ক আরোপে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শুল্ক ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে উপস্থিত সাংবাদিকসহ সমবেতদের উদ্দেশে বক্তব্যের শুরুতেই ট্রাম্প বলেন, ‘আজ খুব ভালো খবর’ থাকবে। এ সময় দর্শক সারি থেকে করতালি দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানানো হয়।

এই দিনকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস’ অভিহিত করেন ট্রাম্প। নতুন শুল্ক আরোপকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, এই দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করছে।

ট্রাম্পের পাল্টা এই শুল্ক আরোপে ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ৩৪ শতাংশ।

এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ শতাংশ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের পণ্যে ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ, কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে।

অন্যান্য যেসব দেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কারের পণ্যের ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

পাল্টা এই শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকা ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কখনো কখনো ‘বন্ধু শত্রুর চেয়ে খারাপ হয়’।

যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের বিদেশি গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় যেসব গাড়ি উৎপাদন করা হয় তার ৮০ শতাংশের বেশি সেদেশে বিক্রি হয়। আর জাপানে যেসব গাড়ি বিক্রি হয় সেগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি সেদেশে তৈরি হয়। এসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি বিক্রি হয় খুব সামান্য।

মার্কিন কোম্পানি ফোর্ড অন্যান্য দেশে খুব কম গাড়ি বিক্রি করে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, অন্য যে কোনো দেশে তৈরি মোটরযানের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে এবং এটা আজ মধ্যরাত থেকেই কার্যকর হবে।

শুল্ক আরোপের ঘোষণাকে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রতিফলন উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, আজকের দিনকে আমেরিকান শিল্পের ‘পুনর্জন্ম’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার সম্পদশালী’ করার দিন হিসেবে স্মরণ করা হবে।

এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাধার মুখে রয়েছে।

অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা আরও খারাপ অবস্থা তৈরি করেছে।

বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মেধাসত্ত চুরিসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগ করেছেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ